SIR in Bengal: ‘আমি বাংলাদেশি নই’, এক পাড়া থেকেই ৯৭ জনের নাম বাদ যেতেই উদ্বেগ বাড়ছে বাঁশদ্রোণীতে
SIR in West Bengal: একই পাড়ায় রয়েছেন বণিক পদবির একাধিক মানুষ। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন সমীরন বণিক। বাবা-মায়ের নাম রয়েছে ২০০২ তালিকায়। তারপরেও ছেলের নাম বাদ দেওয়া হল কোন সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে? প্রশ্ন তুলছেন সমিরনের মা শিপ্রা বণিক। বললেন, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও ভোট দিয়েছে তাঁর ছেলে। তাহলে এবার কিভাবে বাদ পড়ে গেল?

কলকাতা: কারও বাবা-মায়ের নাম রয়েছে, তো ছেলের নেই। আবার ছেলে-বাবার নাম রয়েছে তো মায়ের নেই। এই ছবি শুধু একটি পরিবার বা দুটি পরিবার নয়, বাঁশদ্রোণীর কংগ্রেস নগরের নিরঞ্জন পল্লীতে এই ছবি ধরা পড়ল একাধিক বাড়িতেই। এসআইআর প্রক্রিয়ায় যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁদের নামের একটি খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। ১১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ১৬৭ নম্বর পার্টের এই অংশে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেল প্রায় ৯৭ জনের নাম এই তালিকায় এসেছে। এই তালিকাতেই দেখা গেল নিরঞ্জন পল্লীর সোমনাথ মিত্রের নাম। বাবা এবং মায়ের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল। এস আই আর প্রক্রিয়ার জন্য সঠিকভাবে ত্রুটিহীন ফর্ম পূরণ করে দেওয়ার পর নাম বাদের তালিকায় থাকায় রীতিমতো হতাশ ওই যুবক। বললেন, আমি বাংলাদেশি নই। আমার বাবা-মায়ের নাম রয়েছে ভোটার তালিকায়। তাহলে আমি বাদ পড়লাম কিভাবে?
আবার ওই পার্টেরই বাসিন্দা চন্দন মিত্র। তাঁর মায়ের নাম শিপ্রা মিত্র। বাদ পড়া তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে তার মায়ের নাম। চন্দন মিত্র বললেন, ২০০২ তালিকায় মায়ের নাম ছিল। বাবার নামও ছিল। সব নথিপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়ার পরেও কেন মায়ের নাম বাদ দেওয়া তালিকার মধ্যে রয়ে গেল সেটা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। এভাবে নাম বাতিল তালিকায় চলে যাবে, তা কখনওই বুঝতে পারিনি। শুনানির নোটিস এখনও হাতে আসেনি। নোটিস এলে বাকি পদক্ষেপ করব।
সব মিলিয়ে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাপানউতোর ক্রমেই বাড়ছে। সকলের একটাই দাবি সঠিক তথ্য দিয়েই তাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করেছিলেন। তাও নাম বাদ কী করে গেল বুঝতেই পারছেন না।
একই পাড়ায় রয়েছেন বণিক পদবির একাধিক মানুষ। তাঁদের মধ্যেই রয়েছেন সমীরন বণিক। বাবা-মায়ের নাম রয়েছে ২০০২ তালিকায়। তারপরেও ছেলের নাম বাদ দেওয়া হল কোন সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে? প্রশ্ন তুলছেন সমিরনের মা শিপ্রা বণিক। বললেন, ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও ভোট দিয়েছে তাঁর ছেলে। তাহলে এবার কিভাবে বাদ পড়ে গেল? নথি তো সঠিকভাবেই দেওয়া হয়েছিল। আতঙ্কিত ওই গৃহবধূর সাফ কথা, ছেলের নাম যেন দ্রুত তোলা হয়। শুনানিতে যতবার ডাকবে ততবার যাবে। এভাবে নাম যেন বাদ না দেওয়া হয়। তাঁর পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন কেশব বণিক। তাঁর স্ত্রী অনিতা বণিকের নাম এবং যাবতীয় তথ্য-সহ এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করলেও বাদ যাওয়া তালিকায় রয়ে গিয়েছে স্ত্রীর নাম। স্বভাবিকভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন তিনিও।
একইভাবে সরব হলেন ওই ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধও। ছেলে সজল বণিকের নাম বাদ পড়েছে ভোটার তালিকা থেকে। মঙ্গলবার বাদ যাওয়া নামের যে খসড়া তালিকা প্রকাশ পেয়েছে, তাতে রয়েছে ছেলের নাম। তাঁরও সাফ কথা, সব নথিপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়া রয়েছে। তাঁর এবং স্ত্রীর নাম ২০০২ ভোটার তালিকায় রয়েছে। তাহলে ছেলের নাম থাকবে না কেন?
বাদের তালিকায় রয়েছে বৃদ্ধা সবিতা সাহার নাম। অথচ প্রায় ৬০ ছুঁই ছুঁই ওই বৃদ্ধার শুধু ২০০২ ভোটার তালিকায় নয়, বিগত দিনে প্রায় সব নির্বাচন এই ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও বাদ যাওয়া নামের তালিকায় নিজের নাম দেখে রীতিমতো বিস্মিত ওই বৃদ্ধা। একরাশ উদ্বেগের সঙ্গে বললেন, “এবার কতবার শুনানিতে হাজির হতে হবে জানি না।”
