Hooghly: কয়েক ঘণ্টা আগেও মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা, ভিনরাজ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যু হুগলির পরিযায়ী শ্রমিকের
Migrant worker died in Delhi: পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন সঞ্জীব। গত ৯ মাস আগে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। স্বামী ,সন্তানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ রিতা। ছেলের দেহ ফিরে পেতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার দ্বারস্থ হয়েছে সঞ্জীবের পরিবার। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। সঞ্জীবের দেহ দ্রুত যাতে গ্রামে ফিরিয়ে আনা যায়, সেজন্য মন্ত্রীর সহযোগিতায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আবেদন জানিয়েছে তারা।

হুগলি: ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে মৃত্যু হল হুগলির পরিযায়ী শ্রমিকের। পুজোর আগে পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া ধনিয়াখালির বেলমুড়ি গ্রামে। মৃতের নাম সঞ্জীব ভূমিজ (২৮। আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় মৃতদেহ দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের দাবি , সরকার উদ্যোগ নিয়ে প্লেনে ছেলের দেহ ফিরিয়ে এনে দিক। এদিন স্থানীয় প্রশাসনিক আধিকারিকরা মৃতের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন। দেহ ফিরিয়ে আনতে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন।
অবিবাহিত সঞ্জীব বিগত প্রায় দশ বছর ধরে বিভিন্ন জায়গায় সোনার কাজ করতেন। গত ৯ মাস আগে পরিবারের এক আত্মীয় মনসা মালিকের সঙ্গে দিল্লিতে সোনার কাজে গিয়েছিলেন। কালীপুজোয় বাড়ি ফেরার কথা ছিল সঞ্জীবের। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।
সঞ্জীবের মা রিতা ভূমিজ জানান, ১১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) ছেলের সঙ্গে সন্ধে ও রাতে শেষ কথা হয়েছিল। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে ভালভাবেই কথা বলে। তখন আমাকে কিছু জানায়নি শরীর খারাপের খবর। তারপর রাত একটা নাগাদ বাড়িতে ফোন আসে, ছেলের বুকের যন্ত্রণা হচ্ছে। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। সেখানে চিকিৎসক দেখে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে। বুকে ব্যথার সঙ্গে শুরু হয়েছিল শ্বাসকষ্ট। অন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় সঞ্জীবের।”
এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সঞ্জীবের দেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়। আত্মীয় মনসা ফোন করে সঞ্জীবের পরিবারকে মৃত্যুর ঘটনা জানান। রিতা আরও বলেন, “বর্তমানে যেখানে কাজ করছিল, সেখানে কাজ করে দুটো পয়সার মুখ দেখেছিল ছেলে। কালীপুজোর সময় বাড়ি ফিরে সরকারের দেওয়া ঘরটা ঢালাই করার কথা ছিল।”
পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন সঞ্জীব। গত ৯ মাস আগে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার। স্বামী ,সন্তানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ রিতা। ছেলের দেহ ফিরে পেতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার দ্বারস্থ হয়েছে সঞ্জীবের পরিবার। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ। সঞ্জীবের দেহ দ্রুত যাতে গ্রামে ফিরিয়ে আনা যায়, সেজন্য মন্ত্রীর সহযোগিতায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আবেদন জানিয়েছে তারা।
সঞ্জীবের মাসি সন্ধ্যা মাইতি বলেন, “ভিনরাজ্যে কাজে গিয়ে এভাবে আমাদের পরিবারের সন্তানকে হারাতে হবে, আমরা ভাবতেও পারিনি। আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। অতদূর গিয়ে গাড়ি ভাড়া করে মৃতদেহ আনা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।”
এদিন সঞ্জীবের বাড়িতে যান ধনিয়াখালির বিডিও, শ্রম দফতরের আধিকারিক ও পুলিশের আধিকারিকরা। দেহ কীভাবে দ্রুত ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। ধনিয়াখালির বিডিও রাজর্ষি চক্রবর্তী জানান, “মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। এবং পরিবারের সদস্যরা যাতে দিল্লি দ্রুত পৌঁছাতে পারেন, তার জন্য পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে সাহায্য করা হচ্ছে।”
