করোনা কড়চা: সেরে উঠেও স্বস্তি নেই! হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুও হতে পারে আক্রান্তের

পরিসংখ্যান বলছে হাসপাতালে ভর্তি ১৪ থেকে ২৮ শতাংশ করোনা আক্রান্তর শরীরেই ডিভিটি অর্থাৎ ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস দেখা যাচ্ছে।

করোনা কড়চা: সেরে উঠেও স্বস্তি নেই! হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুও হতে পারে আক্রান্তের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 08, 2021 | 11:51 AM

নয়া দিল্লি: করোনা (COVID) আর আতঙ্ক যেন সমার্থক। জ্বর, শ্বাসকষ্ট, মাথা ব্যথা, এসব তো ছিলই আরও একাধিক উপসর্গ দেখা যাচ্ছে করোনা আক্রান্তর দেহে। তার পাশাপাশি আক্রান্তের শরীরে একাধিক সমস্যা সৃষ্টি করছে মারণ ভাইরাস। সে বিষয়েই সকলকে সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা স্রেফ ফুসফুসে সংক্রমণ সৃষ্টি করে না। পাশাপাশি শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে প্রাণঘাতী পরিস্থিতি হতে পারে এই করোনার জন্যই। প্রমাণ-সহ এ কথা বলছেন চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা।

পরিসংখ্যান বলছে হাসপাতালে ভর্তি ১৪ থেকে ২৮ শতাংশ করোনা আক্রান্তর শরীরেই ডিভিটি অর্থাৎ ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস দেখা যাচ্ছে। ২ থেকে ৫ শতাংশের শরীরে আর্টেরিয়াল থ্রম্বসিসও দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরাও একই কথা বলছেন। দিল্লির শ্রী গঙ্গারাম হাসপাতালের চিকিৎসক ডঃ অম্বরিশ সাত্যকি জানান, সপ্তাহে এই ধরনের ৫-৬ জন রোগী তাঁর কাছে আসছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দলুইও জানান, সংক্রমণের প্রথম ঢেউ থেকেই বারবার এই সমস্যা দেখা গিয়েছে।

তিনি বলেন, “রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া ত্বরাণ্বিত হয় করোনায়। এবং তার জন্য শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। সেই জমাট বাঁধা রক্ত থেকে হার্ট অ্যাটাক, ফুসফুসে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হতে পারে। এছাড়া ব্রেইন অ্যাটাকে রোগী মারাও যেতে পারেন এ ছাড়া ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিসের মাধ্যমে পায়ের মধ্যে থ্রম্বাস জমা হতে পারে। সেখান থেকেও হার্ট বা ব্রেইন অ্যাটাকের সম্ভাবনা দেখা যায়।” অনির্বাণবাবু জানান, এই সমস্যা করোনা থেকে সেরে ওঠার পরেও থাকতে পারে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, “আমরা অনেকের ক্ষেত্রে দেখছিলাম পোস্ট কোভিড পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকে কেউ মারা যাচ্ছেন।”

কেন জমাট বাঁধছে রক্ত?

সহজ ভাষায় বিষয়টা বুঝতে হলে যা দাঁড়ায় তা হল, ভাইরাস শরীরের ঢোকার পর লাফিয়ে লাফিয়ে নিজের প্রতিলিপিকরণ ঘটায়। তখন ভাইরাসকে রোখার জন্য শরীরের মধ্যে অনেক ইনফ্লেমেটরি মার্কার বেড়ে ওঠে। অর্থাৎ ভাইরাস যদি শত্রু হয়, তাহলে তারা শত্রু রোখার সৈনিক। এ বার তারা ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাকে পরাস্ত করে। কিন্তু করোনার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে শত্রুকে পরাস্ত করার জন্য যত সৈনিক প্রয়োজন, তার থেকেও বেশি সৈন্য অর্থাৎ ইনফ্লেমটরি মার্কার বেড়ে উঠছে শরীরে। তাই ভাইরাস প্রতিহত হওয়ার পরও এই ইনফ্লেমটরি মার্কারগুলি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে হামলা করছে। তাই রক্ত জমাট বেঁধে এই বিপত্তি বাড়ছে। তবে চিন্তার কারণ নেই, চিকিৎসকরা ডি-ডাইমার পরীক্ষার মাধ্যমে এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করে সঠিক ওষুধ করোনা আক্রান্তের হাতে তুলে দিচ্ছেন।

আরও পড়ুন: সাত সকালে আইএনএস বিক্রমাদিত্যে আগুন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় নৌ-সেনা