Calcutta University’s VC: CU টপার, গোল্ড মেডেলিস্ট VC শান্তা দত্তের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ক্লাস টুয়েলভে ৬৯ শতাংশ পাওয়া TMCP নেতা
Calcutta University: শুধু তাই নয়, TMCP-র সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী তো আবার শান্তা দত্তের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এর উত্তরও দিয়েছেন উপাচার্য। অর্থাৎ পরীক্ষা নেওয়া না নেওয়ার জল গড়িয়েছে সার্টিফিকেটের লড়াই অবধি। তবে ওয়াকিবহাল মহল একাংশ প্রশ্ন তুলছে, একজন পড়ুয়ার সঙ্গে কি অধ্যাপকের তুলনা করা আদৌ সম্ভব?

কলকাতা: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিন কোনও পরীক্ষা স্থগিত হবে না। পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য শান্তা দত্ত। তারপর থেকেই কার্যত শাসকদলের সঙ্গে ‘লড়াই’ শুরু হয়েছে তাঁর। তৃণমূলের বড় নেতা (ব্রাত্য বসু) থেকে ছোট নেতা (অভিরূপ চক্রবর্তী) সকলের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে। শুধু তাই নয়, TMCP-র সাধারণ সম্পাদক অভিরূপ চক্রবর্তী তো আবার শান্তা দত্তের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এর উত্তরও দিয়েছেন উপাচার্য। অর্থাৎ পরীক্ষা নেওয়া না নেওয়ার জল গড়িয়েছে সার্টিফিকেটের লড়াই অবধি। তবে ওয়াকিবহাল মহল একাংশ প্রশ্ন তুলছে, একজন পড়ুয়ার সঙ্গে কি অধ্যাপকের শিক্ষার তুলনা করা আদৌ সম্ভব?
দেখে নেওয়া যাক কার কী যোগ্যতা!
উপাচার্য শান্তা দত্ত বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের।
তিনি উচ্চ-মাধ্যমিকে রাজ্যে দ্বিতীয়।
হোম সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করে প্রথম হয়েছিলেন স্নাতকে। পেয়েছিলেন গোল্ড মেডেল।
এরপর ফুড অ্যান্ড নিউট্রেশন নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়েছেন। তখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম হন। এখানেও তিনি পেয়েছিলেন গোল্ড মেডেল।
পরবর্তীতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করেছেন।
শান্তা নিজে টিভি ৯ বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি বোধহয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবিত একমাত্র ব্যক্তি যাঁর কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই ৬টা মেডেল আছে। এই বায়োডেটা নিয়ে পরবর্তীকালে পিএইচডি করেছি। বেস্ট ‘গ্রাজ্যুয়েট অফ দ্য ইয়ার’ হই। ইউনিভার্সিটি গোল্ড মেডেল পেয়েছি। এটা আমার পড়াশুনো। আর আমার কাজের অভিজ্ঞতা? ২ বছর হেড অফ দ্য ডিপার্টমেন্ট, ৩ বারের ডিন, ২০ বছর UG বোর্ডের চেয়ারম্যান, ৩ পিজি বোর্ডে। দীর্ঘ আট বছর ICC বোর্ডে প্রিসাইডিং অফিসার। এত লম্বা অভিজ্ঞতা। ”
অপরদিকে যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা উপাচার্যের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা কী?
অভিরূপ চক্রবর্তী বর্তমানে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক।
ISC-তে তিনি ৬৯ শতাংশ পেয়ে পাশ করেন।
এরপর ফিজিওলজি নিয়ে স্নাতক পাশ করেন বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে।
এরপর হিউম্যান রাইটস নিয়ে স্নাতকোত্তর পাশ করেন বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজ থেকে। ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলেন।
বর্তমানে পিএইচডি-র আবেদনকারী।
কী নিয়ে বিতর্ক?
২৮শে অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস। সেই দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকস্তরের পরীক্ষা কেন পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। এর পরপরই পরীক্ষার দিন বদল করতে বলে বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয় শিক্ষা দফতর। সোমবার ছিল সিন্ডিকেট মিটিং। সেই বৈঠক শেষে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বলেন, “সিন্ডিকেটে স্পেশাল সেক্রেটারি এসেছিলেন। তিনি এটা উল্লেখও করেছেন যে মুখ্য়মন্ত্রী অনুরোধ করেছেন। আর তাঁর অনুরোধ মানা উচিতও বলেন তাঁরা। তবে হাউস সর্বসম্মতিক্রমে ২৮শে অগস্টের পরীক্ষার তারিখ ওই জায়গাতেই রেখেছে। তিরিশ হাজার ছাত্র ছাত্রী মানসিকভাবে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন। তাই কিছু ছাত্রের জন্য আমরা ব্যাপক ছাত্রদের এই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি না। তাঁরা পরীক্ষা দেবে। আমরাও ঘোষিত তারিখ একই রেখেছি।” এরপরই ক্ষুব্ধ হন শিক্ষামন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, “মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও ব্যাপারেই হস্তক্ষেপ করেন না। উনি চাইলে ‘কেয়ারটেকার’ ভিসিকে সরাতে পারতেন। রাজ্যপাল উপাচার্যকে যেহেতু বিশেষ স্নেহ করেন, তাই মুখ্যমন্ত্রী এই স্নেহকে মান্যতা দিয়েছেন। সারাননি। সুপ্রিম কোর্টে হেরেও গিয়েছেন। তবে রাজ্যের পদাধিকারী যিনি কোনও ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন না সেটা রাখা যেত বলে আমার মনে হয়।”
এরপর মঙ্গলবার বিজেপির তরফে একটি পোস্ট করা হয়। যেখানে দেখা যায়, অভিরূপ প্রশ্ন করছেন শান্তার যোগ্যতা নিয়ে। শুধু তাই নয় হুমকিও দিয়েছেন তাঁকে। তিনি বলছেন, “এত বড় বেহায়া আমি জীবনে দেখিনি। ২৮ অগস্ট পরীক্ষা ফেলে দিয়েছে। আমি ওঁর শিক্ষাগত যোগ্য়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। উনি আবার নিজে বলছেন, কেউ আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে ঘেউ-ঘেউ করছে। আমি বলছি শান্তাদেবী বেশি কথা বলবেন না। আমাদেরকে যদি ঘেউঘেউ বলেন, আপনি রাজ্যপালের কাছে কতবার মিউ-মিউ করেছেন। ২৮ অগস্টের পর জবাব দেব। ইঞ্চিতে-ইঞ্চিতে বুঝে নেব।”
