কলকাতা: আজ বিধানসভায় দেখা গেল এক নজিরবিহীন ছবি। শুরুতেই ভাষণ শেষ করে বেরিয়ে যেতে হয় রাজ্যপালকে। ভাষণ পাঠ শুরু হতেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপি বিধায়করা। এই ঘটনার পরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্য সরকারকে তোপ দাগলেন তিনি। বিরোধী দলনেতার দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন সরকারের তৈরি করে দেওয়া ভাষণে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে একটা শব্দও নেই। সেই কারণেই তাঁদের বিক্ষোভ। তবে, রাজ্যপাল যে এই অভিযোগের বিষয়ে সংবেদনশীল সে কথা উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু।
এ দিন শুভেন্দু রাজ্যপাল সম্পর্কে বলেন, ‘রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রাজ্যপালকে সরব হতে দেখেছি আমরা। সোশ্যাল মিডিয়াতে আবার কখনও বিজেপি পরিষদীয় দলের কাছেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যাবিনেটের লিখে দেওয়া ভাষণ রাজ্যপালকে দেওয়া হয়েছে। এখানে তাঁর কিছু বলার বা করার নেই।’ হিংসায় মৃত ৪১ জন বিজেপি নেতার ছবি দিয়ে এ দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মহিলাদের ওপর অত্যাচারের অভিযোগও সামনে আনেন তিনি।
এমনকি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও একটা কথা বলা হয়নি বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। তাঁর দাবি, পাল্টা নির্বাচন কমিশনের উপর দায় চাপানো হয়েছে। যা হিংসা হয়েছে তা এই সরকার গঠনের আগে বলে দাবি করা হয়েছে। কোথাও কোনও অশান্তি সরকার গঠনের পর হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে খসড়াতে। উল্লেখ্য, এই ভাষণে লেখা ছিল, ‘ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনাগুলি যে সময়ে সংঘটিত হয়েছে, তখন আইন-শৃঙ্খলা ছিল নির্বাচন কমিশনের হাতে।’ আরও লেখা রয়েছে যে, নতুন নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় এসে নিরক্ষেপতার সঙ্গে পদক্ষেপ গ্রহণ করে ও রাজ্যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসে।
আরও পড়ুন: ‘স্বচ্ছতার সঙ্গে ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ করুন’, উচ্চ প্রাথমিক মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রথা অনুযায়ী সরকার তথা মন্ত্রিসভা যে ভাষণ লিখে দেয়, তাই পাঠ করেন রাজ্যপাল। আর তা দিয়েই শুরু হয় বিধানসভার অধিবেশন। তাই এই ভাষণ নিয়ে আজ আগ্রহ ছিল রাজনৈতিক মহলের। যে রাজ্যপাল সম্প্রতি রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বারবার তোপ দেগেছেন, তিনি সরকারের প্রশংসাসূচক ওই ভাষণ পড়বেন কি না তা নিয়ে সন্দেহ ছিলই। কিন্তু এ দিন বিক্ষোভের মুখে সেই ভাষণ পাঠ করেননি রাজ্যপাল। বিজেপির তুমুল বিক্ষোভের জেরে শুরুতেই ভাষণ বন্ধ করে দেন রাজ্যপাল। মাত্র এক লাইন ভাষণ পড়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান তিনি।