লক্ষ্মী কার! সরকারি প্রকল্পের ফর্ম জমা নিয়ে ধুন্ধুমার তৃণমূলেই

Laxmi Bhandar: পাল্টা, অধুনা তৃণমূল আবুল শেখ এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, রূপচাঁদের অনুগামীরা সরকারি প্রকল্পেও দুর্নীতি করার জন্যই ফর্ম জমা নিচ্ছিল।

লক্ষ্মী কার! সরকারি প্রকল্পের ফর্ম জমা নিয়ে ধুন্ধুমার তৃণমূলেই
আহত দুই তৃণমূলকর্মী, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2021 | 11:35 PM

বীরভূম: ফের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে প্রকল্পের (Laxmi ka Bhandar) ফর্ম জমাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা। এ বারেও কাঠগড়ায় সেই শাসক শিবির। নানুর বিধানসভা এলাকার পেঙ্গা গ্রামে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ফর্ম জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্য়ে কার্যত খণ্ডযুদ্ধ বেধে গেল মঙ্গলবার। যদিও উভয় গোষ্ঠীই এটিকে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ বলেই দাবি করেছে। কিন্তু সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।

রূপচাঁদ মল্লিক নামে এক তৃণমূল নেতার কথায়, “আমরা সারাজীবন তৃণমূল করে  আসছি। নির্বাচনেও আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের হয়ে কাজ করেছি। সেখানে আবুল শেখ নামের এক সিপিএম নেতা ভোটের পরে আমাদের দলে যোগ দেয়। তারপর থেকেই অশান্তি শুরু করেছে। করোনাকালে সাধারণ মানুষ সবাই দুয়ারে সরকার শিবিরে যেতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে, যাতে সকল মহিলাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের (Laxmi ka Bhandar) ফর্ম আমরা তুলে নিয়ে  পঞ্চায়েতে জমা দিতে পারি তার ব্য়বস্থা করছিলাম। কিন্তু, আবুল শেখের দলবল তাতে বাধা দেয়। সোমবার রাতে আমরা দেখি আবুল শেখের সঙ্গীরা এসে ফর্ম জমা নেওয়ার কাজ করছে ও নিজের পছন্দমতো লোকের সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার ব্য়বস্থা করছে। আমরা প্রতিবাদ করায় আমাদের ছেলেদের ধরে রড-লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। আমরা কিছু বলারই অবকাশ পাইনি। আমাদের দুই কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।”

পাল্টা, অধুনা তৃণমূল আবুল শেখ এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন, রূপচাঁদের অনুগামীরা সরকারি প্রকল্পেও দুর্নীতি করার জন্যই ফর্ম জমা নিচ্ছিল। কিন্তু, আবুল শেখ ও তাঁর অনুগামীরা বাধা দিলে মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, রূপচাঁদ অনুগামীরা বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী বলে জানিয়েছেন আবুল। পাল্টা, স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে এই সংঘর্ষ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলাফল। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত একাধিক। গুরুতর জখম ২।

উল্লেখ্য, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম জমা দেওয়া বা দুয়ারে সরকার শিবির নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। সোমবার পানিহাটিতে, দুয়ারে সরকার শিবির চলাকালীন ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি গৌতম পাল ও তাঁর অনুগামীরা আচমকা হামলা করেন। শিবিরে ভাঙচুর চালানো হয়, এমনকী স্থানীয় কয়েকজন তৃণমূলের মহিলা কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকী, তৃণমূল কাউন্সিলরের চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয়। ঘটনায়, ওই যুব তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গত ১৬ অগস্ট থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের কর্মসূচি।  সেই সরকারি প্রকল্পকে কেন্দ্র করে একাধিক দুর্নীতির ছবি সামনে এসেছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম তুলতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েছেন এই ছবিও ধরা পড়েছে। কোথাও বা প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে মোটা টাকা নেওয়ার অভিযোগও সামনে এসেছে। সম্প্রতি, বিজেপি রাজ্য় সভাপতি দিলীপ ঘোষ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেছেন, “বাংলার মানুষকে ভিখারি বানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ৫০০ টাকার জন্য মানুষ লাইনে দাঁড়াচ্ছে। মারপিট করছে। পদপিষ্ট হচ্ছে।”

লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে যাতে কোনওরকম দুর্নীতি না হয়, তার জন্য় প্রথম থেকেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুয়ারে সরকারের শিবির থেকেই নিতে হবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্ম।  কোনও দলীয় কার্যালয়ে থেকে বা অন্য কোনও উপায়ে ফর্ম জমা নেওয়া বা আদানপ্রদান করা চলবে না। এমনকী কোনও দলীয় কর্মীও এতে হস্তক্ষেপ করতে পারবেন না। সেখানে, টাকা নেওয়া তো দূরের ব্যাপার। কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে থাকেন তবে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পিছপা হবে না সরকার এমনটা আগেই জানিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী।

আরও পড়ুন: বন্ধ সরকারি স্কুলে পরীক্ষা! TV9-এর খবরের জেরে নতিস্বীকার স্কুল কর্তৃপক্ষের

আরও পড়ুন: নবান্নের প্যাডে ছাপানো পূর্ত দফতরের নিয়োগপত্র, ৪ লক্ষ টাকা দিয়েই মাথায় হাত যুবকের!