Srinivasa Ramanujan: আপনার গাড়ির নম্বর ১৭২৯? এই সংখ্যার গল্প বলেছিলেন রামানুজন
Taxicab Number: দক্ষিণ লন্ডনের পুটনে, এক অসুস্থ গণিতবিদকে দেখতে এলেন গডফ্রে হ্যারল্ড হার্ডি। তাঁর স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন, তিনি সেখানে এসেছিলেন একটি ট্যাক্সি করে যার নম্বর ছিল ১৭২৯। সেই কারণেই এটা 'ট্যাক্সিক্যাব নম্বর'। কী এমন আছে এই নম্বরে? বলেছিলেন সেই অসুস্থ গণিতবিদ, শ্রীনিবাস রামানুজন।
দক্ষিণ লন্ডনের পুটনে, এক অসুস্থ গণিতবিদকে দেখতে এলেন আর এক গণিতবিদ গডফ্রে হ্যারল্ড হার্ডি। তাঁর স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন, তিনি সেখানে এসেছিলেন একটি ট্যাক্সি করে যার নম্বর ছিল ১৭২৯। সেই কারণেই এটা ‘ট্যাক্সিক্যাব নম্বর’। কিন্তু কী এমন আছে এই নম্বরে? হার্ডিকে বলেছিলেন সেই অসুস্থ গণিতবিদ, শ্রীনিবাস রামানুজন।
১৮৮৭ সালের ২২ ডিসেম্বর তামিলনাড়ুতে জন্মগ্রহণ করেন রামানুজন। অঙ্ক নিয়ে তাঁর কোনও প্রথাগত শিক্ষা ছিল না। তা সত্ত্বেও গাণিতিক বিশ্লেষণ, সংখ্যা তত্ত্ব, অসীম সিরিজ সহ একাধিক বিষয়ে অবদান রাখেন। এমন কি তাঁর বিভিন্ন অবদানের কারণেই একাধিক গাণিতিক সমস্যার সমাধান করা গিয়েছে।
অঙ্কের প্রতি তাঁর আগ্রহ জাগিয়ে তুলেছিল জর্জ সুব্রিজ কারের লেখা ‘সিনপসিস অফ এলিমেন্টরি রেজাল্টস ইন পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড ম্যাথামেটিক্স’। সেই বইতে হাজারের বেশি উপপাদ্য ছিল কিন্তু তার কোনও সমাধান সেই বইতে করা ছিল না। যদিও বা কিছু প্রমাণ ছিল, তাও খুব বিস্তারিত ভাবে সেই সব প্রমাণ করা ছিল না। ১৯৯০ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে এই সব উপপাদ্য তিনি সমাধান করেন।
রামানুজন অঙ্কে তুখোড় হলেও অন্য বিষয়ে তেমন পারদর্শী ছিলেন না। কলেজে অঙ্ক ছাড়া কলা বিভাগের অন্যান্য বিষয়ে তিনি ফেলও করেন। পরবর্তীতে ১৯১০ সালে ইন্ডিয়ান ম্যাথেমেটিক্যাল সোসাইটির তৎকালীন সম্পাদক আর. রামচন্দ্র রাওয়ের নজরে পড়েন তিনি। ১৯১৩ সালে বিখ্যাত গণিতবিদ হার্ডিকে তিনি চিঠি লেখেন। সেই চিঠির ৯ পাতায় বিভিন্ন গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে দেন তিনি। তা দেখে বিস্মিত হয়ে যান হার্ডি ও ১৯১৪ সালে কেমব্রিজে হার্ডির অধীনে গণিতে উচ্চ শিক্ষার জন্য ইংল্যান্ডে পাড়ি জমান রামানুজন।
১/পাই, যা আসলে অসীম সিরিজের প্রতিনিধিত্ব করে, তা প্রমাণ করার ১৭ রকম উপয়ায় নিজের নোটবুকে লিখে রেখেছিলেন রামানুজন। আর এর পর আসে বিখ্যাত ট্যাক্সিক্যাব নম্বর। ১৭২৯ সংখ্যাটি হার্ডি-রামানুজন নম্বর হিসাবে পরিচিত। এটি ক্ষুদ্রতম সংখ্যা যা দু’ভাবে দুটি সংখ্যার ঘনফলের যোগফল হিসাবে লেখা যায়। আর এর নাম ট্যাক্সিক্যাব হওয়ার কারণ তো আগেই জেনেছেন।
ইংল্যান্ডে তাঁর খ্যাদ্যাভ্যাসের কারণে তিনি যক্ষা ও একাধিক ভিটামিনের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ১৯১৯ সালে তাঁকে ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়। ১৯২০ সালে মাত্র ৩২ বছর বয়সে অসীমে হারয়ে যান শ্রীনি। তাঁর কাজ নিয়ে যেমন অঙ্কের জগতে কাজ হয়েছে অনেক, তাঁকে নিয়ে তেমনই লেখা হয়েছে একাধিক বই। তৈরি হয়েছে অজস্র সিনেমা, তথ্যচিত্রও। তাঁর সেই প্রফেসর একবার বলেছিলেন, ১০০ -এর কোনও স্কেলে যদি সমস্ত গণিতবিদদের গাণিতিক প্রতিভা মাপা হয় তাহলে তিনি সেই স্কেলে ২৫ পেলেও ১০০-তে ১০০ পাবেন একজনই, তিনি শ্রীনিবাস রামানুজন।