ফেব্রুয়ারিতে কোথায় ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? এই প্রশ্নেই উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি

ফেব্রুয়ারিতেই নাকি পুলিশ অফিসারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Home Minister) দাবি তখন তিনি হোম আইসোলেশনে (Home Isolation)।

ফেব্রুয়ারিতে কোথায় ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? এই প্রশ্নেই উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: Mar 23, 2021 | 3:12 PM

মুম্বই: অম্বানীর বাড়ির সামনে বোমাতঙ্কের ঘটনা আপাত-দৃষ্টিতে তেমন মারাত্মক না মনে হলেও, সেই ঘটনার রেশ ধরেই ক্রমশ সামনে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। দুর্ণীতির অভিযোগে খোদ মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর (Home Minister) পদত্যাগের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহলে। সাফাই দিচ্ছে শিব সেনাও। কিন্তু অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণ করতে এবার ভিডিয়ো প্রকাশ করে অনিল দেশমুখ। হিসেব দিলেন যে ঘটনার সময় ঠিক কোথায় ছিলেন তিনি। টুইটারে প্রকাশ করলেন ভিডিয়ো।

গত সপ্তাহের মুম্বইয়ের পুলিশ কমিশনার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় পরমবীর সিংকে (Parambir Singh)। মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি উদ্ধারের ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের জন্যই এই বদলি করা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ (Anil Deshmukh)। এরপরই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি লিখে পরমবীর সিং জানান, অম্বানী কাণ্ডে ধৃত সচিন ভাজ়েকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ প্রতিমাসে ১০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে নিজের বাসভবনে সচিন ভাজ়েকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডেকে পাঠিয়েছিলেন বলেও জানান প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার। কিন্তু অনিল দেশমুখের সাফাই ওই সময় করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কারও সঙ্গে দেখা করেননি তিনি। এরই মাঝে অনিল দেশমুখের নামে একটি বিমানের টিকিটের ছবি ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার সাফাই দিতে হয় তাঁকে।

ভিডিয়োতে অনিল দেশমুখ জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ায় ৫ ফেব্রুয়ারি নাগপুরের হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি, সেখানেই ছিলেন ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপর ১৫ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি বাড়িতেই ছিলেন আইসোলেশনে। তিনি আরও জানান হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর বিমানে চেপে মুম্বই আসেন তিনি। বিমানের টিকিট নিয়েই ব্যাখ্যা দিতে চান তিনি। এ দিকে, তাঁর দাবি, করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের একাধিক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। তারপর আক্রান্ত হন নিজে।

অনিল দেশমুখের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, ১৫ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। পরে তাঁকে ১০ দিনের হোম আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সময় তিনি শুধু রাতে প্রাণায়ম করতে পার্কে যেতেন ও বৈঠক সারতেন ভিডিয়ো কনফারেন্সে। ১ মার্চ থেকে তিনি সব অফিসারদের সঙ্গে দেখা করা শুরু করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর দাবি, আসলে ভুয়ো তথ্য ছড়িয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ‘মুখে অ্যাসিড ছুড়ে মারব…’ হমকি চিঠি পাওয়ার বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন সাংসদ

এই দাবি নস্যাৎ করে বিজেপি মনে করিয়ে দিয়েছে যে ১৫ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিক বৈঠক করেন অনিল দেশমুখ। তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের ডেকেছিলেন বটে। তবে শরীর দুর্বল থাকায় গেটের কাছে বসে কিছু প্রশ্নের জবাব দেন। সাংবাদিক বৈঠক শেষ হতেও দ্রুত ফিরে যান বাড়িতে।

মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে চিঠি লিখে পরববীর সিং জানিয়েছেন, “অম্বানী কাণ্ডে ধৃত সচিন ভাজ়েকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ প্রতিমাসে ১০০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিলেন।”

অনিল দেশমুখের বিরুদ্ধে বহু তদন্তে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগও করেন পরমবীর সিং। এই বিষয়ে এনসিপি নেতারা বৈঠক করেন। এরপরই সঞ্জয় পাটিল জানান, অনিল দেশমুখকে পদত্যাগ করতে হবে না। সাংবাদিক বৈঠক করে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার বলেন, “মুকেশ অম্বানীর বাড়ির সামনে বিস্ফোরক উদ্ধারের তদন্ত থেকে নজর ঘোরাতেই ভুয়ো দাবি করা হচ্ছে।”