Lhonak Lake Sikkim: সিকিমের বুকে সবথেকে দ্রুতগতিতে বাড়ছিল লোনাক লেক, ভয়টা ছিল অনেক বছর ধরেই
Lhonak Lake Sikkim: সিকিম ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ও সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই লেকের ওপর নজরদারি চালাচ্ছিল। আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, এই লেকে কখনও ফাটল ধরলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বহু মানুষ।
সিকিমের বুকে বিপর্যয় ডেকে এনেছে লোনাক লেক। হ্রদ ফেটে জল বেরিয়ে ভেসে গিয়েছে বিস্তীর্ণ অংশ। একের পর এক মৃত্যুর খবর আসছে তিস্তার পাড় থেকে। বেরিয়ে আসছে দেহ। খোঁজ নেই বহু মানুষের। পাহাড়ে ঘেরা জনপদ যেভাবে নিমেষে মৃত্যুপুরী হয়ে গেল, তা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে এখনও দুঃস্বপ্নের মতো। কীভাবে লোনাক হ্রদের চেহারাটাই পাল্টে গিয়েছে, সেই উপগ্রহ চিত্রও প্রকাশ করেছে ইসরো। তবে লোনাক লেকের এই অবস্থা কিন্তু আকস্মিক নয়। লোনাক নিয়ে ভয় দীর্ঘদিনের।
কোথায় অবস্থিত লোনাক লেক?
সিকিমের একেবারে উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত এই লেক। উচ্চতা ১৭ হাজার ফুট। লোনাক হিমবাহ গলেই এই হ্রদ তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়। হ্রদের বয়স খুব বেশি নয়। তবে গত কয়েক বছরে যে হারে বেড়েছে এই হ্রদ, তা আগে থেকেই চিন্তায় রেখেছিল সিকিম প্রশাসনকে।
সবথেকে দ্রুতগতিতে বাড়ছে লোনাক
হিমালয়ের কোলে হিমবাহে ঘেরা এমন অনেক হ্রদ রয়েছে। যা থেকে বিপদের আশঙ্কা থাকে সবসময়। দিনের পর দিন যেভাবে হিমবাহ গলছে, তাতে এই সব ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে সবসময়। সিকিমে থাকা এমন কয়েকটি লেকের মধ্যে, লোনাক হল সবথেকে দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকা হ্রদ।
সিকিম ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি ও সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই লেকের ওপর নজরদারি চালাচ্ছিল। আগেই আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, এই লেকে কখনও ফাটল ধরলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বহু মানুষ। আর সেই আশঙ্কাই এবার সত্যি হল। এমনকী এই লেক থেকে জল বের করে নেওয়ার ব্যবস্থাও করেছিল সিকিম প্রশাসন।
১১ বছরে ৪০০ মিটার বেড়েছে লোনাক
২০২১ সালে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল, যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, গত এক দশক ধরে দ্রুত হারে বেড়েছে লোনাক লেক। হিমবাহ ফেটে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে, যাকে বলা হয়, গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড।
২০২১ সালে একটি সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছিল, যাতে উল্লেখ করা হয়েছিল, গত এক দশক ধরে দ্রুত হারে বেড়েছে লোনাক লেক। হিমবাহ ফেটে বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে, যাকে বলা হয়, গ্লেসিয়ার লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ১৯৬২ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে অর্থাৎ ৪৬ বছরে আয়তনে ২ কিলোমিটির বেড়েছে এই লেক। আর ২০০৮ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে বেড়েছে আরও ৪০০ মিটার। সুতরাং হ্রদের জল বেড়ে ফেটে যাওয়ার আশঙ্কা আগেই প্রকাশ করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
জল বের করতে লাগানো হয়েছিল পাইপ
লেক থেকে বিপর্যয় আটকাতে ব্যবস্থাও নিয়েছিল সরকার। বারবার বিজ্ঞানীরা রিপোর্ট দেওয়ার পর নজরদারি চালানো হত লেকের ওপর। বছর কয়েক আগে এই লোনাক লেক-কে ঘিরে শুরু হয় এক বিশেষ প্রজেক্ট। ২০১৬ সালে ১৭০০০ ফুট উচ্চতার এই হ্রদে লাগানো হয় দুটি পলি পাইপ। অতিরিক্ত জল বের করা হয় তার মাধ্যমে। তবে সাম্প্রতিক বিপর্যয় থেকে স্পষ্ট, সব ব্যবস্থাই বিফলে গিয়েছে। সত্যি হয়েছে সব আশঙ্কা।