Mumbai: ‘খুলে ফেল সব কিছু…’, রঙিন স্বপ্ন দেখিয়ে চলত কালো ব্যবসা, গ্রেফতার ৩
Mumbai: বলিউডের আলো ঝলমলে যে জীবনের ছবি কাগজে-ম্যাগাজিনে-ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়, তার নীচে যে কী পরিমাণ অন্ধকার থাকে, সেই সম্পর্কে ধারনা থাকে না অনেকেরই। আর তাই অনেকেরই স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। ঠিক এই পরিণতিই হতে যাচ্ছিল বেশ কয়েকজন মহিলার।
মুম্বই: বিনোদনের রঙিন জগতে পা রাখার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বই পাড়ি দেন অনেকেই। স্বপ্ন থাকে নায়ক-নায়িকা হওয়ার। কিন্তু, অধিকাংশরই সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। বলিউডের আলো ঝলমলে যে জীবনের ছবি কাগজে-ম্যাগাজিনে-ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়, তার নীচে যে কী পরিমাণ অন্ধকার থাকে, সেই সম্পর্কে ধারনা থাকে না অনেকেরই। আর তাই অনেকেরই স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে। ঠিক এই পরিণতিই হতে যাচ্ছিল বেশ কয়েকজন মহিলার। ফিল্মের জন্য অডিশন দেওয়ার অজুহাতে তাঁদের নগ্ন ভিডিয়ো তোলার অভিযোগ উঠেছে মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাঁদের একজন আবার মহিলা। বুধবার (২৭ ডিসেম্বর), তিনজনকেই গ্রেফতার করেছে পালঘর জেলার পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ১ নভেম্বর পালঘরের অর্নালা সাগরী এলাকায় ওই মহিলাদের ফিল্মের অডিশন দেওয়ার অজুহাতে ডাকা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে এক ১৮ বছর বয়সী যুহতীও ছিলেন। তাঁদের প্রত্যেককেই চলচ্চিত্রে নায়িকার ভূমিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। মুম্বই এবং মহারাষ্ট্রের অন্যান্য জেলাতেও এই রকম বহু অডিশন নেওয়া হয়। কাজেই ওই মহিলাদের কারও মনে কোনও সন্দেহ ছিল না। কিন্তু, তারা অডিশন দিতে আসার পর, তাঁদের সব পোশাক খুলে নগ্ন হতে বলেছিল অভিযুক্তরা। পুলিশকে এমনটাই জানিয়েছেন এই প্রতারণা চক্রের শিকার হওয়া মহিলারা। তাঁরা দোনোমোনো করলে, বলা হয়েছিল, ফিল্মে নগ্ন দৃশ্য রয়েছে। তাই তাঁদের পোশাক ছাড়া অডিশন দিতেই হবে।
এক প্রকার বাধ্য হয়েই নগ্ন হয়েছিলেন ওই মহিলরা। এরপর তাঁদের নগ্ন ভিডিয়ো শুট করে অভিযুক্ত তিনজন। কিন্তু, সেই ভিডিয়োগুলি আসলে কোনও ফিল্মের অডিশনের জন্য তোলেনি তারা। এর পিছনে ছিল অন্য ধান্দা। পরবর্তী সময়ে সেই ভিডিয়োগুলি তারা পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটে আপলোড করেছিল বলে জানিয়েছেন ভিরার পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সিনিয়র ইন্সপেক্টর প্রমোদ বদাখ। বিষয়টি জানতে পেরে গিয়েছিলেন, নগ্ন অডিশন দেওয়া এক মহিলা। তিনিই ১২ ডিসেম্বর এই ঘটনার বিষয়ে অর্নালা সাগরী থানায় একটি মামলা নথিভুক্ত করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছিল পুলিশ। অডিশনে অংশ নেওয়া সকল মহিলার সঙ্গে কথা বলে পুলিশ।
এরপরই, তদন্তে পাওয়া বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে, সম্প্রতি, ভিরার থেকে গ্রেফতার করা হয় ৩০ বছরের অনুজকুমার জয়প্রকাশ জয়সওয়াল এবং এক ৩৩ বছর বয়সী মহিলাকে। তাদের দুজনকে জেরা করে সরজুকুমার রমাকান্ত বিশ্বকর্মা নামে ২৫ বছর বয়সী আরও এক যুবকের সন্ধান পাওয়া যায়। সে থানে জেলার বদলাপুরের বাসিন্দা। সরজুকুমারও এই প্রতারণা চক্রের অংশ ছিল বলে জানা যায়। এরপর তাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, অভিযুক্তদের বাড়ি ও কার্যালয়ে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ভিডিয়ো শুট করার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদিও পেয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি মোবাইল ফোন এবং একটি ১.৯ লক্ষ টাকা দামের ল্যাপটপও রয়েছে। এই ঘটনাকে সামনে রেখে, ফিল্মে কাজ করতে উৎসুকদের সতর্ক করেছে পুলিশ। তারা বলেছে, কোথাও অডিশন দিতে যাওয়ার আগে, সেই সংস্থা সম্পর্কে ভাল করে খোঁজ খবর নেওয়া প্রয়োজন।