পরিবারের তরফে সব্যসাচীর রাখি না পাওয়ার আক্ষেপ মেটালেন ইন্ডাস্ট্রির দুই বোন

সেই দুই বোন হলেন অভিনেত্রী আয়েষা ভট্টাচার্য ও বিপাশা সরকার। এ বারের রাখিতে তাঁরাই রাখি পরালেন অনস্ক্রিন বামাক্ষ্যাপাকে।

পরিবারের তরফে সব্যসাচীর রাখি না পাওয়ার আক্ষেপ মেটালেন ইন্ডাস্ট্রির দুই বোন
বোনের সঙ্গে আয়েষা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 23, 2021 | 10:04 PM

পরিবারের তরফে বহুদিন রাখি বা ভাইফোঁটা পাওয়া হয় না অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরীর। তা নিয়ে অনুযোগ না থাকলেও রয়েছে আক্ষেপ। এ বারের রাখিতে সেই আক্ষেপ খানিক হলেও মিটল তাঁর। আক্ষেপ পূরণ করলেন ইন্ডাস্ট্রির দুই বোন। হয়ে উঠলেন ‘নতুন দাদা’। সেই দুই বোন হলেন অভিনেত্রী আয়েষা ভট্টাচার্য ও বিপাশা সরকার। এ বারের রাখিতে তাঁরাই রাখি পরালেন অনস্ক্রিন বামাক্ষ্যাপাকে। শুটের মাঝেই এক অন্যরকম অনুভূতি হল অভিনেতার।

দুই বোনের সঙ্গে রাখির মুহূর্তের ছবি শেয়ার করে সব্যসাচী লেখেন, “বহু বছর হলো, আমি আমার নিজের পরিবারের কারও থেকে রাখি বা ভাইফোঁটা পাই না। আত্মীয়দের বাড়িও আমি খুব একটা যাই না। তাই আমার কর্মক্ষেত্রই আমার পরিবার। এই বছর আমি দুটি রাখি পেয়েছি। দুজনকেই অনেক ধন্যবাদ। আরও অনেক বড় হও।” অন্যদিকে আয়েষারও আবদার তাঁর নতুন দাদার কাছ থেকে উপহারের। সব্যসাচীর আশ্বাস ‘দেব’।

একদিকে যেমন দর্শকের মনোরঞ্জন করে চলেছেন অনস্ক্রিন বামাক্ষ্যাপা, অন্যদিকে ব্যক্তিগত জীবনও ব্যালেন্স করে চলেছেন প্রতিমুহূর্তে। বিগত বেশ কিছু মাস ধরে তাঁর জীবনেও ঝড় বয়েছে। দ্বিতীয় বার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা শর্মা। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতেই। চলেছে কেমো, হয়েছে অস্ত্রোপচারও। পরিস্থিতি যদিও এখন অনেকটাই সামলে উঠেছেন তাঁরা। এরই মধ্যে ঐন্দ্রিলাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কদর্য পোস্ট। কখনও সাজিয়ে গুছিয়ে তাঁর ‘মৃত্যুসংবাদ’-এর মতো কদর্য মিথ্যে খবর আবার কখনও বা তাঁর চিকিৎসার টাকা মিঠুন চক্রবর্তীর দান– এই হেডলাইনে ‘ভুয়ো’ খবর…চলছেই।

কিছুদিন আগে এ নিয়েই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ করেছিলেন সব্যসাচী। যদিও সে প্রতিবাদের ভাষায় বিরক্তি ছিল না, ছিল কষ্ট, প্রিয় মানুষকে ঘিরে মিথ্যে রটনার হতাশা। সব্যসাচী লিখেছিলেন, জুলাই মাসটা বেশ সঙ্কটপূর্ণ ছিল ঐন্দ্রিলার কাছে। ২৫ টা রেডিয়েশন এই মাসেই দেওয়া হয়েছে, একই সঙ্গে চলেছে কেমোথেরাপি। ঘটেছে ওষুধপত্রেরও অদলবদল। এত কিছু ধকলের মাঝে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। কমেছিল দেহের শ্বেতকণিকার পরিমাণও। শরীর এতটা অসাড় হয়ে গিয়েছিল যে বাথরুমে যাওয়ার ক্ষমতাও হারিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা।

তিনি যোগ করেছিলেন, “আমি জানি যে ব্যাঙের ছাতার মতন গজিয়ে ওঠা প্রচুর ইউটিউব চ্যানেল আজকাল নিজেদের সাংবাদিক বলে পরিচয় দেয়। তাদের অধিকাংশেরই কাজ বিভিন্ন অভিনেতার সোশ্যাল মিডিয়ার প্রোফাইল ঘেঁটে মুখরোচক ছবি এবং তথ্য জোগাড় করে তা উপস্থাপনা করা। আমি এও জানি যে আমার লেখা তারা নিয়মিত পড়ে এবং সেটাকেই গড়গড় করে পড়ে শুনিয়ে, কটা ছবি লাগিয়ে ভিডিও বানায়। তাতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই, আমি দেখিও না। তবে ঐন্দ্রিলা সব দেখে, সব কটা। শুয়ে শুয়ে ফোন ঘাঁটা ছাড়া কোনো উপায়ও নেই তো। মাঝেমধ্যেই আমায় বিভিন্ন ভুলভাল জিনিস দেখায়, “এই দেখো মিঠুন চক্রবর্তী নাকি আমার ট্রিটমেন্ট করাচ্ছে”।

পরের দিনই বললো, “ যাহ, আজকে মিঠুনদা নয়, মমতা ব্যানার্জী আমার ট্রিটমেন্টের পয়সা দিচ্ছে”। আরেকদিন বললো, “যাক আর কোনো চিন্তা নেই, আমি নাকি সিনেমার শুটিং শুরু করে দিয়েছি”। এত অবধি ‘ইগনোর’ করেছেন সব্যসাচী। কিন্তু ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে কিছু দিন আগে। সেই দিন যেদিন দুর্বল শরীর নিয়ে জানালার ধারে শুয়ে ঐন্দ্রিলা সব্যসাচীকে এ হেন এক ইউটিউব চ্যানেলের ‘নিউজ’ দেখিয়ে বলেন, “এই দেখো, তিন মাস আগে, আমি সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেছি”। হ্যাঁ, তাঁকে মৃত ঘোষণা করেও এ রকম ভুয়ো খবর ইউটিউবে ঘুরে বেড়াচ্ছে অহরহ।

সব্যসাচী আরও লেখেন, “বুকটা কেমন জানি মোচড় দিয়ে উঠলো আমার। মানুষ এত নিচ, এত বর্বর।” যদিও ঐন্দ্রিলা ভেঙে পড়েননি। সব্যসাচীকে বলেছেন, “আহা, রাগ করছো কেন ? এসব ভিডিও না বানালে লোকে দেখবে না তো। ওদেরও তো খেতে পড়তে হবে”। ঐন্দ্রিলা না ভেঙে পড়লেও সব্যসাচীর ওই পোস্টে চরম নিন্দা জানিয়েছিলেন নেটিজেনরা। আশা জাগানোর পরিবর্তে এমন বর্বরতা প্রত্যক্ষ করে তাঁরা বীতশ্রদ্ধ। ঐন্দ্রিলা-সব্যসাচীর আগামীর জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নেটিজেনরা এবারেও। সঙ্গে যুক্ত হলেন দুই বোনও। পরিবার বাড়ল তাঁদের?