Ambubachi 2023 Date: কবে শুরু অম্বুবাচী? তিনদিন কামাখ্যা মন্দিরের দরজা বন্ধ থাকার কারণ জানেন না ৯৯ শতাংশ
Kamakhya Temple: কামাখ্যা মন্দিরে আয়োজিত এই মেলার সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু অলৌকিক ও আকর্ষণীয় বিষয়, যা সকলকে অবাক করে তুলতে পারে। এ বছর কবে হবে অম্বুবাচী ও এর গুরুত্ব কী, তা বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
অম্বুবাচী হিন্দুধর্মে গুরুত্বপূর্ণ কথা। সংস্কৃত শব্দ অম্ব ও বাচি থেকে এসেছে। অম্ব শব্দের অর্থ হল জল ও বাচির অর্থ বৃদ্ধি। পুরো কথার অর্থ হল, গ্রীষ্মের প্রখর তাপপ্রবাহের পর বর্ষার আগমেন গোটা ধরিত্রী সিক্ত হয়। ফের প্রজননের যোগ্য ওঠার সময়কালকেই বলা হয় অম্বুবাচী। এই সময়কালে পৃথিবী ঋতুমতী হয় বলে মনে করা হয়। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রে ৫১টি শক্তিপীঠের কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি শক্তিপীঠের নিজস্ব বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।
অসমের গুয়াহাটি শহরে অবস্থিত কামাখ্যা দেবী মন্দিরটিও একান্ন শক্তিপীঠের মধ্যে অন্যতম। প্রতি বছর অম্বুবাচীর সময় এই মন্দিরে অম্বুবাচী মেলা অনুষ্ঠিত হয়। অসমেই নয়, গোটা বিশ্বেই এই সময়কালটি খুব বিখ্যাত। এ মেলায় বিপুল সংখ্যক ভক্তের সমাগম হয়। কামাখ্যা মন্দিরে আয়োজিত এই মেলার সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু অলৌকিক ও আকর্ষণীয় বিষয়, যা সকলকে অবাক করে তুলতে পারে। এ বছর কবে হবে অম্বুবাচী ও এর গুরুত্ব কী, তা বিস্তারিত আলোচনা করা হল।
কবে শুরু হবে অম্বুবাচীর মেলা
জ্যতিষমতে, সূর্যদেব আষাঢ় মাসে মিথুন রাশিতে আদ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদে গমন করে. সেই সময়কালটিকে বলা হয় অম্বুবাচী কাল। এ বছর ২২ জুন শুরু হয় হতে চলেছে। শেষ হবে ২৬ জুন পর্যন্ত। এই সময় মন্দিরের দরজা তিনদিনের জন্য বন্ধ থাকে। সাধারণত এদিন থেকে দেবীকে বিশেষভাবে যত্ন করে রাখা হয়। কারণ এই সময় দেবীকে অশুচি বলে মনে করা হয়। তাই প্রত্যেক দেবীর মন্দিরে কাপড় দিয়ে মাতৃবিগ্রহ ঢেকে রাখার প্রচলন রয়েছে। অনেকে এই সময় দেবীর নিত্যসেবাও স্থগিত করে রেখে দেন। হিন্দুধর্ম মতে, এই সময় কালে দেবী যোগনিদ্রায় মগ্ন থাকেন। একান্তে নির্জন বাস করার ব্যবস্থা করা হয়। এই কারণে ভক্তরা কামাখ্যা মন্দিরের দেবীকে দেখার অনুমতি পান না। আগামী ২২ জুন, মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনদিন পর. কামাখ্যা দেবীকে স্নান করে শুদ্ধ করে সাজিয়ে তোলা হয়। এরপরেই ভক্তদের জন্য দেবীদর্শনের দরজা খুলে দেওয়া হয়।
গুরুত্ব
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, অম্বুবাচীর মেলার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দুমতে, এই সময় দেবী কামাখ্যা রজঃস্বলা বা ঋতুস্রাবে অবস্থায় থাকেন। কথিত আছে, যখন দেবী এই দিন থেকে ঋতুস্রাব শুরু হয়, সেইদিন থেকে গর্ভগৃহের দরজা আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। এই সময়ে কাউকে ভিতরে গিয়ে দর্শন করতে দেওয়া হয় না। রজঃস্বলা শেষে দেবীকে স্নান করিয়ে, সাজিয়ে তারপর মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়ার রীতি রয়েছে। কথিত আছে অম্বুবাচী মেলার চতুর্থ দিনে দেবী কামাখ্যা দর্শন করলে ভক্তরা সকল প্রকার পাপ থেকে মুক্তি লাভ করেন। দেওয়া হয় বিশেষ ধরনের প্রসাদও।
মন্দিরে কোনও মূর্তি নেই, কেন?
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, দেবী সতীর যোনি কামাখ্যা মন্দিরে পড়েছিল, আর তাই দেবীর কোনও মূর্তি নেই। বরং এই মন্দিরে রয়েছে একটি কুণ্ড, যেটি সর্বদা ফুল দিয়ে ঢাকা থাকে। অম্বুবাচীর সময়কালকে দেবী কামাখ্যার মাসিক শুরু হয়। সেই সময় কুণ্ডটি সাদা রঙের কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর যখন মন্দির বন্ধ থাকে তখন সাদা কাপড় দেওয়া থাকে। হিন্দু ধর্মমতে, মন্দির খুলে দেওয়ার পর এই কাপড় লাল হয়ে যায় বলে মনে করা হয়।