Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘সাংস্কৃতিক চৈতন্যে ধাক্কা’, ‘টুম্পা-প্রচার’ নিয়ে সিপিএমকে একহাত শুভেন্দু মাইতির

দাবানলের মতে ছড়িয়ে পড়েছে ‘টুম্পা ব্রিগেড চল’ (Tumpa Brigade Cho)।

‘সাংস্কৃতিক চৈতন্যে ধাক্কা’, ‘টুম্পা-প্রচার’ নিয়ে সিপিএমকে একহাত শুভেন্দু মাইতির
ছবি - ফেসবুক
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 20, 2021 | 9:00 PM

কলকাতা: কাঁধে লাল নিশান। মুখে শৃঙ্খলমুক্তির গান। জাগো জাগো, জাগো সর্বহারা/ অনশন বন্দী ক্রীতদাস/ শ্রমিক দিয়াছে আজি সাড়া/ উঠিয়াছে মুক্তির আশ্বাস…। সঙ্গে তর্জনী আকাশে তুলে শিরা ফুলিয়ে ছাত্রযুবর স্লোগান, ‘শ্রমিকের অভিযান/ ব্রিগেডের ময়দান/ কৃষকের অভিযান/ ব্রিগেডের ময়দান/ ছাত্রযুবর অভিযান/ ব্রিগেডের ময়দান/ মা, বোনেদের অভিযান/ ব্রিগেডের ময়দান’। ফুটন্ত যৌবনের ডাক, ‘চলো চলো, এই মিছিলে ব্রিগেড চলো’। এতদিন এমনই ছিল বাম ব্রিগেডের চিরায়ত ছবি। সময় বদলেছে, নেতা বদলেছে, বদল এসেছে স্লোগানে, প্রচারে। বদল গানেও। দেওয়াল লিখনকে শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া বাম এখন ‘ওয়াল’ লিখনেও সিদ্ধহস্ত। সবই হয়েছে এবং হচ্ছে সময়ের দাবিতেই। একুশেও সেই ট্রেন্ড। শিক্ষা আনে চেতনা/চেতনা আনে বিপ্লব/বিপ্লব আনে মুক্তি– নীল আকাশে সাদা পায়রা উড়ানো বামেদর মুখে এখন ‘টুম্পা’ (Tumpa)। কার্যত পিপলস ব্রিগেডের অ্যানথেম হয়ে উঠেছে এই পলিটিক্যাল প্যারডি। ‘সৌজন্যে’ সূর্যকান্ত মিশ্র।

শুক্রবার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টের ওয়ালে ‘টুম্পা ব্রিগেড চল’ নামের একটি ভিডিয়ো শেয়ার করেন সিপিএম-এর রাজ্য সম্পাদক। সঙ্গে লেখেন, ‘২৮ ফেব্রুয়ারি বেলা একটায় ব্রিগেড সমাবেশে যোগ দিন।’  রাত পোহাতে না পোহাতেই এই পোস্ট ভাইরাল। হোয়াটসঅ্যাপেও দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে ‘টুম্পা ব্রিগেড চল’ (Tumpa Brigade Chol)।

সাংস্কৃতিক চৈতন্যে ধাক্কা লাগছে: শুভেন্দু মাইতি

সংবাদ শিরোনামে আসতেই জুটেছে সমালোচনাও। গণনাট্য আন্দোলনের দীর্ঘদিনের অগ্রণী শুভেন্দু মাইতির (Suvendu Maity) যেমন সাফ কথা, “মানুষের নিজস্ব একটি সাংস্কৃতিক চেতনা আছে। সেই চৈতন্যে ধাক্কা লাগছে। বিশ্বাসে ধাক্কা লাগছে। কিছু মানুষ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অনেকের আবার ভালও লাগছে। ৭৬ বছরের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, যাঁদের ভাল লাগছে না, তাঁরা আসলে এখনও কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে থাকা মানুষ। যাঁদের ভাল লাগছে, তাঁরা ভেসে আসা আবর্জনা।” আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, “একশো বছরের পার্টি সিপিএম। কোনও সাংস্কৃতিক দলিলই তৈরি করেতে পারেনি।”

সংগঠিত মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ, প্যারডিতে ব্রিগেডের আহ্বানে কোনও অসুবিধা নেই: সুজন

যদিও বাম পরিষদীয় নেতা তথা সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) ‘টুম্পা ব্রিগেড চল’-তে কোনও আপত্তিকর কিছু দেখছেন না। বরং তাঁর কথায়, সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় প্যারোডিতে ব্রিগেডের আহ্বান জানানো আসলে প্রচারের একটা আঙ্গিক মাত্র। আর কিছুই না। সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “উৎসাহী মানুষ সংগঠিত মনোভাব থেকে জেনে বুঝেই প্যারোডি করেছেন।”

খেলা হবে নিয়ে যদি গান হতে পারে তাহলে টুম্পা নিয়ে কেন হবে না: আশুতোষ চ্যাটার্জি

বামেদের জোটসঙ্গী কংগ্রেসেরও একই মত। উল্টে কংগ্রেসের যুব নেতা আশুতোষ চ্যাটার্জির পাল্টা প্রশ্ন, “খেলা হবে নিয়ে যদি গান হতে পারে তাহলে টুম্পা নিয়ে কেন হবে না? ছাত্রযুবরা মিমের মতো করে ব্যবহার করছে। ব্রিগেডের জন্য স্ট্রিট কর্নার হচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার হচ্ছে। এটাও একটা মাধ্যম মাত্র।”

প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্সি কলেজের এক ছাত্র এবং সিপিএম ডিজিটালের দায়িত্বে থাকা আরও এক যুব নেতার যৌথ প্রয়াস এই ‘টুম্পা ব্রিগেড চল’। যদিও তাঁরা কেউই প্রকাশ্যে এই বিষয়ে কিছু বলতে চাননি। পার্টির অনুমোদন রয়েছে কিনা, সে বিষয়েও কোনও সরকারি বার্তা সিপিএমের তরফে আসেনি। তবে অতিসম্প্রতি প্যারডি যে ভাবে বঙ্গ জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে, তাতে ‘টুম্পা ব্রিগেড চল’ নিয়ে পক্ষ অবলম্বনে কার্যত সন্দিহান বাম ব্রিগেড।