Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

এটিএম থেকে টাকা বার করে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখত না জালিয়াতরা! তবে কোথায় রাখত এত টাকা? চাঞ্চল্যকর তথ্য

এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে (Kolkata ATM Fraud Case) জাল গোটাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু জেরায় যে যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে ধৃতদের পারদর্শিতা ও বুদ্ধিমত্তা দেখে স্থবির তদন্তকারীরা।

এটিএম থেকে টাকা বার করে কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখত না জালিয়াতরা! তবে কোথায় রাখত এত টাকা? চাঞ্চল্যকর তথ্য
এটিএম জালিয়াতিকাণ্ডে উঠে আসছে নিত্যনতুন তথ্য
Follow Us:
| Updated on: Jun 08, 2021 | 9:41 AM

কলকাতা: এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে (Kolkata ATM Fraud Case) জাল গোটাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু জেরায় যে যে তথ্য উঠে আসছে, তাতে ধৃতদের পারদর্শিতা ও বুদ্ধিমত্তা দেখে স্থবির তদন্তকারীরা। ভাবাচ্ছে পরিকল্পনার ছক নিয়েও।

এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে ধৃত চার জনকে জেরা করে প্রতিদিনই উঠে আসছে নিত্যনতুন তথ্য। যা আগে কখনও কলকাতার বুকে ঘটেনি।

জেরায় যে তথ্য উঠে এসেছে,

♦ এটিএম থেকে হাতানো টাকা সরাসরি কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠাত না ধৃতরা। ♦ UPI মোডে বিভিন্ন ওয়ালেটে ট্রান্সফার করত টাকা। ♦ এরকম কয়েকশো ওয়ালেটে এই টাকা পাঠানো হয়েছে বলে পুলিশ প্রমাণ পেয়েছে। ♦ সুরাট থেকে ধৃত মনোজ গুপ্তা ও নবীন গুপ্তা এই টাকা বিভিন্ন ওয়ালেটে পাঠিয়েছিল। ♦ এই দুজনের নির্দেশে কমিশনের ভিত্তিতে কসবার মোবাইল দোকানের মালিক বিশ্বদ্বীপ রাউত ও সাইফুল মন্ডল ওই টাকা বিভিন্ন ওয়ালেটে পাঠাত। ♦ জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, নিজেদের কাছে কোন প্রমাণ না  রাখার জন্যই তারা নগদ টাকা নিয়ে পালানোর বদলে এভাবে বিভিন্ন ওয়ালেটে টাকা পাঠাত। ♦ ভুয়ো আইডি কার্ড দিয়ে নেওয়া মোবাইল নম্বরে তৈরি করা হত এই ওয়ালেট।

জেরায় তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, নবীন গুপ্ত ও মনোজ গুপ্তা দিল্লি থেকে কলকাতায় এসেছিল বিমানে। পালিয়েছিলও বিমানেই। যাতায়াতের সময় এত মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, সেকারণেই তারা ওয়ালেটে টাকা ট্রান্সফার করে যেত।

নবীন গুপ্ত ও মনোজ গুপ্তা আদতে পেশায় ব্যবসায়ী। ইউটিউব দেখে তারা গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান নেয়। নবীন গুপ্ত ও মনোজ গুপ্তাকে মঙ্গলবার ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। আজই ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে তাদের। ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানাবে পুলিশ।

শহরের এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সুরাট থেকে গ্রেফতার মনোজ গুপ্তা, নবীন গুপ্তা। এঁরা মূলত দিল্লির বাসিন্দা। কলকাতা থেকে গ্রেফতার বিশ্বদীপ রাউত ও আব্দুল সইফুল মণ্ডল। তাদের জেরায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

আরও পড়ুন: বেলা ১১.৩০! শাহের বাসভবনে রুদ্ধদ্বারের আলোচনায় ঠিক কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন শুভেন্দু?

জানা গিয়েছে, ডার্ক ওয়েবে বিদেশ থেকে আনা হয়েছিল ব্ল্যাক বক্স। সেই ব্ল্যাক বক্সের মাধ্যমেই এটিএম-এর সঙ্গে ব্যাঙ্কের সার্ভারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে ভূতুড়ে কায়দায় টাকা গায়েব করা হয়েছিল। রবিবার সুরাট থেকে ধৃত দুই অভিযুক্ত ডার্কওয়েভে এই বিশেষ যন্ত্র নিয়ে এসেছিল।

কীভাবে ব্ল্যাক বক্সের মাধ্যমে জালিয়াতি হয়?

দিল্লির বাসিন্দাদের জেরা করে জানা গিয়েছে, ডার্ক ওয়েভে বিশেষ যন্ত্র তারা আমদানি করেছিল। এটিকেই তারা বলে ব্ল্যাক বক্স। তার মাধ্যমেই ভূতুড়ে কায়দায় টাকা গায়েব হত। কীভাবে সম্ভব?

♦ চাবি দিয়ে প্রথমে এটিএমের হুড খোলা হয়। ♦  ভিতরের ইউএসজি পোর্টে ওই ব্ল্যাক বক্সটিকে বসিয়ে দিতে হয়। ♦  ব্ল্যাক বক্স পুট হয়ে যাওয়ার পরই গোটা এটিএমের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে পেয়ে যায় জালিয়াতরা। ♦ এটিএমের স্ক্রিনে ভেসে ওঠে যে মেশিনটি রিপিয়ারিং মোডে চলে গিয়েছে। ♦  এরকম লেখা থাকলেও ওই অবস্থায় টাকা বের করা সম্ভব এবং সেই ব্ল্যাক বক্স মোবাইলের মাধ্যমেও  নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ♦ তারপর ‘get cash’ বোতাম চাপ দিলেই টাকা বেরিয়ে আসবে। ♦  এটিএমের ক্যাশ ট্রে অর্থাৎ টাকার বেরনোর কন্ট্রোলটিও জালিয়াতদের কাছে চলে যায়। ♦  ঠিক এই কলকাতা থেকে গত কয়েক দিনে ২ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ♦  চিন ছাড়াও অনান্য অনেক দেশ থেকে বেআইনি পথে এই যন্ত্র আমদানি করত।

এই কায়দায় গত কয়েকদিনে এই চক্র কলকাতার বিভিন্ন এটিএম থেকে ২ কোটি টাকা গায়েব করেছে।