Paris Olympics 2024: প্রেমের শহরে চরম অস্থিরতা, ধাক্কা খাবে ফ্রান্সের অলিম্পিক আয়োজনের স্বপ্ন?
Political Turmoil in France: কবিতা আর প্রেমের শহর প্যারিসে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে অলিম্পিক। 'দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ' শুরু হতে আর ১৫ দিন সময়ও হাতে নেই আয়োজকদের। আর তার আগেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তাদের কপালে পড়েছে চিন্তার গভীর ভাঁজ।
করোনার কারণে গতবার পিছিয়ে গিয়েছিল অলিম্পিক। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দু’বছর পরে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে অলিম্পিক আয়োজন করেছিল টোকিও। আর এ বার,কবিতা আর প্রেমের শহর প্যারিসে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে অলিম্পিক। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন দ্য আর্থ’ শুরু হতে আর ১৫ দিন সময়ও হাতে নেই আয়োজকদের। আর তার আগেই আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কর্তাদের কপালে পড়েছে চিন্তার গভীর ভাঁজ।
অলিম্পিক ঘিরে কেন হঠাৎ ডামাডোল? বর্তমানে ফ্রান্সের রাজনৈতিক অবস্থার কারণেই শঙ্কার কালো মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে। চিন্তা বাড়ছে ফরাসি প্রশাসনেও। ভারতের মতো সে দেশেও সাধারণ নির্বাচন হয়েছে কিছু দিন আগেই। আর সেই নির্বাচনে কোনও দলই ম্যাজিক ফিগার পার করতে পারেনি, ফলে ত্রিশঙ্কু হয়ে রয়েছে পার্লামেন্ট। এখনও সরকার গঠন হয়নি সে দেশে। কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তাও নিশ্চিত নয়। আগে ঠিক ছিল যে অলিম্পিক উদ্বোধন করবেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী গ্যাব্রিয়েল অট্টাল। কিন্তু, ভোটে খারাপ ফলের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। যে সমস্ত সরকারি আমলা অলিম্পিক আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁরাও ঠিক করে কাজ করতে পারছেন না। কারণ, তাঁদের প্রত্যেকের একটাই ভয়, নতুন সরকার ক্ষমতায় এসে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে পারে তাঁদের।
ভোটের ফল বেরনোর পর থেকেই ফ্রান্সে বামপন্থী ও অতি ডানপন্থীদের মধ্যে তীব্র গন্ডগোল চলছে। বিক্ষোভ নেমে আসছে রাস্তায়। আর ডামাডোলের মধ্যে এখন রোজকার সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে প্যারিসে ট্র্যাফিক জ্যাম। অলিম্পিক চলাকালীন বাড়তি ভিড়ের কথা ভেবে নতুন মেট্রো লাইন তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। গেমসের দু-সপ্তাহ আগেও তা শেষ হয়নি। অলিম্পিকের বাজেট বাড়তে বাড়তে ৩৬ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। সেই টাকা আসবে কোথা থেকে? নতুন সরকারে বামেরা থাকলে তারা সাধারণ মানুষের উপর কর বসাতে দেবে? এ সব ভেবে ঘুম উড়ে গিয়েছে ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ প্রশাসনের।
অলিম্পিক আয়োজকদের দুঃখের তালিকা এখানেই শেষ নয়। হিসেব কষা হয়েছিল, অলিম্পিকের সময় প্যারিসের দুটো বিমানবন্দরে রোজ সাড়ে ৩ লাখ যাত্রী যাতায়াত করবেন। সেই মতো ব্যবস্থা রাখতে হবে। বিমানবন্দরের কর্মীরা এখন বলছেন, তাঁরা বোনাস-পেনশনও নাকি ঠিক মতো পাচ্ছেন না। আর সে সব না পেলে অলিম্পিকের সময়ে ধর্মঘট করবেন। প্রশাসন সেই সব কর্মীদের বুঝিয়েসুঝিয়ে আপাতত ঠান্ডা করার চেষ্টা করছে।
এর মধ্যে আবার প্যারিস অলিম্পিকের নিরাপত্তা ব্যবস্থার নীলনকশা চুরি হয়ে গিয়েছে বলে জোর খবর। পুলিশ জানিয়েছে, এক ইঞ্জিনিয়ারের ল্যাপটপে সিকিওরিটি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য ছিল। ট্রেনে তাঁর সেই ল্যাপটপ চুরি হয়ে যায়। আর সেটা উদ্ধার করা না গেলে শেষ মুহূর্তে অলিম্পিকের নিরাপত্তা আবার ঢেলে সাজাতে হতে পারে। সবমিলিয়ে অলিম্পিকের আয়োজন নিয়ে চিন্তা বাড়ছে। আর একচুল এদিক-ওদিক হলেই গোটা বিশ্বে ধাক্কা খাবে ফ্রান্সের ইমেজ। ফলে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাক্রঁ কোন দিক কী ভাবে সামাল দেবেন, তা নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন।