Shreyas Iyer IPL 2025 Auction: সব রেকর্ড ভেঙে ইতিহাস, তুমুল লড়াই করে শ্রেয়সকে ছিনিয়ে নিল পঞ্জাব
Shreyas Iyer Auction Price: নাইটদের তৃতীয় আইপিএল ট্রফি এনে দেওয়া ক্যাপ্টেন শ্রেয়সকে নেওয়ার জন্য নিলাম টেবলে লড়াই হল একাধিক টিমের। শেষ পর্যন্ত প্রীতির পঞ্জাব কিংস রেকর্ড টাকায় দলে টেনে নিল শ্রেয়সকে।
কলকাতা: আইপিএলের মেগা নিলামের কয়েকদিন আগে যখন কেকেআরের রিটেনশন তালিকা প্রকাশিত হল, সকলেই অবাক হয়েছিলেন। কারণ একটাই, যে ৬ জন ক্রিকেটারকে রিটেন করেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স, তার মধ্যে ছিল না শ্রেয়স আইয়ারের নাম। এরপর থেকে ভারতীয় ক্রিকেট মহলে আলোচনা শুরু হয়েছিল যে, আইপিএলের মেগা নিলামে শ্রেয়সকে নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। নাইটদের তৃতীয় আইপিএল ট্রফি এনে দেওয়া ক্যাপ্টেন শ্রেয়সকে নেওয়ার জন্য নিলাম টেবলে লড়াই হল একাধিক টিমের।
শ্রেয়স নিলামে উঠতেই প্রথম বিড করে কেকেআর। পরে সরে দাঁড়ায় বিড থেকে। এরপর পঞ্জাব, দিল্লির মধ্যে শ্রেয়সকে নিয়ে লড়াই শুরু হয়। দেখতে দেখতে দর বাড়তে থাকে তাঁর। একটা সময় আইপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার মিচেল স্টার্ককেও ছাপিয়ে যান শ্রেয়স। দিল্লির ইচ্ছে ছিল শ্রেয়সকে টিমে ফেরানোর। কিন্তু শেষ অবধি পঞ্জাবের কাছে থামতে হয় দিল্লিকে। শেষ পর্যন্ত ২৬.৭৫ কোটি টাকায় পঞ্জাব কিংস কিনল শ্রেয়সকে।
আইপিএলের আঙিনায় শ্রেয়স আইয়ার পা রেখেছিলেন ২০১৫ সালে। সে বার নিলাম থেকে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস ২.৬ কোটি টাকায় কিনেছিল মুম্বইয়ের ছেলেকে। সেই মরসুমে দিল্লির জার্সিতে ১৪ ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন শ্রেয়স। তাতে ৪৩৯ রান করে সে বারের আইপিএলের এমার্জিং প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার পুরস্কার পেয়েছিলেন। এই টিমের হয়ে ২০১৮ সাল অবধি খেলেন শ্রেয়স। এরপর দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের নাম বদলে হয় দিল্লি ক্যাপিটালস। দলের নাম বদলে যাওয়ার পর আইপিএলের তিনটে মরসুম দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলেন শ্রেয়স।
২০১৮ সালে গৌতম গম্ভীরের জায়গায় নেতৃত্বের ব্যাটন দিল্লি তুলে দেয় শ্রেয়সের হাতে। তার ঠিক পরের মরসুমে দিল্লিকে প্লে অফে তোলেন তিনি। এরপর ২০২০ সালের আইপিএলে শ্রেয়সের নেতৃত্বাধীন দিল্লি ক্যাপিটালস প্রথম বার আইপিএল ফাইনালে ওঠে। সেখানে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের কাছে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দিল্লিকে।
আইপিএল-২০২১ এর প্রথমার্ধে পিঠের চোটের কারণে খেলা হয়নি শ্রেয়সের। সেই সময় দিল্লি নেতৃত্বের দায়িত্ব তুলে দেয় ঋষভ পন্থের হাতে। শ্রেয়স সুস্থ হয়ে আইপিএলের দ্বিতীয়ার্ধে দিল্লি টিমে ফিরলেও তাঁকে আর নেতৃত্ব ফিরিয়ে দেয়নি দল। এরপর মরসুম শেষ হতেই কেকেআরে চলে যান শ্রেয়স।
৭ বছর দিল্লিতে খেলার পর ২০২২ সালের আইপিএলের আগে নিলামে তাঁকে ১২.২৫ কোটিতে কেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স। তাঁকে ক্যাপ্টেন বানায় নাইটরা। সে বার কেকেআর ৭ নম্বরে মরসুম শেষ করে। শ্রেয়স করেন ৪০১ রান। দলের হয়ে সেই মরসুমে সর্বাধিক রান করেন শ্রেয়স। এরপর ২০২৩ সালের আইপিএলে আবার চোটের কারণে খেলা হয়নি তাঁর। সেই মরসুমে নাইট টিমকে নেতৃত্ব দেন নীতীশ রানা।
২০২৪ সালের আইপিএলের আগে চোট সারিয়ে আবার কলকাতার অধিনায়ক হয়ে ফেরেন শ্রেয়স। আইপিএলের আগে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন মিডল অর্ডারের তারকা ক্রিকেটার। যার ফলে গত মরসুমের আইপিএল তাঁর কাছে একদিকে ছিল নিজেকে প্লেয়ার ও অপরদিকে অধিনায়ক হিসেবে প্রমাণ করার মঞ্চ। তাঁর নেতৃত্বে কেকেআর ১৭তম আইপিএলে টেবল টপার হিসেবে শেষ করে গ্রুপ লিগ। ৯টি জয়, ৩টি হার ও ২টি ম্যাচ অমীমাংসিত হয় শ্রেয়সের নেতৃত্বে। গৌতম গম্ভীরের মেন্টরশিপে এবং শ্রেয়সের নেতৃত্বে নাইটরা ১৭তম আইপিএলে কিস্তিমাত করে।
শ্রেয়স আইয়ার একমাত্র ক্যাপ্টেন যিনি দুটো আলাদা দলকে আইপিএল ফাইনালে তুলেছেন। দিল্লিকে ২০২০ সালে ও কেকেআরকে ২০২৪ সালে। তার মধ্যে গত আইপিএলে তাঁর ক্যাপ্টেন্সিতে কেকেআর আইপিএল জিতেছে। তা সত্ত্বেও নাইট শিবির কেন ছেড়েছেন শ্রেয়স? রিটেনশন তালিকা প্রকাশিত হওয়ার কিছুদিন পর কলকাতা নাইট রাইডার্সের সিইও ভেঙ্কি মাইসোর জানান, আইপিএল রিটেনশন তালিকায় নাইটরা প্রথম প্লেয়ার হিসেবে শ্রেয়সকে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু শ্রেয়স চেয়েছিলেন নিলামে উঠে, নিজের দর বুঝতে। তাই কেকেআর ছাড়েন তিনি। ২০১৫ সাল থেকে এখনও অবধি ১১৬টি আইপিএল ম্যাচ খেলেছেন শ্রেয়স। করেছেন ৩১২৭ রান। রয়েছে ২১টি হাফসেঞ্চুরি।