পরীক্ষা ছাড়াই পাশ, পড়ুয়াদের জন্য বড় ঘোষণা মধ্যশিক্ষা পর্ষদের
শুধুমাত্র এই বছরের জন্য কোনও মূল্যায়ন ছাড়াই পড়ুয়াদের পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হবে। অন্যান্য বছর এই সময়ের মধ্যে ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে জানুয়ারিতেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হয়ে যায়। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
কলকাতা: এবার পরীক্ষা ছাড়াই পাশ। চলতি শিক্ষাবর্ষে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের কোনও পরীক্ষা দিতে হবে না। পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে তুলে দেওয়া হবে। এদিন রাজ্যের সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকাদের উদ্দেশে এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of Secondary Education)। অতিমারি ও তার দরুন তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে কারণেই এহেন সিদ্ধান্ত পর্ষদের।
পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, শুধুমাত্র এই বছরের জন্য কোনও মূল্যায়ন ছাড়াই পড়ুয়াদের পরের ক্লাসে তুলে দেওয়া হবে। অন্যান্য বছর এই সময়ের মধ্যে ফাইনাল পরীক্ষা হয়ে জানুয়ারিতেই নতুন শিক্ষাবর্ষের ক্লাস শুরু হয়ে যায়। কিন্তু চলতি শিক্ষাবর্ষে সেটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। সাধারণত অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হলেও এতদিন সব পড়ুয়াদের পাশ করিয়েই দেওয়া হত। তবে নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে পরীক্ষায় পাশ করার তাগিদটা ছিল পড়ুয়াদের। তবে মাধ্যমিকের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা পড়ুয়াদেও পরীক্ষা ও মূল্যায়ন বাতিল করে দেওয়ায় কিছুটা বিস্মিত অভিভাবকদের একাংশ।
দশম শ্রেণির ক্ষেত্রে টেস্ট পরীক্ষা যে হবে না সেটা অবশ্য আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি শ্রেণির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে কী হবে তা নিয়ে একটা ধোঁয়াশা ছিলই। তবে এদিন সেটা কেটে গিয়েছে। যদিও আজকের বিজ্ঞপ্তির পর নতুন করে ধোঁয়াশায় শিক্ষক মহল।
ঘটনা হচ্ছে, বিগত কয়েক মাস অনলাইনের মাধ্যমে ক্লাস হলেও রাজ্যের প্রান্তিক স্তরে এমন অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যারা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। রাজ্য সরকার প্রত্যেক পড়ুয়াকে ট্যাব দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও চলতি শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। ফলে আসল সময়টা চলেই গিয়েছে। তা সত্ত্বেও ফেলে আসা বছরের সিলেবাস যাতে ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মস্থ করতে সমস্যা না হয়, তাই আরেকটি ঘোষণা করেছে পর্ষদ। যেখানে বলা হয়েছে, ফের নতুন করে স্কুল খুললে পড়ুয়াদের স্বার্থে আগের বছরের পাঠক্রম একবার ঝালিয়ে নিতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।
ঠিক এখানেই শিক্ষক মহলের ধোঁয়াশা এবং প্রশ্ন, একটা গোটা বছরের পাঠক্রম ঝালিয়ে নিয়ে তারপর নতুন বছরের সিলেবাস কীভাবে তাঁরা শেষ করবেন? পর্ষদ এই নির্দেশ দিলেও বাস্তবে তা কীভাবে কার্যকর করা হবে, তা নিয়ে দ্বিধা ও দ্বন্দ্বে ভুগছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের চিন্তা কারণ থাকলেও, আজকের নির্দেশিকায় যে পড়ুয়ারা যে যথেষ্ট স্বস্তি পাবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।