যদি ভ্যাকসিন নেওয়া অপরাধ হয়, আগে মিমিকে গ্রেফতার করা হোক: আদালতে দেবাঞ্জনের আইনজীবী

বৃহস্পতিবার সওয়াল জবাব চলাকালীন সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, দেবাঞ্জনের জালিয়াতির বিষয় জানতেন তাঁর কসবার অফিস ঘরের মালিক অশোককুমার রায়।

যদি ভ্যাকসিন নেওয়া অপরাধ হয়, আগে মিমিকে গ্রেফতার করা হোক: আদালতে দেবাঞ্জনের আইনজীবী
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jul 02, 2021 | 7:02 AM

কলকাতা: এর আগে তিনি খাঁড়া করেছিলেন, তাঁর মক্কেল মানসিক রোগী! এবার আদালত (Alipur Court) কক্ষে দাঁড়িয়ে খোদ সাংসদের গ্রেফতারির দাবি তুললেন দেবাঞ্জনের (Debanjan Deb) আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য। তিনি সওয়াল করেন, “দেবাঞ্জন নিজের পরিবারের লোকদেরও ভ্যাকসিন দিয়েছিলেন। যদিও ভ্যাকসিন নেওয়া অপরাধ হয়, তাহলে তো সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে আগে গ্রেফতার করা উচিত। তিনি তো সবার আগে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন।”

বৃহস্পতিবার সওয়াল জবাব চলাকালীন সরকারি আইনজীবী আদালতে জানান, দেবাঞ্জনের জালিয়াতির বিষয় জানতেন তাঁর কসবার অফিস ঘরের মালিক অশোককুমার রায়। একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার সময়ে তিনি ইন্ট্রোডিউসর ছিলেন। কিন্তু দেবাঞ্জনের আইনজীবী পাল্টা জানান, অশোককুমার না জেনেই কাঁর কসবার ঘর দেবাঞ্জনকে ভাড়া দিয়েছিলেন।

জানা গিয়েছে, অশোক কুমার রায়ের থেকে অফিস ভাড়া নেওয়ার সময় কলকাতা পুরসভার থেকে নেওয়া ট্রেড লাইসেন্স দেখানো হয়েছিল। ‘ইনস্টিটিউট অফ আরবান প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট’ কেএমসি’ এই নামে ট্রেড লাইসেন্স জমা দিয়েছিলেন দেবাঞ্জন। ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে তাঁর অফিস ভাড়া নিলেও অফিসের বাইরে থাকা ব্যানারে কোথাও ইনস্টিটিউট কথাটির উল্লেখ করেননি। শুধুমাত্র ‘আরবান ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড প্লানিং ডেভলপমেন্ট’ কথাটি লেখা ছিল। যাতে কারও সন্দেহ না হয় যে এটি পুরসভার অফিস নয়।

ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের নায়ক দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে উঠেছে আর্থিক প্রতারণা, ব্যাঙ্ক প্রতারণা, চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণা, ভুয়ো দফতর খুলে জাঁকিয়ে বসা, ভুয়ো আইএএস পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাটানো-সহ একাধিক অভিযোগ। প্রত্যেক ক্ষেত্রে তদন্তে নেমে তদন্তকারীরা দেখছেন, একটি নিখুঁত সাজানো প্ল্যান করে চলছিলেন দেবাঞ্জন। এমনকি নিজের স্যালারি স্লিপ-সহ পুরসভার গুরুত্বপূর্ণ নথি এতটাই হুবহু জাল করেছেন, যাতে পার্থক্য খোঁজা দুস্কর! সেই দেবাঞ্জনই নাকি মানসিক রোগী বলে আদালত কক্ষে দাবি করেছিলেন তাঁর আইনজীবী। এবার দিলেন অন্য আরেক যুক্তি।

কসবার অফিস ছিল দেবাঞ্জনের জালিয়াতির ‘ওয়্যাররুম’। এখানেই নির্ধারিত হত সমস্ত প্ল্যানিং। বুধবারই কসবার অফিস থেকে তদন্তকারীরা উদ্ধার করেছেন কোভিশিল্ডের এক হাজার জাল লেবেল প্রিন্ট। আরও বেশ কিছু জাল লেবেল প্রিন্ট করার জন্য গ্রাফিক্স তৈরি করে রাখা হয়েছিল তাঁর অফিসের কম্পিউটারে। এই লেবেল প্রিন্ট করার জন্য অফিসে ছিল কালার প্রিন্টারও। বাইরে থেকে কোভিশিল্ডের লেবেল প্রিন্ট করলে ধরা পড়ার ভয়ে অফিসেই কালার প্রিন্টার কিনেছিলেন দেবাঞ্জন। তাঁর অফিস থেকে বেশ কিছু কোভিশিল্ডের লেবেলও মিলেছে। তাঁর অফিসের কম্পিউটার থেকে কোভিশিল্ডের এই জাল লেবেলের গ্রাফিক্স পাওয়ার পরে তাঁকে জেরা করা হয়। এই লেভেল তিনি কোথা থেকে প্রিন্ট করান, কেনই বা আরও লেবেল তৈরি করে রাখা হয়েছিল, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে।