Lakshmi Puja 2022: কোজাগরী পূর্ণিমায় কাকে পুজো করলেন? দেবী লক্ষ্মীর আর্বিভাব নিয়ে পৌরাণিক কাহিনি
History of Devi Lakshmi: কর্মফলই আসল ধর্ম। ধনদেবী হলেও লক্ষ্মীকে পেতে হলে করতে হবে কঠিন পরিশ্রম। কর্মের উপরই সবকিছু নির্ভর করছে। ধনের চেষ্টায় কর্ম না করলে মহালক্ষ্মীর আশীর্বাদ বর্ষণ হয় না।
সারারাত জেগে লক্ষ্মী বন্দনায় (Lakshmi Puja 2022) মেতেছেন আপামর বাঙালি। সৌন্দর্য ও ধনসম্পত্তির দেবীর (Devi Lakshmi) আরাধনা করলে গৃহে সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি বৃদ্ধি পায়। ধনদেবীর যেমন সুনাম ও জনপ্রিয়তা, তেমনি বদনামও রয়েছে। কারণ লক্ষ্মী স্বভাবে চঞ্চলা। কোনও একটি জায়গা স্থির ও স্থায়ী হয়ে থাকেন না। তবে ভক্তদের বিশ্বাস, সঠিক পদ্ধতি মেনে দেবী বন্দনা করলে তিনি প্রসন্ন হোন ও স্থায়ীভাবে ঘরে বাস করেন। কিন্ত দেবী লক্ষ্মী কে? কোথায় তাঁর আবির্ভাব, কেন তাঁর পুজো করা এত মঙ্গলের, এগুলি নিয়ে পুরাণ ও জ্যোতিষশাস্ত্রে নানা পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে। লক্ষ্মীর দেবী কি সত্যিই শিব-পার্বতীর কন্যা নাকি নারায়ণের স্ত্রী, এই নিয়েও রয়েছে পুরাণ চর্চা।
কর্মফলই আসল ধর্ম। ধনদেবী হলেও লক্ষ্মীকে পেতে হলে করতে হবে কঠিন পরিশ্রম। কর্মের উপরই সবকিছু নির্ভর করছে। ধনের চেষ্টায় কর্ম না করলে মহালক্ষ্মীর আশীর্বাদ বর্ষণ হয় না। তাই ভক্তদের আচরণ হতে হবে সত্, পরিশ্রমী ও প্রতিভাশালী। দেবী লক্ষ্মীর আসল পরিচয় কী, তা জানুন…
দুর্গাপুজোর পরই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। অনেকের ধারণা, দেবী দুর্গার কন্যা লক্ষ্মী বাড়ি ফিরে ফের মর্তে নেমে আসেন। কিন্তু মজার কথা হল দেবী লক্ষ্মী আদতে শিব-পার্বতীর মেয়ে নন। পুরাণ অনুযায়ী, দেবী লক্ষ্মীর আবির্ভাব নিয়ে তেমন কিছু উল্লেখ নেই। কারণ সেখানে শুধু নারায়ণের সঙ্গে লক্ষ্মীর বিয়ে হয়েছিল ও নারায়ণের স্ত্রী এইভাবে বর্ণিত হয়েছে। এমনকি পুরাণের পাতায় লক্ষ্মীর জন্মবৃত্তান্ত একলাইনেই সেরে ফেলেছিলেন ব্যাসদেব। তবে বিষ্ণু পুরাণ, গরুর পুরাণ ও বায়ু পুরাণ অনুযায়ী লক্ষ্মীর আর্বিভাব ও তাঁর নানা রূপের তথ্য সম্পর্কে জানতে পারি।
লক্ষ্মীর জন্ম
বিষ্ণু পুরাণকালে ভৃগু নামে এক ঋষির স্ত্রী ছিলেন খ্যাতি। তাদের কন্যাসন্তান হিসেবে জন্ম নেন দেবী লক্ষ্মী। লক্ষ্মীর দুই ভাই ছিলেন ধাতা ও বিধাতা। এছাড়া প্রাচীন পুরাণে বলা হয়েছে স্বর্গের বৈকুন্ঠলোকে লক্ষ্মীর বাস। তিনি নারায়ণের স্ত্রী। স্বর্গের সব সুখ, ধন-সম্পত্তি ও পরাক্রম হওয়ার পিছনে রয়েছে লক্ষ্মীর হাত। তবে আরও একটি পৌরাণিক কাহিনি রয়েছে লক্ষ্মীর আর্বিভাব ঘিরে।
একদিন বিশিষ্ট মুনি দুর্বাসা তাঁর নিজের বরপ্রাপ্ত পারিজাত মালা দেবরাজ ইন্দ্রকে প্রদান করলে ইন্দ্র সেই মালার গুরুত্ব পরখ করতে ব্যর্থ হোন। পরবর্তী সময় তিনি সেই মালা বাহন ঐরাবতকে পরিয়ে দেন। ঐরাবতও সেই মালা শুঁড়ে করে মাটিতে ফেলে পদপিষ্ট করে ফেলে। বরপ্রাপ্ত মালার এমন অবস্থা দেখে প্রচণ্ড রেগে যান দুর্বাসা। সেই মুহূর্তে ইন্দ্রকে অভিশাপ দিয়ে দুর্বাসা বলে বসেন, ইন্দ্রের এই কাজের জন্য তাঁর তিনলোক লক্ষ্মীছাড়া থাকবেন। এই অভিশাপের বাণী শুনে লক্ষ্মী দেবলোক পরিত্যাগ করে পাতাললোকে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। কিন্তু সমুদ্র মন্থনের সময় সমুদ্রগর্ভ থেকে ফের লক্ষ্মীর আর্বিভাব হয়।
অন্য এক পুরাণে বলা হয়েছে, দেবসেনাপতি কার্তিকের পত্নী হলেন দেবী লক্ষ্মী। শাস্ত্রমতে বিষ্ণু যক বামন রূপে পৃথিবীতে অবতার রূপে প্রকাশ করেন তখন দেবী লক্ষ্মী লাল পদ্ম থেকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রামায়ণে রামের স্ত্রী সীতাকে লক্ষ্মীর আরেক রূপ হিসেবে বর্ণিত করা হয়েছে। আবার শ্রীকৃষ্ণ রূপে বিষ্ণু ফের অবতার রূপে মর্তে আগমন করেন, তখন তাঁর স্ত্রী হিসেবে রুক্মিণী লক্ষ্মী রূপ নিয়ে আর্বিভূত হয়েছিলেন।