Hindu Temple: হিন্দু মন্দিরে প্রবেশের আগে ঘণ্টা কেন বাজানো হয়? এর পেছনে রয়েছে যুক্তিযুক্ত কারণ
Ringing the Bell: ভারতে আপনি মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গীর্জা, সব ধরনের ধর্মীয় স্থান পাবেন। প্রতিটি ধর্মীয় স্থানের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে, তবে এই স্থানগুলিতে যাওয়ার সময় সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয়।
খুঁজলে হয়তো এমন মন্দির (Hindu Temple) পাওয়া যাবে, যেখানে কোনও দেবতার মূর্তি নেই। কিন্তু খুঁজলে হয়তো ঘণ্টাহীন মন্দির (Bellless Temple) খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। ভারতে এমন কোনও মন্দির নেই যার দরজায় ঘণ্টা ঝোলানো থাকে না। ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশের সময়ে এই ঘণ্টা বাজান। মনের অজান্তেই ঘটে যায় এমনটা।
ভারতে আপনি মন্দির, মসজিদ, গুরুদ্বার, গীর্জা, সব ধরনের ধর্মীয় স্থান পাবেন। প্রতিটি ধর্মীয় স্থানের নিজস্ব নিয়ম রয়েছে, তবে এই স্থানগুলিতে যাওয়ার সময় সমস্ত নিয়ম মেনে চলতে হয়। একদিকে যেখানে গুরুদ্বারে মাথায় কাপড় রাখতে বলা হয়, অন্যদিকে অনেক জায়গায় শান্তি বজায় রাখতে বলা হয়। মন্দিরের কথা যদি বলা হয়, তাহলে আপনি নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে মন্দিরে প্রবেশের আগে আপনি প্রথমে ঘণ্টা বাজান বা যখনই বাড়িতে পুজো বা আরতি করা হয়, তখন আমরা অবশ্যই ঘণ্টা বাজাই। এই ঘণ্টা বাজানোর পিছনে বৈজ্ঞানিক এবং ধর্মীয় উভয় কারণ রয়েছে।
আধ্যাত্মিক কারণ
– তামা, রূপা, সোনা, দস্তা ও লোহা— এই পঞ্চ ধাতুতে তৈরি ঘণ্টা পঞ্চভূতের প্রতীক।
– ভক্তের উচ্চারিত ‘ওঁ’ ধ্বনির সঙ্গে রণন তোলে ঘণ্টাধ্বনি। এতে সৃষ্ট হয় বিশেষ এক ভাব, যা একান্তভাবেই আধ্যাত্মশক্তির উন্মেষ ঘটায়।
– মনে করা হয়, ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করলে, মন্দিরে উপস্থিত দেবতার অনুমতি চাইতে বা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য একটি ঘণ্টা বাজানো হয়।
– অনেক সময় মন্দিরের দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন, এমন অবস্থায় প্রথমে ঘণ্টা বাজিয়ে তাদের জাগিয়ে পূজা করা উচিত।
– দেবতাদের খুশির জন্য ঘণ্টাও বাজানো হয়। কথিত আছে দেবতারা ঘণ্টা ও শঙ্খের ধ্বনি পছন্দ করেন। ঘণ্টার শব্দে দেবতারা খুশি হন এবং ভক্তদের উপর তাদের আশীর্বাদ বর্ষণ করেন। এই কারণেই মন্দিরে ঘণ্টা বাজানো হয়।
– আরতি সময়েও ঘণ্টা বাজানো হয়। মনে করা হয়, ঘণ্টাধ্বনি অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে। এছাড়াও আরও একটি বিষয় রয়েছে। মনে করা হয়, ঘণ্টাধ্বনি এই সময়ে ভক্তের চিত্তকে একাগ্র করে। পাশাপাশি, আরতির সময় ঘণ্টাধ্বনি করে দূরবর্তী ভক্তকেও সচেতন করা হয়।
– ‘স্কন্দ পুরাণ’ অনুসারে, মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি মানুষের শতজন্মের পাপস্খালন করে।
– শাস্ত্র অনুযায়ী, ঘণ্টা কাল-এর প্রতীক। যুগান্তের সময়ে নাকি শত সহস্র ঘণ্টা ধ্বনিত হবে।
বৈজ্ঞানিক কারণ
– বিজ্ঞানীরা বলছেন যে ঘণ্টা বাজানোর ফলে পরিবেশে একটি কম্পন সৃষ্টি হয়। এই কম্পন বায়ুমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, এই ধরনের অণুজীব ইত্যাদি ধ্বংস হয়ে যায় এবং বায়ুমণ্ডল বিশুদ্ধ হয়। তাতে সর্বত্র ইতিবাচক পরিবেশ বিরাজ করে।
– যে সমস্ত জায়গায় নিয়মিত ঘণ্টা বাজায়, সেখানে ইতিবাচক শক্তির যোগাযোগ হয় এবং নেতিবাচকতা দূর হয়। এর পাশাপাশি ঘণ্টার আওয়াজ মানুষের মন ও মনের ওপর খুব গভীর প্রভাব ফেলে।
– মানসিক চাপকে অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। এই কারণে, লোকেরা বাড়ির দরজা-জানালায় উইন্ডচাইমও স্থাপন করে, যাতে এর শব্দ থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর হয় এবং ইতিবাচক শক্তি ঘরে প্রবেশ করতে পারে।