পদ্মশ্রী পাচ্ছি, শুনে চমকে গিয়েছিলাম: মৌমা দাস
পদ্মশ্রী পাচ্ছেন মৌমা দাস।
কলকাতা: সাফল্য় কম পাননি। স্বীকৃতিও মিলেছে এর আগে। সেই মৌমা দাস এ বার পদ্মশ্রী পাচ্ছেন। সোমবার সন্ধেয় কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই খবর আসতেই খুশির হাওয়া বাংলার টেবিল টেনিস মহলে। আপ্লুত মৌমা ফোনে বললেন, ‘সন্ধে নাগাদ খবরটা পাই। কিছুটা চমকেই গিয়েছিলাম। এত বছর খেলছি। এটা তারই স্বীকৃতি। বিরাট সম্মান।’
খুব অল্প বয়সে টেবিল টেনিসে এসেছিলেন মৌমা। ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক স্তরে পা দেওয়া। তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাননি। দেশের হয়ে সাফল্যও পেয়েছেন প্রচুর। বয়স যত বেড়েছে, ততই যেন বেড়েছে সাফল্যের খিদে। ২০০৪ সালে প্রথম বার অলিম্পিকে অংশগ্রহণ। ১২ বছর পর, আবার সেই মৌমা অলিম্পিক খেলতে যান রিওতে।
এ বার ক্রীড়া ক্ষেত্রে পদ্মশ্রী পাচ্ছেন সাতজন অ্যাথলিট। যাঁর মধ্যে রয়েছেন বক্সার বিজেন্দর সিং, সুধা সিংদের মতো পরিচিত মুখরা। টেবিল টেনিসে এর আগে পদ্মশ্রী রয়েছে একমাত্র শরথ কমলের। মৌমা দ্বিতীয় প্লেয়ার যিনি একই পংক্তিতে ঢুকে পড়লেন। মৌমার বিশ্বাস, ‘আমার এই সাফল্য হয়তো বাংলার নতুন প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করবে। বাংলা থেকে নতুন কোনও মৌমা উঠে আসুক, এটাই আমি চাই।’
আরও পড়ুনঃ-রাজনীতি, বায়োপিক আর না থেমে যাওয়া লিয়েন্ডারের গল্প
২০১৩ সালে অর্জুন পেয়েছিলেন মৌমা। তার পর যেন টেবিল টেনিস বোর্ডে নিজেকে আরও বেশি মেলে ধরেছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে কমনওয়েলথ গেমসে মেয়েদের টিম সোনা জিতেছিল। দেশীয় টিটিতে যা ছিল বিরাট সাফল্য। ওই টিমের অন্যতম সদস্য ছিলেন মৌমা। তার আগের বছর, ২০১৭ সালে মণিকা বাত্রাকে সঙ্গে নিয়ে বিশ্ব টেবল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টারে ফাইনালে উঠেছিলেন বাংলার মেয়ে। যা ছিল বিরাট সাফল্য।
মৌমা যখনই সুযোগ পেয়েছেন, নিজের সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। মা হয়েছেন ২০১৯ সালের শেষ দিকে। মেয়ে অদ্রিত্রিকে একটু বড় করে বোর্ডে আবার ফিরে আসাই ছিল লক্ষ্য। মৌমা বলছেন, ‘করোনার জন্য আমার যাবতীয় পরিকল্পনা ঘেঁটে গিয়েছে। তবে, ধীরে ধীরে বোর্ডে ফেরার চেষ্টা করছি। ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোদমে নেমে পড়ব ট্রেনিংয়ে। পরের ভাবনাগুলো তার পর সাজাব।’
মৌমার এই দীর্ঘ পথ হাঁটার পিছনে অনুপ্রেরণার কাজ করেছেন স্বামী কাঞ্চন চক্রবর্তী। পদ্মশ্রী পাওয়ার দিনেও মৌমার মুখে তাঁরই কথা। ‘কঠিন সময়গুলোতে ওকে পাশে পেয়েছি সব সময়।’ একটা সাফল্য পেয়ে কখনও থেমে যাননি মৌমা। পদ্মশ্রী তাঁকে নতুন করে তাতাচ্ছে।