Male Infertility: ডেস্ক জব বাড়াচ্ছে পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব, জানেন কীভাবে?
Infertility: পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভোগেন, আর পুরুষরা এর প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রের জন্য দায়ী। সাম্প্রতিক প্রমাণ অনুযায়ী, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ল্যাপটপের তাপ, ওজন বৃদ্ধি, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং খারাপ ঘুম।

আজকাল প্রায় সিংহভাগ মানুষ ডেস্ক জবের সঙ্গে যুক্ত। তার উপর কোভিডের সময় থেকে ওয়ার্ক ফ্রম হোম আসার পরে অফিস যাওয়ার হার কমে গেছে অনেক সংস্থায়। ফলসরূপ সারাদিন এক জায়গায় বসে বসে কাজ। চেয়ারে বসে ল্যাপটপ শরীরের কাছে রেখে কাটাতে হয় দিনের বেশিরভাগ সময়। আবার ওয়ার্ক ফ্রম হোমের জ্বালায় ডিউটির সময় নামেই ৮ ঘণ্টায়। এদিকে কাজ করতে হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১২ ঘন্টা। ফলসরূপ শরীর হয়ে উঠছে নানা রোগের আস্তানা। পিঠে ব্যথা, শিরদাঁড়ায় সমস্যা, হাঁটুর সমস্যা সহ আরও রোগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। তবে তার থেকেও ভয়ানক একটি সমস্যা বাড়ছে অলক্ষ্যে। যা হয়তো খুব একটা মন দিয়ে ভাবিনা। তা হল পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এই ডেস্ক জব করা পুরুষদের মধ্যেই বেশি করে পরিলক্ষিত হচ্ছে প্রজননে অক্ষমের সমস্যা।
পরিসংখ্যান বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভোগেন, আর পুরুষরা এর প্রায় অর্ধেক ক্ষেত্রের জন্য দায়ী। সাম্প্রতিক প্রমাণ অনুযায়ী, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ল্যাপটপের তাপ, ওজন বৃদ্ধি, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং খারাপ ঘুম—যা ডেস্কে বসে কাজ করা মানুষের কাছে সাধারণ বিষয়—সবই শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। ডেস্কে দীর্ঘ সময় কাটালে কী ঘটে শরীরে?
তাপের প্রভাব – শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য শরীরের বাকি অংশের তুলনায় শীতল তাপমাত্রা প্রয়োজন। ল্যাপটপ কোলে রাখা এবং পা শক্ত করে বন্ধ করে বসা অণ্ডকোষের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা সময়ের সঙ্গে শুক্রাণু উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। চিকিৎসকেরা ল্যাপটপ টেবিলে ব্যবহার করতে এবং হাঁটু সামান্য ফাঁক করে বসতে পরামর্শ দেন।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা – গবেষণায় দেখা গেছে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা মানের দিক থেকে খারাপ বীর্যের সঙ্গে যুক্ত। যারা শারীরিকভাবে সক্রিয় কাজে যুক্ত, তাদের হরমোন প্রোফাইল ও শুক্রাণুর স্বাস্থ্যে উন্নতি দেখা যায়। অর্থাৎ কাজ নয়, আসল ঝুঁকি হল নিষ্ক্রিয়তা। নিয়মিত হাঁটার বিরতি নিলে এই ঝুঁকি কমানো যায়।
ওজন ও বিপাকক্রিয়া – ডেস্কে বসে দীর্ঘ সময় কাটালে ওজন বাড়ে, বিশেষ করে পেটের মেদ। এটি শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনে বিঘ্ন ঘটায়। গবেষণায় প্রমাণিত যে স্থূলতা ও বিপাকীয় প্রদাহ শুক্রাণুর সংখ্যা, গতিশীলতা এবং মান কমিয়ে দেয়।
চাপ ও ঘুম – চাপযুক্ত কাজ ও দীর্ঘ স্ক্রিন টাইম প্রায়শই ঘুম নষ্ট করে। খারাপ বা অনিয়মিত ঘুম কম শুক্রাণু ঘনত্বের সঙ্গে যুক্ত, আর দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ টেস্টোস্টেরন কমিয়ে দেয়। একসঙ্গে এগুলো প্রজনন ক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
কী করলে মিলবে মুক্তি?
ল্যাপটপ সবসময় টেবিলে ব্যবহার করুন, পা শক্ত করে বন্ধ করে বসবেন না এবং প্রতি ৩০–৪৫ মিনিট অন্তর দাঁড়িয়ে নড়াচড়া করুন। প্রতি ঘণ্টায় ব্রেক নিন। দাঁড়ান, স্ট্রেচ করুন বা অল্প সময়ে হাঁটুন। প্রতিদিনের ছোট ছোট নড়াচড়ারও হরমোনাল উপকারিতা পাওয়া যায়।
হালকা শারীরিক কার্যকলাপ ও সুষম খাবারের সমন্বয়ে পেটের মেদ কমান। প্রতিদিন ৭–৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন, দেরিতে ক্যাফেইন খাবেন না এবং ঘুমের আগে স্ক্রিন ডিম করুন।
