Vegetables Price: ‘নেতারা তো মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কথা বলবেন, কারণ তাতেও রাজনীতি, সবটাই আইওয়াশ, বাজারে চলে আপন চক্র’, অগ্নিমূল্য নিয়ে রহস্যভেদে যদুবাবুর বাজারের সবজি বিক্রেতারাই
Vegetables Price: বাজারের বিক্রেতারাই বলছেন, আগে তাঁরা যে পরিমাণ পেঁয়াজ কিনতেন, এখন তার থেকে অনেকটাই কম কিনছেন তাঁরা। কবে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রেতারা। তেমনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আলুর দামও। কলকাতার বাজার গুলোতে জ্যোতি আলুর দাম ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা, চন্দ্রমুখী ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
কলকাতা: মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই সার! টাস্ক ফোর্সের অভিযান, বাজার পরিদর্শন, সবজির দাম কমাতে কড়া পদক্ষেপ, সাত দিন অন্তর প্রশাসনিক বৈঠক- সবই হয়েছে। কিন্তু তারপরও বদলায়নি পরিস্থিতি। কলকাতা থেকে জেলা- প্রায় সর্বত্র অগ্নিমূল্য বাজার। পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে বাজার গেলে ভর্তি হচ্ছে অর্ধেকের কম ব্যাগ, অতঃপর শূন্য পকেট! মধ্যবিত্ত নিম্ন মধ্যবিত্তদের বাজারের জন্য মাসিক খরচই বাড়ছে দ্বিগুণ! ক্রেতা থেকে বিক্রেতা, সকলেই বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর এক ফোঁটাও বদলায়নি পরিস্থিতি। কোথাও ন্যূনতম কমেনি দাম। দাম যে কমেনি, কমার আশাও নেই, সে কথাও বলছেন বিক্রেতারাই। কিন্তু কেন?
কেউ বলছেন, জোগান কম, তাই চাহিদা বেশি, দাম বেশি। কেউ দিচ্ছেন অন্য তত্ত্ব। কিন্তু যদুবাবুর বাজারে গিয়ে দেখা মিলল এমন এক বিক্রেতার, যিনি খোলাখুলি কথা বললেন। বললেন, “টাস্ক ফোর্স তো আর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে না। বাজার নিয়ন্ত্রিত হয় তার নিজের আপন চক্রে। বাজারি কালো না সাদা, তা নিয়ে কথা বলব না। মাল আসা, প্রাকৃতিক বিপর্যয় অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে। আর রাজনৈতিক নেতারা তো দাম বাড়া নিয়ে সোচ্চার হবেনই। কিন্তু সেটাতেও রাজনীতি। সাধারণ মানুষের কাছে আইওয়াশের একটা ব্যাপার রয়েছে। কিন্তু দামটা কমবে কীভাবে?”
সোমবার, প্রায় সব বাজারে পেঁয়াজ বিকোচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। গত ১৫ দিন ধরেই এই ৫০ টাকা দামে রয়েছে পেঁয়াজের। পেঁয়াজের দাম কবে কমবে? সে বিষয়ে কোনও সদুত্তর দিতে পারছেন না বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের বক্তব্য, বাইরে থেকে পেঁয়াজের যোগান কম হচ্ছে। পাইকারি বাজার থেকে তাঁদের বেশি দামে বিক্রি নিয়ে আসতে হচ্ছে। তাই পেঁয়াজের দামটা বেড়েই রয়েছে।
এক বিক্রেতা বলছেন, “বাইরে থেকে কম আসছে পেঁয়াজ। ৪০-৪৫ টাকায় কিনে আনছি, এনে ৫০ টাকায় বিক্রি করছি। এখন দাম কমার আর কোনও সম্ভাবনাও নেই।” আরেক
বাজারের বিক্রেতাদের বক্তব্য, আগে তাঁরা যে পরিমাণ পেঁয়াজ কিনতেন, এখন তার থেকে অনেকটাই কম কিনছেন তাঁরা। কবে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্রেতারা। তেমনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আলুর দামও। কলকাতার বাজার গুলোতে জ্যোতি আলুর দাম ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা, চন্দ্রমুখী ৩৮ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদেরই বক্তব্য, সরকারি নজরদারি আরও বাড়ানো দরকার। বাজার করতে আসা দিলীপ বোস নামে এক ক্রেতা বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বটে, কিন্তু দাম কিছুই কমে নি। মারাত্মক অসুবিধার মধ্যে রয়েছি। জিনিসপত্র কম নিয়ে যাচ্ছি বাড়িতে। কিন্তু বেশি লোকের সংসার। সে সবজি তো ফুরাচ্ছে তাড়াতাড়ি।”
এক নজরে কলকাতার বাজারের শাকসবজির দাম
পটল ৪০ টাকা কেজি
টমেটো ১০০ টাকা কেজি
করলা ৫০ টাকা কেজি
শসা ৫০ টাকা কেজি
ভেন্ডি ৫০ টাকা কেজি
বেগুন ৬০ টাকা কেজি
কাঁচা লঙ্কা ১২০ টাকা কেজি
ঝিঙে ৫০ টাকা কেজি
পেঁপে ৪০ টাকা কেজি
বিনস ১৫০ টাকা কেজি
বাজারের আগুন কোনওভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। ক্রেতারা বলছেন, টাস্কফোর্সের আধিকারিকরা প্রতিনিয়ত বাজারে ঘোরাঘুরি করছেন। হৃদয়পুর বাজারে গত ১ সপ্তাহে চারবার এসেছেন। জিনিসের দাম যা ছিল তাই রয়েছে। বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। বিশেষ করে আধিকারিকরা যখন থাকছেন তখন জিনিসের দাম কমলেও, তারা চলে গেলে জিনিসের দাম বেড়ে যাচ্ছে।