Deoghar Ropeway Accident: জল-বিস্কুট খেয়েই ঝুলন্ত কেবিনে কাটল দেড়দিন! ভোরের আলো ফুটতেই ফের শুরু উদ্ধারকার্য
Deoghar Ropeway Accident: গতকাল সকাল থেকেই তিনটি সেনা হেলিকপ্টার দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড়ে রোপওয়েতে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারের জন্য পৌঁছলেও,তারের সমস্যার কারণে প্রথমে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। দুর্ঘটনার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর প্রথম পর্যটককে নিরাপদভাবে কেবিন থেকে বের করে আনা হয়।
দেওঘর: দুর্ঘটনার পর কেটে গিয়েছে দেড়দিন। এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে রোপওয়ে দুর্ঘটনায় (Deoghar Ropeway Accident) আটকে পড়া যাত্রীদের। রবিবার সন্ধ্যায় দেওঘরের ত্রিকূট পর্বতে অবস্থিত শিব মন্দিরে যাওয়ার রোপওয়েই ছিঁড়ে যায়। রোপওয়ে থেকে পড়ে মৃত্যু হয় এক মহিলার। পরে আরও দুই যাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। আটজন পর্যটককে আহত অবস্থায় দেওঘর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, রোপওয়ের এখনও ১২ জন যাত্রী আটকে রয়েছেন, এদের মধ্যে একজন বায়ুসেনার কম্যান্ডোও রয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফে তাদের উদ্ধার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টা থেকেই ফের একবার শুরু হয় উদ্ধারকার্য। এখনও অবধি তিনজনকে বের করে আনা হয়েছে, আটকে রয়েছেন ১২ জন। বায়ুসেনার (Indian Air Force) জওয়ানদের সঙ্গেই উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে আইটিবিপি(ITBP) এবং এনডিআরএফের (NDRF) দলও।
রবিবার বিকেলেই দেওঘর জেলার ত্রিকূট পাহাড়ে রোপওয়ে ছিঁড়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন পর্যটকরা। দুর্গম পাহাড়ের উপর দুর্ঘটনা ঘটায় এবং অন্ধকার নেমে আসায় রবিবার উদ্ধারকার্য শুরু করা সম্ভব হয়নি। সারারাত রোপওয়ের মধ্যেই আটকে থাকেন পর্যটকরা। সেমবার ভোর থেকেই শুরু হয় উদ্ধারকার্য। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে উদ্ধারকারী কপ্টার পাঠানো হলেও, তারের সমস্যা ও উচ্চতার কারণে রোপওয়ের কেবিনগুলির কাছে পৌছনো সম্ভব হয়নি। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালানোর পরও এক যাত্রীকে উদ্ধার করার সময় তিনি পড়ে গেলে, সাময়িকভাবে উদ্ধারকার্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফিরে যায় কপ্টারগুলি।
সারারাত ঝুলন্ত রোপওয়েতে আটকে থাকা যাত্রীরা যাতে আতঙ্কিত না হয়ে পড়েন, তার জন্য মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করা হয়েছে সেনাবাহিনীর তরফে। পর্যটকদের নিজেদের মধ্যে কথা বলে ভয় কাটানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে যাত্রীদের সঙ্গে থাকা খাবার ও জল ফুরিয়ে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনের তরফে ক্রমাগত মাইকিং করেও পর্যটকদের ধৈর্য্য ধরার অনুরোধ করা হচ্ছে। গতকাল থেকেই জেলা প্রশাসক ও পুলিশ ঘটনাস্থলে ক্যাম্প করে উদ্ধার ও ত্রাণকাজের প্রতিটি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করছেন।
স্থানীয় প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, ত্রিকূট পর্বতের রোপওয়েতে আটকে পড়া পর্যটকদের সুরক্ষিতভাবে উদ্ধার করে আনতে বায়ুসেনার সঙ্গে পারস্পরিক সমন্বয়ে কাজ করছে জেলা প্রশাসন ও এনডিআরএফ দলের। রাজ্য সরকারের অনুরোধেই ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে।এদিন সকাল সাড়ে ৬ টায ত্রিকুট পর্বতে পৌঁছয় উদ্ধারকারী কপ্টার। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন আইটিবিপি, ভারতীয় সেনা এবং এনডিআরএফের দলও। আজই আটকে পড়া সমস্ত পর্যটকদের সুরক্ষিতভাবে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ট্রলি থেকে নামিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়েই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছন গোড্ডার সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি রাতভর ঘটনাস্থানে উপস্থিত ছিলেন এবং যাবতীয় উদ্ধার ও ত্রাণকার্য খতিয়ে দেখেন। আটকে পড়া পর্যটকদের পরিবারের সদস্যদেরও সান্তনা দিতে দেখা যায় তাঁকে।
গতকাল সকাল থেকেই তিনটি সেনা হেলিকপ্টার দেওঘরের ত্রিকূট পাহাড়ে রোপওয়েতে আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারের জন্য পৌঁছলেও,তারের সমস্যার কারণে প্রথমে উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। দুর্ঘটনার প্রায় ১৯ ঘণ্টা পর প্রথম পর্যটককে নিরাপদভাবে কেবিন থেকে বের করে আনা হয়। নিরাপদে ফিরে আসা পর্যটকরা জানিয়েছেন, রবিবার সন্ধ্যার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। সেই সময় তারা আতঙ্কিত বোধ করছিলেন, হেল্পলাইন নম্বরে একটানা যোগাযোগ করে যাবতীয় তথ্য জানছিলেন। পরে ড্রোনের মাধ্যমে তাঁদের কাছে জল ও বিস্কুট পৌঁছে দেওয়া হয়। সেনাবাহিনী এবং এনডিআরএফ দল অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে প্রথমে শিশুদের কেবিন থেকে বের করে নিয়ে আসে।
মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন জানান, বায়ুসেনা ও এনডিআরএফের সাহায্যে উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেও সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। সরকার গোটা বিষয়টির দিকে নজর রাখছে। স্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বান্না গুপ্ত জানান যে, দেওঘর রোপওয়ে দুর্ঘটনার তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, “এটি রাজনীতির নয়, ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার সময়। রাজ্য সরকার কেন্দ্র, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং ভারতীয় বায়ুসেনার সহায়তায় ত্রাণ কার্য চালাচ্ছে, সরকারের অগ্রাধিকার হল মানুষের জীবন বাঁচানো। আহতদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।”