করোনা (Covid 19) অতিমারির সঙ্কট কাটেনি এখনও। একটু অসাবধান হলেও ফের বাড়তে পারে সংক্রমণ। তৃতীয় তরঙ্গে (Third Wave) শিশুদের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি থাকতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এরই মধ্যে বাংলায় (West Bengal) হাজির অজানা জ্বর। সপ্তাহ খানেক ধরে উত্তরবঙ্গ (North Bengal) জুড়ে বাড়ছে সেই জ্বরের (Fever) দাপট। উপসর্গ- জ্বর, সর্দি, পেটে ব্যাথা। চিকিৎসকেরা বলছেন হু হু করে কমে যাচ্ছে প্লেটলেট। ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri) এই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ শিশুর। আক্রান্তের সংখ্যা হাজার পার। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জেরে তড়িঘড়ি বিশেষ কমিটি গঠন করে তদন্তে নেমেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। কোন জেলায় কত আক্রান্ত, কীভাবেই বা বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, সকল বিষয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জ্বরের কারণ খুঁজতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাইরাস প্যানেলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছে। দ্রুত তা জেলাস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি HFNO দেওয়া হচ্ছে।
শুধু বাংলা নয়, অজানা জ্বরে জবুথবু হরিয়ানাও। এখানকার এক গ্রামে শেষ তিন সপ্তাহে অন্তত সাত জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেকের বয়স ১৪ বছরের নিচে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছে জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের প্রতিনিধি দল, ডেঙ্গির সংক্রমণের কোনও সংযোগ পাচ্ছেন না।
বাংলার অজানা জ্বরের সব আপডেট দেখে নিন একনজরে:
কলকাতা: এখনও অনিয়ন্ত্রিত সংক্রমণ। উত্তরবঙ্গে বিগত ২ সপ্তাহ ধরে এক অজানা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে একাধিক শিশু। শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, দক্ষিণ বঙ্গেও থাবা গেড়েছে এই জ্বর। রাজ্য জুড়ে প্রায় হাজার শিশু আক্রান্ত জ্বরে। সঙ্গে উপসর্গ শ্বাসকষ্ট, খিঁচুনি, বুকে ব্যথা। কীভাবে এই জ্বর তা নিয়ে ধন্দ চিকিত্সামহলে।
আসানসোল জেলা হাসপাতালে জ্বরের উপসর্গ (Mystery Fever) নিয়ে ভর্তি রয়েছে ১৪৮ জন শিশু। সকলেরই একই ধরনের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। জ্বর ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ও খিঁচুনি দেখা দিয়েছে। করোনা পরীক্ষা করার পরেও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে আক্রান্তদের। কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও জ্বরের কারণ ধরা না পড়ায় নমুনা পাঠানো হয়েছে পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাবে।
যে জ্বর এতদিন অজানা বলা হচ্ছিল নমুনা পরীক্ষা করতেই সেই তকমাটা চলে যাচ্ছে ক্রমশ। সামনে আসছে জ্বরের নানাবিধ কারণ। মূলত RS ভাইরাস এবং ভাইরাল নিউমোনিয়ার আক্রমণেই জ্বরের প্রকোপ বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। তবে তার পাশাপাশি পরীক্ষায় বিভিন্ন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া এবং দু একটি ক্ষেত্রে করোনা বা সোয়াইন ফ্লুয়েরও হদিশ মিলেছে বলে জানিয়েছেন চিকিত্সকেরা।
জ্বরের প্রাদুর্ভাব নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বছরের এ সময় প্রতিবারই শিশুদের মধ্যে ভাইরাসের প্রকোপ দেখা যায়। এ বছর সংখ্যাটা বেশি। তার মানে এই নয় যে কিছুই ঘটেনি। রোগ যখন হচ্ছে। শিশুদের আইসিইউয়ে ভর্তি যখন করতে হচ্ছে তখন কিছু একটা কারণও নিশ্চিত রয়েছে।” পাশাপাশি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর কী কী পদক্ষেপ করতে চলেছে তাও স্পষ্ট করেন স্বাস্থ্য় অধিকর্তা।
রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, জ্বরের কারণ খুঁজতে স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভাইরাস প্যানেলে নমুনা পরীক্ষা করা হবে। পাশাপাশি, উপসর্গের নিরিখে কী ধরনের চিকিৎসা করতে হবে সেই সংক্রান্ত প্রোটোকল বিশেষজ্ঞ কমিটি তৈরি করছে। দ্রুত তা জেলাস্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ভাইরাল প্যানেলে পরীক্ষা খরচসাপেক্ষ। তাই কোভিড, ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া, স্ক্রাব টাইফাস ধরা না পড়লে ভাইরাস প্যানেল করতে বলা হয়েছে। পিএম কেয়ার্সে পাওয়া ভেন্টিলেটরকে পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল অক্সিজেন মাস্কে রূপান্তরিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাড়তি HFNO দেওয়া হচ্ছে।
কোন জেলায় আক্রান্ত কত শিশু জানাল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর
জলপাইগুড়ি- ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৯২। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩১ জন শিশু। চিকিত্সার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ২৬ জনকে। জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে ৫জনকে।
আলিপুরদুয়ার- ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ১১২। গত ২৪ ঘণ্টায় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৬ জন শিশু। চিকিত্সামুক্ত ৪২ জন। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে ২ জন কে।
কোচবিহার- বুধবার পর্যন্ত ১১৩ জন শিশু আক্রান্ত। গত ২৪ ঘণ্টায় কোচবিহার জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪৬ জন শিশু। হাসপাতাল থেকে মুক্ত ৫৪। মৃত ১।
কালিম্পং- ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৫। গত ২৪ ঘণ্টায় কালিম্পং জেলা হাসপাতালে ভর্তি ২ শিশু।
দার্জিলিঙ- বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত ৮৬ জন শিশু। গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিং জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৮ জন শিশু। ছুটি দেওয়া হয়েছে ১৯ জনকে। দার্জিলিং জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে ২ জনকে। গুরুতর অবস্থা ৩ শিশুর।
মালদা- ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ১৯৬। গত ২৪ ঘণ্টায় মালদা জেলা হাসপাতালে ভর্তি ৬৫জন। চিকিত্সামুক্ত ১৬জন। মালদায় মৃত ২ জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১৫জন শিশু।
উত্তর দিনাজপুর- বুধবার পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৬৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৭ জন শিশু রোগী। ছুটি মিলেছে ৫৩ জনের। জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে ৩ জনকে। ১০ জন শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
দক্ষিণ দিনাজপুর- বুধবার পর্যন্ত আক্রান্ত ৯২। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩২ জন শিশু। ছুটি দেওয়া হয়েছে ৪৩ জনকে। জেলা হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়েছে ১ জন শিশুকে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ৩ জন শিশু।
বিস্তারিত পড়ুন: North Bengal: অজানা জ্বরে জবুথবু উত্তরবঙ্গ, কোন জেলায় কত আক্রান্ত, জানাল স্বাস্থ্য দফতর
রহস্যভেদ হচ্ছে না অজানা জ্বরের। তবু সম্ভাব্য জ্বরের কী কী লক্ষণ দেখা যেতে পারে তা দেখে নিন এক ঝলকে।
পূর্ব মেদিনীপুর: কোলাঘাটের একটি বেসরকারি শিশু নার্সিংহোমে জ্বর, শ্বাসকষ্ট-সহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ৩০ জন শিশু। বুধবার, বিকেল থেকে ক্রমেই বাড়তে শুরু করে আক্রান্তের সংখ্যা। এদিকে, সীমিত শয্যা থাকায় কার্যত সকলকে পরিষেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ওই বেসরকারি নার্সিংহোম। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আক্রান্তদের মধ্যে কিছুজনের নিউমোনিয়া ধরা পড়লেও বাকি শিশুদের জ্বরের কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। কীভাবে এই জ্বর তা নিয়ে ধন্দে চিকিত্সকেরা। এদিকে শয্যা-সঙ্কট দেখা দেওয়ায় হাসপাতালে আক্রান্তদের রাখাও যাচ্ছে না। গুরুতর অসুস্থ না হলে আক্রান্ত শিশুদের পরিবারকে কেবল ওষুধ দিয়েই ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন চিকিত্সকেরা। কীভাবে এই জ্বরের সঙ্গে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে জেলাপ্রশাসন।
পশ্চিম বর্ধমান: অজানা জ্বরের (Mystery Fever) দাপট এ বার রাজ্যের দক্ষিণেও। হু হু করে ছড়াচ্ছে অজানা জ্বর। কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও জ্বরের কারণ ধরা না পড়ায় নমুনা পাঠানো হল পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাবে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার মাঝেই চিকিত্সক মহলের উদ্বেগ বাড়িয়েছে এই জ্বর। প্রতিদিনই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু।
বিস্তারিত পড়ুন: Asansol: অজানা জ্বরের কারণ খুঁজতে ব্যর্থ ট্রপিক্যাল মেডিসিনও! নমুনা পরীক্ষায় পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাব
দুর্গাপুর: অজানা জ্বরের (Mysteru Fever) প্রকোপ ক্রমশ বিস্তার বাড়াচ্ছে জেলায় জেলায়। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, দুই দিনাজপুর পেরিয়ে এ বার জ্বরের থাবা দক্ষিণবঙ্গে (South Bengal)। অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুর্গাপুর (Durgapur) মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪২ জন শিশু। বিশেষ টিম তৈরি করে চিকিৎসা শুরু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দিন কয়েকের ব্যাবধানে মহকুমার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জ্বর, সর্দি কাশি আর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হচ্ছে শিশুদের।
বিস্তারিত পড়ুন: অজানা জ্বর থেকে নিস্তার নেই দক্ষিণবঙ্গের, এক হাসপাতালেই ভর্তি ৪২ জন শিশু
চণ্ডীগঢ় : করোনা তো ছিলই, তার সঙ্গে আবার নতুন ভয় ঢুকেছে হরিয়ানার পালওয়াল জেলায়। এখানকার এক গ্রামে শেষ তিন সপ্তাহে অন্তত সাত জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রত্যেকের বয়স ১৪ বছরের নিচে। মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছে জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকরা।
পালওয়াল শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে চিলি গ্রাম। আর এই গ্রামেই দানা বাঁধছে নতুন এক আতঙ্ক। তিন সপ্তাহের মধ্যে সাত শিশুর মৃত্যুতে দুশ্চিন্তায় রয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগও। ইতিমধ্যেই গ্রামের পঞ্চায়েত অফিসে একটি ক্যাম্প খোলা হয়েছে। কিন্তু কী থেকে মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, এখানকার আশেপাশের যা পরিস্থিতি তাতে, ডেঙ্গি থেকে শুরু করে নিউমোনিয়া, গ্যাস্ট্রোএনটেরিটিস থেকে শুরু করে কোনও ভেক্টর বাহিত রোগ, যে কোনও কিছু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও, স্বাস্থ্য আধিকারিকদের প্রতিনিধি দল, ডেঙ্গির সংক্রমণের কোনও সংযোগ পাচ্ছেন না। তাঁরা বলছেন, একাধিক শারীরিক সমস্যার কারণে মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
বিস্তারিত পড়ুন: শুধু বাংলা নয় হরিয়ানাও জুবুথুবু ‘অ-জানা’ জ্বরে! ৩ সপ্তাহে ৭ শিশুর মৃত্যু
জলপাইগুড়ি: অজানা জ্বর মোকাবিলায়, সোমবারের পর ফের বুধবার ৫ সদস্যের মেডিক্যাল টিম এসে পৌঁছল জলপাইগুড়িতে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই এই টিম এসে পৌঁছেছে বলে জানা গিয়েছে। ৫ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলে রয়েছেন শিশুবিশেষজ্ঞ চিকিত্সক গৌতম দাস-সহ উত্তরবঙ্গের বিশেষ জনস্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিত্সক সুশান্ত রায় ও অন্যান্য আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে জলপাইগুড়িতে মৃত্যু হয়েছে দুই শিশুর। মঙ্গলবার সকালেই ময়নাগুড়ি হাসপাতালে মৃত্যু হয় ৮মাসের এক শিশুর। অন্যদিকে, আচমকা জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন মাঝবয়সী ও বৃদ্ধরাও। হাসপাতালে বাড়ছে ভিড়। কীভাবে এই জ্বর, কারণ খুঁজতে তত্পর প্রশাসন।
মুর্শিদাবাদ: অজানা জ্বরের (Mystery Fever) বিপদ ক্রমবর্ধমান। জেলায় জেলায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। উত্তরবঙ্গে ইতিমধ্যেই অজানা জ্বরে (Mystery Fever) মৃত্যু হয়েছে ৪ শিশুর। কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। এর মধ্যেই ফের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে অজানা জ্বরে আক্রান্ত ১৫০ জন শিশু। তাদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা গুরুতর। কিন্তু, হাসপাতালে শয্যা-সঙ্কট। মিলছে না বেড। মেঝেতেই শুয়ে শিশুর দল। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে করোনা মোকাবিলা করতে রাজ্যের সকল হাসপাতালগুলিকে নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য় দফতর, সেখানে কী করে সরকারি হাসপাতালের এমন দূর্বিষহ ছবি উঠে আসছে? তাহলে কি পূর্ব প্রস্তুতি নেয়নি হাসপাতাল?
বিস্তারিত পড়ুন: Murshidabad: অজানা জ্বরে আক্রান্ত ১৫০, মেডিক্যাল কলেজ-হাসপাতালের মেঝেতেও শুয়ে শিশুরা!
জলপাইগুড়ি থেকে একাধিক জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে অজানা জ্বর। গত কয়েকদিনে হুঁশ না ফিরলেও অবশেষে তৈরি হয়েছে কমিটি। আজ স্বাস্থ্য ভবনে দিনভর দফায় দফায় বৈঠক হবে এই বিষয়ে। অজানা জ্বরের পাশাপাশি ডেঙ্গি, ডায়ারিয়া, ম্যালেরিয়া নিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় সবকটি মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি, অধ্যক্ষদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম। এরপর দুপুর দেড়টায় জলপাইগুড়ির ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত আট সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে বৈঠক করবেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য। সেই বৈঠকের সূত্র ধরে বিকেল ২ টেয় সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, ডেপুটি সিএমওএইচ টু, এমএসভিপি, জেলা হাসপাতালের সুপার, নিকু-পিকু-আইসিইউ ইনচার্জ এবং প্রতিটি হাসপাতালের একজন শিশুরোগ চিকিৎসকের সঙ্গে বিশেষজ্ঞ কমিটির উপস্থিতিতে বৈঠক করবেন স্বাস্থ্য সচিব।
জলপাইগুড়িতে ফের মৃত্যু হল এক শিশুর। জ্বরে আক্রান্ত তিন মাসের ওই শিশুকে বুধবার ভোরে ময়নাগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। করোনা টেস্ট করানোর সময় তার মৃত্যু হয়। শিশুটির মাত্র দু’দিন ধরে জ্বর ছিল বলে জানিয়েছে পরিবার। গতকাল ময়নাগুড়িতে চিকিৎসককে দেখালে তিনি জলপাইগুড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর আজ সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরই তার মৃত্যু হয়েছে।
অজানা জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে গত ৭ দিন ধরে। কেন কোনও কমিটি গঠন করা হচ্ছে না? কেন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয় হচ্ছে না? এই প্রশ্নগুলোই সামনে এনেছিল TV9 বাংলা। আর তারপরই গতকাল তড়িঘড়ি আট সদস্যের কমিটি গঠন করল স্বাস্থ্য দফতর।
বিস্তারিত পড়ুন: TV9 বাংলার খবরের জের, অজানা জ্বর নিয়ে সাত দিন পর নড়েচড়ে বসল স্বাস্থ্য ভবন
হুহু করে নামছে রক্তের প্লেটলেট কাউন্ট, কমছে শ্বেত রক্তকণিকা। শিলিগুড়িতে জ্বরে (Viral Fever) আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে একই সমস্যা দেখা যাচ্ছে। আর ঠিক এই কারণেই খুব তাড়াতাড়ি জ্বরে নেতিয়ে পড়ছে শিশুরা। বলছেন চিকিত্সকরাই।
বিস্তারিত পড়ুন: নামছে প্লেটলেট, হচ্ছে অর্গান ফেলিওর! কী কারণে শিশুদের এই উপসর্গ, জানালেন চিকিত্সক
এবার আতঙ্কই ছড়াল উত্তর দিনাজপুরে (North Dinajpur)। জ্বরে (Mystery Fever) আক্রান্ত হয়ে রায়গঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি অন্তত ১৬ জন শিশু। প্রায় প্রত্যেকেরই রয়েছে জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট। কারও আরও পেটে ব্যাথাও হচ্ছে।
বিস্তারিত পড়ুন: Mystery Fever: ওষুধ খাওয়ালেও এক-দেড় ঘণ্টার মধ্যে আবার আসছে জ্বর! অজানা জ্বরের থাবা আরও এক জেলায়
অজানা জ্বরের (Mystery Fever) প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে উত্তরবঙ্গে (North Bengal)। ৮ মাসের এক শিশুর মৃত্যুর খবর এসেছিল আগেই। এখনও পর্যন্ত এই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল ৪ শিশুর। গুরুতর অসুস্থ শিশুর সংখ্যা সব মিলিয়ে ৫০-এর পঞ্চাশের কাছাকাছি। সরকারি নথি অনুযায়ী ৫০০-র বেশি শিশু অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। আর এই ঘটনা কার্যত বেআব্রু করে দিয়েছে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে। বিশেষত শিশু চিকিৎসার পরিকাঠামোর হতশ্রী চেহারাটা ক্রমশ সামনে আসছে।
বিস্তারিত পড়ুন: শিশু মৃত্যুর পরও জানা গেল না কোন জ্বর! আক্রান্ত পাঁচ শতাধিক