AD Controversy: সুগন্ধী ও যৌনতা কেন পরিপূরক? উত্তর খুঁজলেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং নারীবিদ্যার গবেষক দেবশ্রুতি রায়চৌধুরী
AD Controversy: বিষয়টি নিয়ে কিছু কথা TV9 বাংলাকে বলেছেন অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং নারীবিদ্যার গবেষক দেবশ্রুতি রায়চৌধুরী।
জনগণের রোষের মুখে পড়েছে এক সুগন্ধী প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘শট’। তাদের তরফে প্রকাশিত সাম্প্রতিক কিছু বিজ্ঞাপনকে ঘিরে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অভিযোগ তুলেছেন নেটিজ়েনরা। তাঁদের বক্তব্য, গণধর্ষণের ইন্ধন জোগাচ্ছে তাদের বিজ্ঞাপন। ওই সংস্থার বিজ্ঞাপনগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করল কেন্দ্র। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক যত দ্রুত সম্ভব ওই অ্যাড সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। বিজ্ঞাপন সরিয়েও ফেলা হয়েছে এর মধ্যে। এদিকে সুগন্ধীর বিজ্ঞাপনে মহিলাদের ‘পণ্য’ হিসেবে তুলে ধরার বিষয়টি আবারও ঘুরে-ফিরে এসেছে। এই ধরনের বিজ্ঞাপনে যৌনতার উদ্রেক ঘটানোই কি একপ্রকার মুখ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে? কতখানি অসুরক্ষা তৈরি হচ্ছে মহিলাদের জন্য? বিষয়টি নিয়ে কিছু কথা TV9 বাংলাকে বলেছেন অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স এবং নারীবিদ্যার গবেষক দেবশ্রুতি রায়চৌধুরী।
দেবশ্রুতি রায়চৌধুরী বলেছেন, “সুগন্ধীর বিষয়ে কেন যৌনতা বারবার ঘুরে ফিরে আসে, সেই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে প্রথমেই বলা উচিত যে, মনোবিজ্ঞানে অলফ্যাটোফিলিয়া বলে একটি শাখা আছে। সেখানে খুব স্পষ্টভাবে দেখানো হয় যেকোনও এক ধরনের গন্ধ/সুগন্ধ আমাদের মধ্যে যৌনতার বিশেষ ভাবের উদ্রেক করে। সেই নিয়ে বহু আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সাইকোলজিস্ট, সাইকায়াট্রিস্ট, চিকিৎসকরা বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করেছেন।”
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেছেন, “প্রচুর গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের ব্রেনসেলের যে জায়গায় আবেগের উদ্রেক হয়, সেখান থেকেই যৌনতা সংক্রান্ত ভাবের উদ্রেক হয়। সেখানেই গন্ধ সংক্রান্ত তরঙ্গ শুরু হয়। সেই জন্যই সম্ভবত, আমাদের মস্তিষ্কে কোনও একটি বিশেষ গন্ধ, কোনও এক ধরনের উত্তেজনার উদ্রেক করে। অনেক সময় অনেক ধরনের আবেগেরও উদ্রেক করে। যেমন ধরুন ট্যালকাম পাউডারের গন্ধ আমাদের ছোটবেলায় ফেরত নিয়ে যায়। কোনও একটি চালের গন্ধ মায়ের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। তাই গন্ধের সঙ্গে আমাদের আবেগের বা ইমোশনের, স্মৃতির যোগসূত্র আছে।”
দেবশ্রুতি বলেছেন, “গন্ধ, সুগন্ধ ও যৌনতা উদ্রেককারী ভাবনার মধ্যে যে সম্পর্ক, সেখানেই বিজ্ঞাপনের জগতে মেয়ের শরীর বা সমাজে মেয়েদের যে চোখে দেখা হয়, তার একটা ভাবধারা উঠে আসে। অবশ্য এই বিজ্ঞাপনের বাইরেও সিমেন্ট কিংবা ব্যাটারির বিজ্ঞাপনে মেয়েদের শরীরকে ব্যবহার করতে দেখেছি। এই বিজ্ঞাপনটি আমি দেখিনি। এর সম্পর্কে আমি পড়েছি। অ্যাডভার্টাইজ়িং স্ট্যান্ডার্ড কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া নামের একটি সংস্থা আছে। এই সংস্থা সব ধরনের বিজ্ঞাপনই মনিটর করে। সেখানে নিশ্চয়ই এই বিজ্ঞাপন ক্লিয়ারেন্স পেয়েছে। এটা যেহেতু একটি ভলেন্টারি সংস্থা, ফলে আমি ধরেই নিচ্ছি যে, এখানে খুব গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়তো হওয়া সম্ভব হয়ে ওঠে না। সেখানে কেন এত বড় দেশে সেন্ট্রাল স্ট্যান্ডার্ড এজেন্সি নেই, যারা বিজ্ঞাপনগুলোকে মনিটর করতে পারবেন এবং সেগুলি সমাজের উপযোগী কি না বা ক্ষতি করছে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা কেন আমাদের দেশে নেই, এটাই আমার কাছে বড্ড বেশি আশ্চর্যের! “