করোনা আক্রান্ত হলে নিজেকে আইসোলেশনে রাখবেন কোন দিন থেকে, কবেই বা ছাড়া পাবেন?

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বান দলুইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপসর্গ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া উচিত।

করোনা আক্রান্ত হলে নিজেকে আইসোলেশনে রাখবেন কোন দিন থেকে, কবেই বা ছাড়া পাবেন?
গ্রাফিক্স- অভীক দেবনাথ
Follow Us:
| Updated on: Apr 13, 2021 | 5:57 PM

কলকাতা: করোনা (COVID) সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে ভারতে। সেই ঢেউয়ে ভাসছে পশ্চিমবঙ্গও। গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫১১ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ২ হাজার ৫৫০ জন। অফিসে, পাড়ায় তো বটেই অনেকের পরিচিতও করোনা আক্রান্ত। এমতাবস্থায় সংস্পর্শে থাকা ব্যক্তিদের হোম আইসোলেশনে যেতে হচ্ছে। হোম আইসোলেশনে থাকতে হচ্ছে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকেও। তাই জানা প্রয়োজন আইসোলেশনের সঠিক নিয়ম। ধরুন আপনার করোনা সংক্রমণের উপসর্গ দেখা দিল, তৎক্ষণাৎ আপনার কী করা উচিত?

এ বিষয়ে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বান দলুইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, উপসর্গ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া উচিত। আইসোলেশনে যাওয়ার পর চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা উচিৎ। এ ছাড়া রাজ্য সরকারের টেলিমেডিসিন নম্বরেও ফোন করলে সাহায্য পাওয়া যাবে। কিন্তু আইসোলেশনের সঠিক নিয়ম কী? কতদিন থাকতে হয় আইসোলেশনে? এ বিষয়ে অনির্বান দলুই জানিয়েছেন, উপসর্গ দেখা দেওয়ার দিন থেকে ১৭ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনটি পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারেন আপনি।

প্রথমত, ধরুন আপনার ৩০ তারিখ উপসর্গ দেখা দিল তার ঠিক ২ (ক্ষেত্র বিশেষে ৩-৪-৫… হতে পারে) দিন পরে ১ তারিখ আপনার করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এল। সে ক্ষেত্রে আপনার আইসোলেশন শুরু হবে ৩০ তারিখ থেকে এবং আপনাকে পরবর্তী ১৭ দিন আইসোলেশনে থাকতে হবে।

দ্বিতীয়ত, আপনার কোনও উপসর্গ নেই কিন্তু ১ তারিখ করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এল। সে ক্ষেত্রে ১ তারিখ থেকেই আপনার আইসোলেশন শুরু হবে যা শেষ হবে ১৭ দিন পর অর্থাৎ ১৮ তারিখ।

তৃতীয়ত, ধরুন আপনার কোনও উপসর্গ নেই কিন্তু করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এল মাসের পয়লা তারিখে। এরপর আপনার উপসর্গ দেখা দিল দু’দিন পর (৩,৪,৫… দিনও হতে পারে) অর্থাৎ ৩ তারিখ। এক্ষেত্রে আপনার আইসোলেশন শুরু হবে পয়লা তারিখ থেকেই কিন্তু শেষ হবে উপসর্গ দেখা দেওয়ার ১৭ দিন পর অর্থাৎ ২০ তারিখ।

আইসিএমআরের নির্দেশিকা মেনে ১৭ দিনের আইসোলেশন জারি রয়েছে রাজ্যে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আন্তর্জাতিক নিয়মে ১০ দিনের আইসোলেশনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এবং যাতে করোনা সংক্রমণে রাশ টানা যায় তাই ১৭ দিনের আইসোলেশনের নির্দেশ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সেই নিয়ম মেনে চলুন। দেশে যখন প্রথম করোনা সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল তখন মূলত বয়স্করা করোনা আক্রান্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু এই দ্বিতীয় ঢেউয়ে বয়স নির্বিশেষে প্রত্যেকে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। তরুণদের মধ্যে মাস্ক ও করোনাবিধি মেনে চলায় অনীহা থাকায় তাঁরা সংক্রমণের শিকার হচ্ছেন। তাই চিকিৎসকদের পরামর্শ সম্পূর্ণ করোনা বিধি মেনে চলুন, মাস্ক পরুন।

আরও পড়ুন: ‘কোভিশিল্ডের মতো অত কম নয়’, কত দাম হবে তৃতীয় ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি-এর?