National Games: ৩৬ ঘণ্টার যন্ত্রণার যাত্রা বাংলার অ্যাথলিটদের, চলছে দায় ঠেলাঠেলির পালা
জাতীয় গেমসের ২ মাস আগে দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কয়েকটা প্রশ্ন উঠছে। যেমন, এক, ট্রেনের আসন বুকিং কনফার্ম না হলে, অ্যাথলিটদের বিমানে করে কি পাঠানো যেত না? দুই, প্লেয়ারদের নাম শর্টলিস্ট করে কেন তাঁদের ঠিকমতো জাতীয় গেমসে খেলতে পাঠানো হল না?
কলকাতা: জাতীয় গেমস খেলতে গিয়ে চূড়ান্ত অব্যবস্থার শিকার বাংলার খো-খো আর মহিলা ফুটবল দল। আজ, মঙ্গলবার উত্তরাখণ্ডে শুরু হচ্ছে ৩৮তম জাতীয় গেমস। বাংলার খো-খো ও মহিলা ফুটবল টিমের মোট ৩৬ জন প্লেয়ার সেখানে অংশ নেওয়ার জন্য উত্তরাখণ্ডে গিয়েছেন। সেখানে ৩৬জন অ্যাথলিটের জন্য মাত্র ৬টি আসন রিজার্ভ করা হয়েছিল। জাতীয় গেমসে পদক জিতলেই সরকারি চাকরি সুনিশ্চিত। কয়েকদিন আগেই ঘটা করে ঘোষণা করেছিল বেঙ্গল অলিম্পিক সংস্থা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন ক্রীড়া দফতরের আধিকারিকের। যে অ্যাথলিটদের কয়েকদিন আগে সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হল, তাঁদের জাতীয় গেমস খেলতে যাওয়ার পথে এমন যন্ত্রণা সইতে হবে, তা হয়তো তাঁদের কল্পনার বাইরে ছিল। এই পরিস্থিতিতে কে নেবে দায়? যে কারণে চলছে দায় ঠেলাঠেলির পালা।
BOA এর দাবি তাদের খো-খো সংস্থা ও আইএফকে দায় দিচ্ছে। বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তাদের কেন আগে জানানো হয়নি যে অ্যাথলিটদের রেলের সিট নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। নির্দিষ্ট সংস্থা আগে থেকে জানালে টিকিট রিজার্ভ করা যেত। উল্লেখ্য, বাঘ এক্সপ্রেসে শনিবার হাওড়া থেকে বাংলার এই অ্যাথলিটরা রওনা দেন। পুরো ৩৬ ঘণ্টার ট্রেন সফরে নানা সমস্যায় পড়েন বাংলার অ্যাথলিটরা। যে কারণে একটা সিটে কখনও তিন অ্যাথলিট শুয়ে কাটিয়েছেন। বেশিরভাগ ক্রীড়াবিদ ট্রেনের মেঝেতে শুয়ে উত্তরখণ্ডে পৌঁছেছেন।
বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, তাদের আগে জানানো হলে রেলের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে ট্রেনে আসন রিজার্ভ নিয়ে সমস্যার সমাধান করে দিতে পারত বিওএ। অন্যদিকে IFA ও খো খো সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, যেহেতু জাতীয় গেমসে বাংলার অ্যাথলিটরা যাচ্ছেন, তাই বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারাদের উচিত ছিল বিষয়টা নিয়ে নজর দেওয়া। আইএফএ ও খো খো সংস্থার কর্তারা জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রে টাকা দেওয়ার পর আর কোনও বিষয়ে মাথা ঘামায় না বিওএ।
IFA সচিব অনির্বাণ দত্ত বলেছেন, ‘যেহেতু ন্যাশনাল গেমস, তাই কেন্দ্র সরকারেরও এক্ষেত্রে একটা ভূমিকা থাকে। যে কোন কোন রাজ্য থেকে কীভাবে প্লেয়াররা জাতীয় গেমসে খেলতে যাচ্ছেন, তাঁদের সফরের জন্য ট্রেনের টিকিট, রেলের আসন ঠিক মতো রিজার্ভ হয়েছে কিনা, তা দেখার একটা দায়িত্ব কেন্দ্র সরকারেরও রয়েছে। আমার মনে হয় তাঁদেরও একটা দায়িত্ব নেওয়া উচিত ছিল। একইসঙ্গে কুম্ভমেলা ছিল বলে ট্রেনের টিকিট পেতে অসুবিধা হয়।’
জাতীয় গেমসের ২ মাস আগে দিনক্ষণ ঘোষণা করা হয়। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই কয়েকটা প্রশ্ন উঠছে। যেমন, এক, ট্রেনের আসন বুকিং কনফার্ম না হলে, অ্যাথলিটদের বিমানে করে কি পাঠানো যেত না? দুই, প্লেয়ারদের নাম শর্টলিস্ট করে কেন তাঁদের ঠিকমতো জাতীয় গেমসে খেলতে পাঠানো হল না? যদি আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হত, তা হলে খেলোয়াড়দের এই ভাবে যন্ত্রণার যাত্রার সম্মুখীন হতে হত না।