আমার ছেলে যদি অভিনেতা হতে চায়, আমি সাহায্য করব না?: অভিনেতা ব্রিজেন্দ্র কালা
আমি আজ পর্যন্ত কারও রোল কেড়ে নিইনি। আর না আমি অন্যের মতো গোটা স্ক্রিপ্ট শুনে বলেছি, “তমুক রোলটা কে করছে?” আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা সবাই বন্ধু।
শুরু করছি, আপনার অন্যতম প্রিয় অভিনেতা সম্পর্কিত প্রশ্ন দিয়ে?
ওকে।
সঞ্জয় মিশ্রা।
ওয়াহ, কেয়া অ্যাক্টর হ্যায়।
সঞ্জয় মিশ্রার এতগুলো বছর অভিনয় করার পর একা একজন হিরো হিসেবে ‘আঁখো দেখি’, ‘রাক্ষস’ কিংবা ‘কামইয়াব’-এর মতো ছবিকে একা টেনে নিয়ে গেলেন। আপনার ইচ্ছে করে না বন্ধুর মতো ছবিতে শুধু দর্শকের চোখ আপনার উপরই থাকবে?
আমিও তো এমন অনেক ছবি করেছি। ‘শর্মাজি কো লগ গই’। ভীষণ সাকসেসফুল ফিল্ম। কিন্তু একটা ছবিকে লাইমলাইটে আসতে হয়। একটা ছবি করেছিলাম ‘হ্যালো হ্যালো হোয়াটসআপ’, রিলিজ করল না। আরেকটা করেছিলাম, ‘টিনা কি চাবি’। কলকাতায় শুটিং হয়েছিল। মুখ্য চরিত্রে ছিলাম। সেটাও রিলিজ করেনি। আর মার্কেটিং বলেও তো কথা আছে। যে যত বেশি ভালভাবে সেটা করে, সে ছবি আরও দর্শকের কাছে পৌঁছয়।
বলিউডে ভাল ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ করে নিতে হয়, আপনিও জানেন। পিআর তো সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ।
আমি আজ পর্যন্ত কারও রোল কেড়ে নিইনি। আর না আমি অন্যের মতো গোটা স্ক্রিপ্ট শুনে বলেছি, “তমুক রোলটা কে করছে?” আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছি, তাঁরা সবাই বন্ধু। আমি জানি সবার ভাল সময় ঠিক আসবে। আমারও আসবে। আমার কোনও অভিযোগ নেই। কাজ করার দিন তো চলে যাচ্ছে না।
একটা সোজাসুজি প্রশ্ন, নেপোটিজমের শিকার হয়েছেন?
আমার ছেলে যদি অভিনেতা হতে চায়, আমি সাহায্য করব না? একজন ডাক্তারের ছেলে যদি ডাক্তার হতে চায়, তাহলে তাঁর বাবা তাঁকে সাহায্য করবে না? যদি না থাকত ‘কাপুর’ পরিবার থেকে দাপুটে সব অভিনেতা বেরোত? বা আরডি বর্মনের মতো সুরকার আসত? এটাও ‘নেপোটিজম’—শব্দটা ক্ষণস্থায়ী। ‘নেপোটিজম’-এর মধ্যে কোনও দম নেই। যাঁর মধ্যে সাহস থাকবে সে এগোবেই। ‘নেপোটিজম’ থাকলেও যাঁর প্রতিভা থাকবে সে-ই স্টার হবে।
আপনি উত্তর প্রদেশে জন্মেছেন। ১৪ সেপ্টেম্বর সেখানে হয়ে গেল এক ভয়াবহ ঘটনা। হাথরাস কাণ্ড। সে দিন তো বাড়িতেই ছিলেন। রক্ত গরম হচ্ছিল না?
লকডাউন ছিল তখন। হাত কোনও কাজ ছিল না। বাড়িতেই ছিলাম। সারাক্ষণ টিভি চলছিল। চ্যানেল পাল্টে-পাল্টে খবর দেখছিলাম। সবাই দেখেছে কী হয়েছে। নিকৃষ্ট এক ঘটনা। ঘটনাটাকে দমিয়ে রাখার আসল কারণ ঠিক কী ছিল, জানি না। আমার মনে হয় গোটা বিষয়টাতেই ছিল রাজনীতি। সিবিআই রিপোর্টও চলে এসেছে। জানি না আর কী-কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ঠিক যেমন নির্ভয়া কাণ্ডের সময় হয়েছিল, কতটা সময় লেগেছিল। আশা করব হাথরাস কাণ্ডের রায় বেরতে যেন এতটা সময় না-নেয়।
এই যে বললেন, গোটা বিষয়টাতে ছিল রাজনীতি…উত্তর প্রদেশে তো বরাবরই রাজনীতির হটস্পট!
দেখুন, খুনখারাপির রাজনীতি কি আগে ছিল না? কখনও হিন্দু-মুসলিমের নামে, কখনও ব্রাহ্মণের নামে রাজনীতি হয়েছে। খুনখারাপি হয়েছে। রাজনীতিকের দল আমাদের ব্যবহার করেছে এবং এখনও ব্যবহার করে চলেছে। এটাই রাজনীতির ধর্ম। ভীষণ দুঃখজনক হলেও এটা সত্যি। ধর্মের নামে দেশকে টুকরো করার কাজ। আমি কোনওদিন এইরকম রাজনীতিকে সমর্থন করি না।
যাঁদের সঙ্গে আপনি কাজ করেছেন তাঁদের মধ্যে পাঁচজনের নাম নিচ্ছি। যা মনে হয় বলুন।
ওকে।
সুশান্ত।
একজন ভাল অভিনেতা। ওঁর চলে যাওয়া খুব দুঃখের। সময়ের আগেই চলে গেল।
পঙ্কজ ত্রিপাঠি।
অন্যতম সেরা অভিনেতা। এবং আমার বেস্ট ফ্রেন্ড।
অমিতাভ বচ্চন।
সুপার-ডুপার অভিনেতা। একটা অওরা আছে।
নওয়াজ।
প্রতিভাবান।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
‘রামপ্রসাদ কি তেরেভি’, আমি আর পরমব্রত অভিনয় করলাম। খুব ভাল ছেলে এবং বন্ধু। ভীষণ এন্টারটেইনার।
কলকাতায় এই নিয়ে চারবার এলেন। ‘সিটি অফ রে’ নিয়ে কিছু বলুন।
কলকাতা নিয়ে কথা বলা শুরু হলে শেষ হবে না। শক্তি সামন্ত, ঋষিকেশ মুখোপাধ্যায়… এটা বাংলার কালচার। তাঁরা যেভাবে ভারতীয় ছবিতে কনট্রিবিউট করেছেন, তা নিয়ে আলাদা করে কীই বা বলি। যতবার এখানে আসি, নস্ট্য়ালজিয়া ভর করে আমার মধ্যে, কেন জানি না।
আর কলকাতার রসগোল্লা?
আগে কত খেয়েছি। এখন কম খাই।