Asansol: অজানা জ্বরের কারণ খুঁজতে ব্যর্থ ট্রপিক্যাল মেডিসিনও! নমুনা পরীক্ষায় পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাব

Mystery Fever: আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে জ্বরের উপসর্গ (Mystery Fever) নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১৪৮ জন শিশু। সকলেরই একই ধরনের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। জ্বর ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ও খিঁচুনি দেখা দিয়েছে।

Asansol: অজানা জ্বরের কারণ খুঁজতে ব্যর্থ ট্রপিক্যাল মেডিসিনও! নমুনা পরীক্ষায় পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাব
আসানসোল জেলা হাসপাতাল, ফাইল ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 15, 2021 | 3:52 PM

পশ্চিম বর্ধমান: অজানা জ্বরের (Mystery Fever) দাপট এ বার রাজ্যের দক্ষিণেও। হু হু করে ছড়াচ্ছে অজানা জ্বর। কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনেও জ্বরের কারণ ধরা না পড়ায় নমুনা পাঠানো হল পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাবে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কার মাঝেই চিকিত্‍সক মহলের উদ্বেগ বাড়িয়েছে এই জ্বর। প্রতিদিনই অজানা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন শিশু।

আসানসোল জেলা হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে জ্বরের উপসর্গ (Mystery Fever) নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ১৪৮ জন শিশু। সকলেরই একই ধরনের উপসর্গ দেখা গিয়েছে। জ্বর ছাড়াও শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ও খিঁচুনি দেখা দিয়েছে। করোনা পরীক্ষা করার পরেও রিপোর্ট নেগেটিভ আসে আক্রান্তদের। প্রাথমিকভাবে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ বলে মনে হলেও ওই ভাইরাসের নমুনা না মেলায় জ্বরের (Mystery Fever)  কারণ নিয়ে ধন্দে চিকিত্‍সকেরা। ইতিমধ্যেই, মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছেন জেলা মুখ্য় স্বাস্থ্য আধিকারিক। প্রাথমিকভাবে রোগটি সংক্রামক বলেই মনে করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শেখ মহম্মদ ইউনুস বলেন, “মূলত ১২ বছরের কম বয়সী  শিশুরাই এই অজানা জ্বরে অধিক আক্রান্ত হচ্ছে।প্রাথমিকভাবে আমরা এটি ইনফ্লুয়েঞ্জা সংক্রমণ বলে ভেবেছিলাম। কিন্তু, পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে ওই শিশুরা কেউই ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত নয়। এমনকী, করোনা, ডেঙ্গু,ম্যালেরিয়ার মতো জীবাণু সংক্রমণ না মেলায় নমুনা পাঠানো হয় স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে। কিন্তু, জ্বরের কারণ সেখানেও জানা যায়নি। তাই নমুনাগুলি পাঠানো হয়েছে পুণের ভাইরোলজিক্যাল ল্যাবে। বর্ষাকালে এমনিতেই শিশুরা জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে এই জ্বরের কোনও কারণম খুঁজে না পাওয়ায় কিছুটা উদ্বেগ থাকছেই। আমরা আমাদের সবটা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা করছি।”

উল্লেখ্য, গত দুই সপ্তাহ ধরে উত্তরবঙ্গে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চলেছে শিশুরা। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে গত দুই সপ্তাহ ধরে টানা জ্বরের প্রকোপ বেড়েই চলেছিল, তখন কেন সংক্রমণের খবর রাজ্য স্বাস্থ্যভবনকে জানাননি, উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা? যেখানে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সর্বাধিক প্রভাব পড়তে পারে শিশুদের উপর, সেখানে কী করে এই সংক্রমণকে প্রাথমিকভাবে ইনফ্লুয়েঞজা বলে চিকিত্‍সা চালানো হচ্ছিল? কী করেই বা শিশু-মৃত্যুর পরেও জলপাইগুড়ির সিএমওএইচ জ্যোতিষচন্দ্র দাস জানিয়ে দেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক। বিশেষ জনস্বাস্থ্য আধিকারিক সুশান্ত রায় কেন কোনও যথাযথ পদক্ষেপ করলেন না,  প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট মহলের।

সংবাদমাধ্যমে প্রশ্ন উঠতে এত দিন পর কমিটি গঠন করছে স্বাস্থ্য দফতর। দেখা যাচ্ছে তৎপরতা। নবান্ন সূত্রে খবর, এই ইস্যুতে বুধবার মুখ্য সচিব বৈঠক ডেকেছেন জরুরি ভিত্তিতে। সব জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং জেলাশাসকের সঙ্গে কথা হবে সেই বৈঠকে। ১০-১২ দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করে সঠিক কারণ জানা যায়নি। কেন জ্বরের কারণ জানতে এত বেশি সময় লাগছে? সে নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ।

বুধবার স্বাস্থ্যদফতরের তরফে তড়িঘড়ি যে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়, তাতে রয়েছেন, একাধিক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, ভাইরোলজিস্ট। তাঁরাই অজানা জ্বরের কারণ খতিয়ে দেখবেন। আট সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন ড. দিলীপ পাল, ড. মৌসুমী নন্দী, ড. বিভূতি সাহা, ড. সৌমিত্র ঘোষ, ড. মিহির সরকার, ড. ভাস্বতী মুখোপাধ্যায়, ড. সুগত দাশগুপ্ত, ড. দীপ্তকান্তি মুখোপধ্যায়। জানা যাচ্ছে, সাধারণ জ্বর নয়, প্লেটলেট ক্রমশ কমতে শুরু করছে শিশুদের। সেই কারণেই ক্রমশ নেতিয়ে পছে তারা। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের কথা মাথায় রেখে রাজ্যে শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য পরিকাঠামো প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। অথচ অজানা জ্বরেই বেআব্রু হয়ে গেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন: Jalpaiguri: ফের অজানা জ্বরে মৃত ৮ মাসের শিশু, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক’ বলছে প্রশাসন!

আরও পড়ুন: Jalpaiguri: জাপানি এনকেফালাইটিসের সংক্রমণ নয়, অজানা জ্বর নিয়ে মুখ খুললেন জনস্বাস্থ্য আধিকারিক