করোনায় মাস্ক বিধি! ডাবল মাস্কিং-এর জেরে মিলতে পারে সুরক্ষা, জেনে নিন খুঁটিনাটি

সহজে বলতে গেলে একটার উপর আরেকটা মাস্ক পরাই হল ডাবল মাস্কিং। নাক-মুখ ঢেকে প্রথম মাস্কটি পরতে হবে কিছুটা শক্ত করে। দ্বিতীয়টি তার উপরে। মাস্কের দুটো ফিল্টার লেয়ার পর পর থাকায় ভাইরাসের কণা মাঝপথেই আটকে যাবে। চট করে ভেতরে যেতে পারবে না। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ধরনের মাস্ক ডাবল মাস্কিংয়ের জন্য ব্য়বহার করবেন এবং কীভাবে করবেন? 

করোনায় মাস্ক বিধি! ডাবল মাস্কিং-এর জেরে মিলতে পারে সুরক্ষা, জেনে নিন খুঁটিনাটি
ডাবল মাস্কিং, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 23, 2021 | 4:32 PM

কলকাতা: করোনায় কাবু রাজ্য থেকে দেশ। হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ। হাসপাতালে শয্য়াসঙ্কট থেকে শুরু করে অক্সিজেন সঙ্কট, কমতি নেই কিছুর। রোজই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে নিজেদেরকেই যতটা সম্ভব সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার পাশাপাশি স্যানিটাইজার ব্যবহার করা তো থাকছেই, কিন্তু তার চেয়েও জরুরি মুখে মাস্ক (Mask) পরা। কিন্তু, সেই সাবধানতা কোথায়! ভোটমুখী বঙ্গে করোনার মরণ কামড় নিয়ে বিন্দুমাত্র ওয়াকিবহাল নয় আমজনতা। শহরাঞ্চলের রাস্তাঘাটে ‘অরক্ষিত’ মুখগুলোই নজরে পড়েছে সর্বাধিক। এই পরিস্থিতিতে, সতর্ক হতে হবে নিজেদেরকেই।

বাড়ির বাইরে বেরলেই, যতদূরই যান না কেন, অবশ্যই ব্যবহার করুন মাস্ক (Mask)। কী ধরনের মাস্ক পরবেন? সাধারণত বাজারচলতি নানারকম মাস্কের মধ্যে সর্বাধিক সহজলভ্য ও সুরক্ষিত সার্জিক্যাল মাস্ক ও এন৯৫ (N95) মাস্ক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশেষ করে যখন ডবল মিউট্যান্ট স্ট্রেন বা ট্রিপল মিউট্যান্ট স্ট্রেন দেখা দিচ্ছে, তখন কেবল একটা মাস্ক পরাই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বরং, ‘ডাবল মাস্কিং’-এই জোর দিচ্ছেন তাঁরা। কী এই ডাবল মাস্কিং?

সহজে বলতে গেলে একটার উপর আরেকটা মাস্ক পরাই হল ডাবল মাস্কিং (Double Masking)। নাক-মুখ ঢেকে প্রথম মাস্কটি পরতে হবে কিছুটা শক্ত করে। দ্বিতীয়টি তার উপরে। মাস্কের দুটো ফিল্টার লেয়ার পর পর থাকায় ভাইরাসের কণা মাঝপথেই আটকে যাবে। চট করে ভেতরে যেতে পারবে না। প্রশ্ন হচ্ছে, কোন ধরনের মাস্ক ডাবল মাস্কিংয়ের জন্য ব্য়বহার করবেন এবং কীভাবে করবেন?

কীভাবে পরবেন দুটো মাস্ক? 

১.বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডাবল মাস্কিংয়ের নিয়ম আছে। যে-কোনো দুটো মাস্ক বেছে নিলে হবে না। নীচের মাস্কটা হতে হবে সার্জিক্যাল মাস্ক, ওপরের টা কাপড়ের মাস্ক।

২. দুটো কাপড়ের মাস্ক পরা যেতে পারে।

৩. থ্রি লেয়ার সার্জিক্যাল মাস্ক পরলে তার উপর কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করা যায়।

৪. দুটো সার্জিক্যাল মাস্ক কখনোই পরা যাবে না।

৫. এন৯৫ মাস্ক ব্যবহার করলে অন্য মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই।

ডাবল মাস্কিংয়ের ক্ষেত্রে  কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন?

১. আপনার শ্বাস নিতে কোনওরকম অসুবিধা হচ্ছে কি না তা বোঝার জন্য, দুটো মাস্ক পরে জোর শ্বাস নিন ও ছাড়ুন। দেখুন কোনওরকম অসুবিধা হচ্ছে কি না। যদি কষ্ট হয়, বা দমবন্ধ লাগে তাহলে বুঝবেন আপনার মাস্ক পরায় কোনও ত্রুটি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে নতুন করে খুলে প্রয়োজনে প্রথম মাস্কটির বাঁধন খানিকটা আলগা করে নিয়ে পরুন।

২. ডাবল মাস্ক পরার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন আপনি ঠিক করে কথা বলতে পারছেন কি না।

৩. খুব টাইট করে চেপে মাস্ক পরবেন না। এতে আপনার ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৪. বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কোনভাবেই জোড়া মাস্ক চলবে না।

কী কী করবেন না? 

১. বাইরে বেরলে বারবার মাস্কে হাত দেবেন না।

২. বাড়ির কারোর ব্যবহার করা মাস্ক ব্যবহার করা চলবে না। 

অবশ্য পালনীয়

১. বাড়ির থেকে যতটুকু দূরেই যান না কেন জোড়া মাস্ক ব্যবহার করার অভ্যেস করুন।

২. মাস্ক অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে পরিষ্কার করুন।

৩. একই মাস্ক বারবার ব্যবহার করবেন না। সেক্ষেত্রে ধুয়ে নিয়ে মাস্ক ব্যবহার করুন।

৪. একই কম্বিনেশন প্রতিদিন না পরে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়া অভ্য়াস করুন।

কেন প্রয়োজন ডাবল মাস্কিং? 

১. সিডিসি (CDC) গবেষণা ও রেকর্ড বলছে, সার্জিক্যাল মাস্ক ৫৬.১ শতাংশ এবং কাপড়ের মাস্ক ৫১.৪ শতাংশ হাঁচি-কাশি-সর্দির কণা আটকাতে সক্ষম।

২. ঠিক ভাবে ব্যবহৃত সার্জিক্যাল মাস্ক ৭৭ শতাংশ জীবাণু নিরোধক।

৩. সার্জিক্যাল ও কাপড়ের মাস্ক একসঙ্গে ব্যবহার করলে এটি ৮৫.৪ শতাংশ জীবাণু রোধে সক্ষম হয়।

বাড়ির বাইরে পা দিলে তাই অবশ্যই মনে রাখুন,মাস্ক মাস্ট। স্যানিটাইজার, সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক। করোনাকে প্রতিহত করতে এগিয়ে আসুন আপনিও।