শব্দের থেকে জোরে ছোটে! সেই ভয়ঙ্কর অস্ত্র চলে এল সেনার হাতে
K-Six Ballistic Missile : ২০২৩ সালে ডিআরডিও জানিয়েছিল, তাদের তৈরি কে-ফাইভ আন্ডার ওয়াটার মিসাইল ৫ থেকে ৬ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে

নয়া দিল্লি: ৫-র আগে আগে ছয়। কারও কাছে ম্যাজিক। কারও কাছে বিস্ময়। ভারতীয় নৌ-সেনার সেরা অস্ত্র তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এর নাম কে-সিক্স। কে-সিক্স সাবমেরিন লঞ্চড ব্যালেস্টিক মিসাইল বা এসএলবিএম। নামে ব্যালেস্টিক হলেও জাতে হাইপারসোনিক মিসাইল। ২০১৮ সালে কে সিরিজের পাঁচ নম্বর মিসাইল তৈরিতে হাত দিয়েছিল ডিআরডিও এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলো। ২০২০ সালে কোভিড কালে সিরিজের ৬ নম্বর মিসাইল তৈরির কাজ শুরু হয়। ডিআরডিও সূত্রে খবর, দু-বছর পরে কাজ শুরু হলেও কে-ফাইভের আগেই তৈরি হয়ে যাবে কে-সিক্স। সবকিছু ঠিকঠাক চললে নভেম্বর- ডিসেম্বরে আন্ডার ওয়াটার সুপারসনিক মিসাইলের প্রথম পরীক্ষা। কে- সিক্সকে বলা হচ্ছে ওয়ান্ডার ওয়েপন।
অবসরপ্রাপ্ত নেভি চিফ অ্যাডমিরাল হরি কুমারের দাবি, কে-সিক্স হাতে এলে একই সঙ্গে চিন ও পাকিস্তানের মহড়া নিতে পারবে নৌ-সেনা। আমেরিকা, চিন ও রাশিয়ার সঙ্গে এক সারিতে চলে আসবে ভারত। জার্মানির স্টুটগার্টে এখন চলছে ওয়ার্ল্ড মিসাইল কংগ্রেস। তার মধ্যেই প্রজেক্ট কে-সিক্স নিয়ে বড় চমক দিল ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ডিআরডিও। ডিআরডিও-র প্রতিনিধি জানালেন, সমুদ্রের তলা থেকে ফায়ার করা যায়, এমন পরমাণু অস্ত্রবাহী হাইপারসোনিক মিসাইল তৈরির ৯০ শতাংশ কাজ শেষ। ঘণ্টায় ৯ হাজার ২৬১ কিলোমিটার বেগে টার্গেটে আঘাত করতে পারে কে-সিক্স।
২০২৩ সালে ডিআরডিও জানিয়েছিল, তাদের তৈরি কে-ফাইভ আন্ডার ওয়াটার মিসাইল ৫ থেকে ৬ হাজার কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। কে-সিক্সের রেঞ্জ তা হলে কত? ডিআরডিও সূত্রে খবর, আকাশে অগ্নি সিক্সের থেকেও কে-সিক্সের রেঞ্জ অনেক বেশি। কমবেশি ৮ হাজার কিলোমিটার বা তার দূরের টার্গেটকে ধ্বংস করতে পারে কে-সিক্স। এমআইআরভি প্রযুক্তি থাকায় একটি মিসাইল ছুড়ে একাধিক টার্গেটে হামলা করা সম্ভব। অবসরপ্রাপ্ত নৌ-সেনা কর্তা সিরিল জেভিয়ার বলছেন, আমেরিকা-রাশিয়া ছাড়া আর কোনও দেশের নৌ-সেনার হাতে এত শক্তিশালী অস্ত্র নেই।
সবচেয়ে বড় কথা, চলতি বছরের প্রথমে মাটির উপরে হাইপারসোনিক মিসাইলের পরীক্ষা হয়েছে। হয়ত আর কয়েক মাসের মধ্যে এয়ার টু এয়ার এবং এয়ার-টু-গ্রাউন্ড হারপারসোনিক মিসাইল তৈরি হয়ে যাবে। সেই সময়ই ভারতের হাতে আসতে চলেছে হাইপারসোনিক নাভাল মিসাইল। অর্থাত্ সব অর্থেই হাইপারসোনিক মিসাইলের দুনিয়ায় ঢুকতে চলেছে ভারত। শব্দের তুলনায় ৫ থেকে ২৫ গুণ দ্রুতগামী মিসাইলকে হাইপারসনিক মিসাইল বলা হয়। আর আধুনিক যুদ্ধে হাইপারসোনিক মিসাইল ছাড়া মানেই অ্যাডভান্টেজ। দেখুন এই ২০২৫ সালে সালে দাঁড়িয়ে প্রতিরক্ষার জন্য পাঁচটি সরঞ্জাম থাকা মাস্ট। অপারেশন সিঁদুর আমাদের সেটাই চোখে আঙুল দেখিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন ধরণের মিসাইল। উন্নত মানের ট্যাঙ্ক। অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ ও মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম। ড্রোন। এবং নিখুঁত লক্ষ্যে হিট করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মিসাইল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকও এসব দেশে তৈরি করার লক্ষ্যেই মিশন দিব্যাস্ত্র হাতে নিয়েছিল। এই প্রকল্পে নৌ-সেনার জন্য ৪ ধরনের মিসাইল তৈরি হওয়ার কথা। কে-সিক্স এই তালিকায় আধুনিকতম সংযোজন।
