তিন বছর তথ্য দেয়নি রাজ্য! ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া খাতের টাকা বন্ধ করল কেন্দ্র
এই রোগগুলির জন্য বিশেষ অর্থ বরাদ্দ থাকে। এ ক্ষেত্রে তথ্য না পাওয়ায় রাজ্যকে আর কোনও টাকা দেবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মিশনের তরফে।
কলকাতা: কয়েক বছর আগে রাজ্যে ডেঙ্গুর প্রকোপ আচমকা বেড়ে যায়। বহু মানুষের মৃত্যুও হয় মশাবাহিত এই রোগে। বিশেষত বর্ষাকালে জমা জল থেকে জন্মানো মশার কামড়ে অনেকেই আক্রান্ত হন। ডেঙ্গু নিয়ে সতর্কতা বাড়লেও এখনও আক্রান্ত হন অনেকেই। তবে ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া রোগ সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে পাঠানো হয় না কেন্দ্রকে। এমনই অভিযোগ তুলে ওই খাতে বরাদ্দ টাকা বন্ধ করে দিল কেন্দ্র। অভিযোগ, গত তিন বছর ধরে এই দুই রোগের কোনও তথ্যই দেওয়া হয়নি রাজ্যের তরফে।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন রাজ্যগুলির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাধারণত টাকা দিয়ে থাকে। শুধু ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়া নয়, আরও অনেক রোগের জন্যও এই টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু এ বার পশ্চিমবঙ্গের জন্য ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়ার খাতে কোনও টাকা বরাদ্দ করা হয়নি। তথ্য না দেওয়ার জন্যই যে এই সিদ্ধান্ত, সেটাও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য মিশনের তরফ থেকে। গত তিন বছরে এই সব রোগে কতজনের মৃত্যু হয়েছে, কতজন আক্রান্ত হয়েছে, চিকিৎসা ব্যবস্থাই বা কেমন, সেই সংক্রান্ত কোনও তথ্য তাদের কাছে নেই বলে দাবি কেন্দ্রের। ২০১৮ সাল থেকে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি।
এ ক্ষেত্রেও রাজ্যকে কোনঠাসা করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন চিকিৎসক তথা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, ‘যখন বিমাতৃসুলভ আচরণ করার চেষ্টা হচ্ছে, তখন এটা একটা বাহানা মাত্র। শুধু এই ক্ষেত্রেই নয়, রাজ্যের পাওনা টাকা অনেক সময়ই বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। আমফানের টাকা দেওয়া হয়নি, অক্সিজেন প্লান্টের জন্য জমি চাইলে, তা দেওয়া হয়নি, অন্য রাজ্যে বেশি ভ্যাকসিন দিয়ে এ রাজ্যে কম ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।’ তাঁর দাবি কেন্দ্রীয় নেতারা ঘুম থেকে ওঠা থেকে শুরু করে রাতে শুতে যাওয়া অবধি ভাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কী ভাবে কোণঠাসা করে দেওয়া যায়, বাংলার মানুষকে কী ভাবে হয়রাণ করে দেওয়া যায়। তাঁর মতে, ‘এটাকে বলে জিঘাংসা।’ রাজ্যের মানুষকে রোগগ্রস্ত করে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: পিছিয়ে গেল নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি, আদালতে থাকতে পারেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী
অন্য দিকে এএইচএসবিডির সম্পাদক মানস গুমটার দাবি, রাজ্যের তথ্য দেওয়া উচিৎ ছিল। তিনি জানান, এই দুটি রোগে ভয়ঙ্কর পরস্থিতি তৈরি হয়েছিল রাজ্যে। পরিকাঠামোর অভাব অনেক সময় চিকিৎসকেরাও অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘তথ্য পাঠানো উচিৎ ছিল। এ্ তথ্য জানাতেই হয়। এটা রুটিন কাজ। তবে তথ্য না পাঠানোর অভিযোগে টাকা বন্ধ করে দেওয়াও উচিৎ নয়। এতে রাজ্যবাসী কষ্ট পাবে, সেটাও কাঙ্ক্ষিত নয়।