পাখি, বন্যপ্রাণী শিকার ও অবৈধ কেনাবেচার নিষেধাজ্ঞা কলকাতা হাইকোর্টের

যে কোনও রকম পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকার ও অবৈধ কেনাবেচা নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল বি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়।

পাখি, বন্যপ্রাণী শিকার ও অবৈধ কেনাবেচার নিষেধাজ্ঞা কলকাতা হাইকোর্টের
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Mar 27, 2021 | 7:56 PM

কলকাতা: যে কোনও রকম পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকার ও অবৈধ কেনাবেচা নিষিদ্ধ করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল বি রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বলে মেলা ও উৎসবের পশুপাখির যে কোনওরকম কেনাবেচা বা বেআইনি কাজকারবারকে বন্ধ করার দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যকেই। প্রয়োজনে প্রয়োগ করতে হবে পুলিশি ক্ষমতা। একইভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মাধ্যমে যে কোনও রকম পাখি ও বন্যপ্রাণী কেনাবেচা রুখতে দায়িত্ব নিতে হবে শুল্ক ও বিমান বন্দরের রক্ষীদের।

পাখি ও বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় কলকাতা হাইকোর্টে চালু করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় রাজ্য বন দফতরের তরফে একটি রিপোর্ট পেশ করা হয়। সেখানে বন্যপ্রাণী ও পাখির চোরাচালান, অবৈধ কেনাবেচা আটকানো এবং সুরক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি কীভাবে হবে, তা উল্লেখ করা হয় এই রিপোর্টে। বনরক্ষী বাহিনীর আধুনিকীকরণ-সহ উন্নত প্রযুক্তি, পরিবহণ ও অস্ত্র দেওয়া দরকার বলে জানানো হয় রিপোর্টে। এছাড়া অপরাধ দমনে আন্তঃরাজ্য কমিটি গঠন, জেলায় জেলায় ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়াড তৈরি, সংরক্ষিত ও জাতীয় অরণ্য এবং পার্কগুলিতে বিশেষ পুলিশি শিবির স্থাপন করা এবং নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশের সঙ্গে এই আলোচনার জায়গা আছে বলে জানানো হয়। এই সমস্ত প্রস্তাব খতিয়ে দেখে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলার পরবর্তী শুনানির আগে হাইকোর্টকে তা জানানোর কথা বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আদালতে সরকারি রিপোর্টেই বলা হয়, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম, বর্ধমান, হাওড়ার মতো জেলাগুলির স্থানীয় উৎসব ও পার্বণের সময় বিভিন্ন প্রাণী ও পাখি শিকার করা হয়। মেলা উপলক্ষে চলে পাখির অবাধ কেনাবেচা। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার বিখ্যাত গালিফ স্ট্রিট, ব্যানার্জি হাট, বোড়াল হাটের মতো জায়গাগুলিতে গৃহপালিত পশুর পাশাপাশি ভারতীয় পাখিরও কেনাবেচার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আরও জানানো হয়, বাক্সবন্দি করে পশু-পাখিকে বিদেশেও পাচার করা হয়। কিন্তু যেসব সীমান্ত দিয়ে এই কারবার হয়ে থাকে, সেখানকার রক্ষীরা এব্যাপারে তেমন ওয়াকিবহাল নন বলে জানানো হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, পাখি ও বন্যপ্রাণী শিকার ও কেনাবেচার ব্যাপারে বেআইনি কারবার বিরোধী যেসব আইন আছে তার পাশাপাশি এই নির্দেশও জারি করা হল। ক্যুরিয়ার সার্ভিস মারফত বা অন্য কোনও রকম প্যাকেজিংয়ের আড়ালে বন্যপ্রাণী ও পাখি কেনাবেচার বিরুদ্ধে রক্ষীবাহিনীকে সজাগ থেকে আইনমাফিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

আরও পড়ুন: আদালত রক্ষাকবচ দিতেই ফের নোটিস সিবিআই-এর, হাজিরা দেবে লালা?

প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টে প্রশাসনের তরফে আইনজীবী সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এই ধরনের অপরাধ সম্পর্কিত পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন আদালতে বকেয়া মামলার সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ১৪০ টি। এই মামলাগুলি তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এদিকে এদিনের নিষেধাজ্ঞা রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইটের পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় প্রকাশ করার জন্য বন দফতরের অধিকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। এই নির্দেশ পালনে অন্যথা হলে সরকারি দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে গণ্য করা হবে বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।