Indian Navy: চিনের বাড়াবাড়ি আর সহ্য নয়! আরও শক্তিশালী হল ভারতীয় নৌসেনা
Indian Navy: অ্যাটাক সাবমেরিন ও ডেস্ট্রয়ারের কাজ তাদের নামেই স্পষ্ট। ফ্রিগেটের বিষয়টা একটু আলাদা। এক কথায় বলতে গেলে বড়কর্তার দেহরক্ষী। বড় যুদ্ধজাহাজকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এমন এক জাহাজ, যে কিনা একইসঙ্গে অনেক কাজ করতে পারে।
নয়াদিল্লি: গল্পের তিন চরিত্র – ফ্রিগেট INS নীলগিরি, ডেস্ট্রয়ার INS সুরাত আর অ্যাটাক সাবমেরিন INS ভাগশির। তিন ধরণের রণতরী, আলাদা, আলাদা কাজ। বুধবার মুম্বইয়ে ৩টি রণতরী নৌসেনার হাতে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে এই প্রথমবার একইসঙ্গে ফ্রিগেট, ডেস্ট্রয়ার এবং অ্যাটাক সাবমেরিন কমিশনড হল।
অ্যাটাক সাবমেরিন ও ডেস্ট্রয়ারের কাজ তাদের নামেই স্পষ্ট। ফ্রিগেটের বিষয়টা একটু আলাদা। এক কথায় বলতে গেলে বড়কর্তার দেহরক্ষী। বড় যুদ্ধজাহাজকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য এমন এক জাহাজ, যে কিনা একইসঙ্গে অনেক কাজ করতে পারে। সাবমেরিন চিহ্নিত করা, জলের নীচে বিস্ফোরক খুঁজে ধ্বংস করা, যুদ্ধবিমানকে হিট করা-এমন আরও অনেক কিছু। ভারত এই প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে কোনও অত্যাধুনিক ফ্রিগেট তৈরি করল।
শুরু ২০১৬ সালে। সেই সময়ে কেন্দ্রের কাছে একটা আবেদন রাখেন তত্কালীন নৌ-সেনা প্রধান। তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছি ঠিকই। আমাদের যুদ্ধজাহাজগুলো নামে অত্যাধুনিক হলেও কাজে অত্যাধুনিক নয়। অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজের আর্মামেন্ট বা অস্ত্রশস্ত্র বহনের ক্ষমতা অনেক বেশি হওয়া উঠিত। আমরা সেইদিক থেকে পিছিয়ে।’
উল্লেখ্য, আধুনিক যুদ্ধজাহাজগুলো অন্তত ৮ রকমের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালাতে পারে। নানা ধরণের মিসাইল ও বোমা, টর্পেডো, জলের নীচে বিস্ফোরণ ঘটানোর মত প্রযুক্তি-সহ আরও অনেক কিছু থাকা দরকার। সবচেয়ে বড় কথা, থার্ড ডাইমেশনাল অ্যাটাকের ক্ষমতা থাকলে তবেই তাকে অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ বলা যায়। নৌ-সেনা প্রধানের অভিযোগের পরের বছরেই শুরু হয় প্রজেক্ট থ্রিসিসি। অর্থাত্ একই সঙ্গে অত্যাধুনিক ফ্রিগেট, ডেস্ট্রয়ার ও অ্যাটাক সাবমেরিন তৈরি করা যা অত্যাধুনিক অস্ত্র বহনের উপযোগী হবে। কিন্তু, সেই উদ্দেশ্য কি পূরণ হল?
নৌ-সেনার অবসরপ্রাপ্ত সদস্য অলোক বনশল বলছেন, ‘অবশ্যই হল। এবং ভারত অনেক কম টাকায় ও নিজস্ব প্রযুক্তিতে সেই কাজ করল। তিন বন্ধু জলে থাকা মানে দেশের একটা অংশে জলসীমা পুরোপুরি সুরক্ষিত। একজন ফেল করলেও অন্যজন সেই অভাব ঢেকে দেবে।’
তাঁর আরও দাবি, ‘এটাও একটা ধরণের নতুন কৌশল। যা ভারতের থেকে শিখে অন্য দেশগুলোও কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে। নৌ-সেনা কখনই যুদ্ধজাহাজের খুঁটিনাটি তথ্য প্রকাশ করে না। আমি শুধু বলতে পারি, ভারতের হাতে আসা আইএনএস ভাগশির দুনিয়ার যে কোনও উন্নত সাবমেরিনের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে। ৩টি জাহাজেই উন্নত মিসাইল সিস্টেম রয়েছে।’
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে নৌসেনায় কমিশনড হয় আইএনএস ইম্ফল। তার আগের বছর কমিশনড হয় আইএনএস মার্মাগাঁও। গত ডিসেম্বরে রাশিয়ার বন্দর শহর কালিনিনগ্রাদে সেনার হাতে আইএনএস তুশিল তুলে দেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মাল্টি রোল, স্টেলথ ফ্রিগেট ক্যাটিগরির রণতরী। বিশ্বজুড়ে সামরিক মহড়া শেষ করে ফেব্রুয়ারিতে ভারতে ফিরবে আইএনএস তুশিল। ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফরে ২৬টি রাফাল-এম বা মেরিন রাফাল কেনার চুক্তি হতে চলেছে। দু-দিন আগে যাতে অনুমোদন দিয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রক। এখন শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষা।