Kali Puja 2023: কালীর বাহন কী? পুরাণ ও তন্ত্রমতে এর গুরুত্ব কোথায়, জানুন
Mythology: সাধারণত শিয়াল রাতের অন্ধকারে শ্মশানে শ্মশানে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। রাতের দিকে গ্রামাঞ্চলে শিয়ালের ব্যপক উপদ্রব ছিল। একটি শিয়াল ডাক দিলেই পর পর একদল শিয়াল ডাকতে শুরু করে। গোটা পরিবেশ স্তব্ধ ও গা ছমছমে হয়ে উঠত বাড়ির বাইরে পা রাখার সাহস কেউ করতেন না।
পুরাণ অনুসারে, দেবী মহামায়ার রুদ্র ও ভয়ঙ্কর রূপই হল দেবী কালী। দেবী মাহামায়ার দশমহাবিদ্যা রূপের প্রথম রূপটিই হলেন এই দেবী কালী। শক্তি-উপাসনার প্রধান আরাধ্য দেবীকেই বাঙালি নিজ কন্যা রূপে পুজো করে থাকেন। আমরা সাধারণত কালীর যে রূপ দেখি তা হল, শিবের বুকের উপর পা দিয়ে খড়গ হস্তে দাড়িয়ে রয়েছেন কালী। চার হাতের একটিতে কাটা নরমুণ্ড, একটি খড়গ, অপর দুটি হাত আশীর্বাদ দিচ্ছেন। বরাভয় করছেন। পাশে থাকে কালীর বাহন শিয়াল, যে কিনা দেবীর হাতে ধরা নরমুণ্ড থেকে ঝড়ে পড়া রক্ত পান করছে। এছাড়া দেবীর গায়ে থাকে নরমুণ্ডের মালা, এলোকেশী, বিরাট জিভ দেখা যায়। শাক্ত বাঙালির কাছে কালী হলেন করালবদনী। কালীর একটি রূপকেই পুজো করা হয়, তেমনটা মোটেই নয়। রয়েছে নানা রূপ। কোথাও শান্তি, কোথাও অষ্টরূপী, কোথাও আবার রুদ্র ও ভয়ঙ্কর রূপে, কোথাও ধ্য়ানময়ী রূপে দেখা যায়।
কালীর বাহন শিয়াল কেন?
প্রাচীন কালে বিভিন্ন ছবি ও মূর্তিতে কালীর নিচে বা পিছনে শিয়ালের ছবি স্পষ্ট। দেবীর পদতলে শিয়াল বা শৃগাল হল একটি সুপ্রাচীন অবস্থান। সাধারণত শিয়াল রাতের অন্ধকারে শ্মশানে শ্মশানে খাবারের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। রাতের দিকে গ্রামাঞ্চলে শিয়ালের ব্যপক উপদ্রব ছিল। একটি শিয়াল ডাক দিলেই পর পর একদল শিয়াল ডাকতে শুরু করে। গোটা পরিবেশ স্তব্ধ ও গা ছমছমে হয়ে উঠত বাড়ির বাইরে পা রাখার সাহস কেউ করতেন না। বর্তমানে এমন দৃশ্যে আর বিদ্য়মান নয়। শ্মশানকালীর মূর্তিতেই শিয়ালের উপস্থিতি বেশি করে দেখা যায়। তন্ত্রমতে,শ্মশানসাধনায় তাই শিয়য়ালের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া আগেকার দিনে গ্রামাঞ্চলে প্রচুর শিয়ালের দেখা পাওয়া যেত। রাতের অন্ধকারে রৃহপালিত পশু, মানবশিশুদের উপর হামলা করার ঘটনা প্রায়ই ঘটত। প্রাণীটি বিপন্ন হলেও ধুরন্ধর বুদ্ধিমান এই প্রাণী ছিল বেশ ভয়ঙ্কর। বাস্তুতন্ত্রে ভাসাম্য বজায় রাখতে এই প্রাণীর ছিল অন্যতম ভূমিকা।
বিষ্ণুপুরাণেও দেবী কালীর বাহন হিসেবে শিয়ালের কথা উল্লেখ রয়েছে। সখানে বলা হয়েছে, বাসুদেব যখন গোকূলে যাওয়ার জন্য সমুনা নদী পার করছিলেন, তখন পথনির্দেশের জন্য শিয়ালরূপেই দেবী কালী আবিভূর্তা হয়েছিলেন। শিয়ালের বুদ্ধিদীপ্ত, সন্তানস্নেহও বজায় রয়েছে।