CBI: নিয়োগ দুর্নীতিতে CBI স্ক্যানারে মন্ত্রী-সহ ৮৬ জনপ্রতিনিধি, রয়েছেন কলকাতারই ১৩ জন : সূত্র
CBI: ১০ মার্চ দিল্লিতে বৈঠকে বসছে সিবিআই। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এটি মূলত রিভিউ বৈঠক।
কলকাতা: অনুব্রত মণ্ডলকে নিয়ে ইডি যখন দিল্লি যাওয়ার প্রহর গুনছে, তখন সামনে এল আরেক এক বিস্ফোরক তথ্য। দুর্নীতি নিয়ে এবার আরও বড় অভিযানে নামছে সিবিআই (CBI)। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, এবার সিবিআইয়ের স্ক্যানারে ৮৬ জনপ্রতিনিধি। রয়েছেন কাউন্সিলর থেকে মন্ত্রী কিংবা জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত স্তরের সদস্য। এরমধ্যে ১৩ জন কাউন্সিলর কলকাতা পুরনিগমের বলেও সূত্রের খবর। সূত্রের দাবি, একজন মন্ত্রীও রয়েছেন সিবিআইয়ের আতস কাচের তলায়। এই কাউন্সিলরদের সম্পত্তির তথ্য সিবিআইয়ের হাতে এসে পৌঁছেছে। ১০ মার্চ দিল্লিতে বৈঠকে বসছে সিবিআই। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এটি মূলত রিভিউ বৈঠক। সেখানে এই কাউন্সিলরদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এই নয়া তদন্তে ঝাঁপানোর আগে কোনও রকম কোনও ফাঁক সিবিআই রাখতে চাইছে না।
নিয়োগ ‘দুর্নীতি’র তদন্তে নেমে প্রথম থেকেই ইডি, সিবিআই দাবি করেছে, এই জাল গোটা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় গ্রেফতার হয়েছেন। এরপরই একে একে গ্রেফতার হয়েছে মিডলম্যানরা। কিন্তু তার বাইরেও এখনও আরও অনেক নামই রয়েছে বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি। সেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের প্রভাবশালীরাও রয়েছেন। তাঁরা সকলে নেতা-মন্ত্রী এমন নন, তবে স্থানীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাবশালী। সূত্রের দাবি, এরকম একাধিক নাম উঠে এসেছে। তাঁদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, একটা অংশ ‘কাউন্সিলর’ বা ‘কর্পোরেটর’।
এমনকী পুরএলাকার প্রভাবশালীই নন, নজরে জেলা পরিষদ বা গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরের নেতৃত্বও সিবিআইয়ের কাছে ‘কর্পোরেটর’। অর্থাৎ তাঁরা স্থানীয় এলাকায় রাজনৈতিকভাবে যথেষ্ট প্রভাবশালী। তাঁদের মাধ্যমে টাকার লেনদেন হয়েছে বলে সিবিআইয়ের বক্তব্য। কোন কোন ক্ষেত্রে দুর্নীতি? সিবিআই সূত্রে খবর, শিক্ষক নিয়োগ থেকে গ্রুপ সি বা গ্রুপ ডি, স্থানীয় পর্যায়ে এই ‘প্রভাবশালী’দের ভূমিকা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে শিক্ষা দুর্নীতি মামলাতেই এই সিবিআই অভিযান হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর।
কীভাবে উঠে এল এই ‘কর্পোরেটর’দের নাম? মূলত যাঁরা চাকরি হারিয়েছেন আদালতের নির্দেশে বা চাকরি প্রশ্নের মুখে পড়ায় সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, তাঁদের কাছ থেকেই এই নামগুলি উঠে আসে বলে সূত্রের খবর। এরপরই তালিকা ধরে ধরে খোঁজখবর শুরু করে সিবিআই।
সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ তারিখ দিল্লিতে রিভিউ মিটিংয়ের পরই সিবিআই তাদের জাল প্রথমে কত দূর ছাড়বে তা সামনে আসবে। কারণ, একবারে সবাইকে ডেকে নিলে তদন্তের গতি নিয়ে আবারও প্রশ্নের মুখে পড়তে হতে পারে তাদের। ইতিমধ্যেই একাধিকবার আদালত সিবিআইয়ের তদন্তের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
এ নিয়ে বিজেপির বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল বলেন, “রাঘব বোয়াল, ধেড়ে ইঁদুর, কুন্তলের মতো ছোট নেতা সবই আজ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন দুর্নীতিতে যুক্ত। আদালতের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে, অন্তত এটুকু স্বস্তি পাব, দোষীদের ধরা হল। তবে মাথাকেও কিন্তু ধরতে হবে।” যদিও তৃণমূলের সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে, বিজেপি-বিরোধী রাজ্যগুলিতে এসব চলবে।