কাউন্সিলর নন অথচ নয়া পুরপ্রশাসক মণ্ডলীতে অনেকের জায়গা! ‘করে কম্মে খাক,’ টিপ্পনী বিজেপির

TMC BJP: "রাজ্যের পুরসভাগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনৈতিকভাবে প্রশাসক বসিয়ে লুটপাট চলছে। উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়েছে তৃনমূল, অথচ পুরভোট নিয়ে টুঁ শব্দ করছে না। পুরনো কিছু লোক এতদিন কর কম্মে খেয়েছে, এবার নতুন কিছু লোককে সুযোগ দেওয়া হল যারা কাউন্সিলরই ছিলেন না।''

কাউন্সিলর নন অথচ নয়া পুরপ্রশাসক মণ্ডলীতে অনেকের জায়গা! 'করে কম্মে খাক,' টিপ্পনী বিজেপির
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 18, 2021 | 11:03 PM

হুগলি: উত্তর ২৪ পরগনার পর হুগলিতেও নতুন পুর প্রশাসকমণ্ডলী নাম ঘোষণা করে দিয়েছে রাজ্য। যেখানে উঠে এসেছে একঝাঁক নতুন মুখ। বাড়ছে ক্ষোভও। যেমন, কোন্নগরের পুর প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব নিলেন তন্ময় দেব। বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে যুব তৃণমূল নেতা তন্ময়কে পুর প্রশাসক করা হয়েছে। কোন্নগর পুরসভায় বিদায়ী প্রশাসক বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় নতুন প্রশাসককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। উপস্থিত ছিলেন নতুন পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্যরা।

কোন্নগরের মত শ্রীরামপুরেও প্রশাসক বদল করা হয়েছে। সেখানে অমিয় মুখোপাধ্যায়ের জায়গায় প্রশাসক করা হয়েছে গৌর মোহন দে’কে। হুগলির ১২টি পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীতে রদ বদল করা হয়েছে। তাতে বাদ পড়েছেন অনেক হেভিওয়েটই। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম শ্রীরামপুর পুরসভার উত্তম রায়, তিয়াসা মুখোপাধ্যায়, সুমিত চক্রবর্তী। হুগলি চুঁচুড়া পুরসভার গোবিন্দ দাশগুপ্ত, জয়দেব অধিকারী। চাঁপদানী পুরসভার বিক্রম গুপ্তা, কিশোর কেওট ও মহম্মদ নাসিম। আবার নবাগতদের অনেকে কাউন্সিরই নন বলে খবর।

নতুন করে যে প্রশাসক মণ্ডলী তৈরি করা হয়েছে তাতে বিদায়ী বোর্ডের কাউন্সিলর বা কো-অর্ডিনেটর ছিলেন না এমন অনেককে নেওয়া হয়েছে। বৈদ্যবাটি পুরসভার আগের বোর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল দশ নম্বর ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর সুবীর ঘোষকে। নতুন করে নেওয়া হয়েছে শ্যামলেন্দু মুখোপাধ্যায় ও পিন্টু মাহাতোকে। পিন্টুর স্ত্রী সবিতা মাহাতো পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর। এদিকে সুবীর ঘোষকে বাদ দেওয়া নিয়ে দলের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় বলে তৃণমূলের অন্দরে খবর। খবর পৌঁছেছে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও। তার পরে আবার সুবীর ঘোষকে প্রশাসক বোর্ডে ঠাঁই দেওয়া হয়।

এদিকে শ্রীরামপুরে জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে নেওয়া হয়েছে। কোন্নগরে পরিমল মুখোপাধ্যায় ও প্রদীপ্ত গাঙ্গুলীকে রাখা হয়েছে প্রশাসক মণ্ডলীতে। অন্যদিকে রিষড়ায় হর্ষদ প্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, দিলীপ হালদার, চুঁচুড়ার সঞ্জীব মিত্র, চাঁপদানীর শ্যামল বোস, জাকির হোসেন, পাপ্পু জয়সোয়ালদের প্রশাসক বোর্ডে স্থান দেওয়া হয়েছে, যাঁরা বিদায়ী পুর বোর্ডের কাউন্সিলর বা কো-অর্ডিনেটর ছিলেন না। আর দলের এহেন সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে দলের অন্দরে। যদিও সামনে কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। নিজস্ব বৃত্তে ক্ষোভ বা দলের নেতৃত্বের কাছে আবেদন করছেন অনেকে। যেমন বৈদ্যাবাটির সুবীর ঘোষের ঘটনা থেকেই তা স্পষ্ট।

বৈদ্যবাটি পুরসভার প্রশাসক তথা চাঁপদানীর বিধায়ক অরিন্দম গুঁইন এবিষয়ে বলেন, ‘এটা দলের সিদ্ধান্ত দল যেটা ভাল মনে করেছে, সেটা করেছে। আজ দল যদি মনে করে কাউকে নিয়ে আসা প্রয়োজন তা হবে। যাদের নেওয়া হয়েছে. তারা দলেরই লোক। পুরসভা চালাতে কোনো অসুবিধা হবে না। কারও ক্ষোভ থাকলে সেটা দলের মধ্যে আলোচনায় মিটে যাবে।”

কোন্নগরের প্রশাসক তন্ময় দেব বলেন, “দলের নেতৃত্ব যে গুরুদায়িত্ব দিয়েছে তা পালন করব। কাদের ক্ষোভ আছে সেটা আমি বলতে পারব না। যদি কোনো সমস্যা হয় তা বোর্ডে আলোচনা করে মিটে যাবে মানুষের পাশে থেকে কাজ করব।” এদিকে কোন্নগরের অপসারিত প্রশাসক বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “আমাদের দলে সবাই কাজ করতে পারে। সবাই তাকিয়ে আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে।”

পুর প্রশাসনে রদবদল নিয়ে অবশ্য বিজেপি কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। বিজেপি নেতা স্বপন পাল বলেন, “রাজ্যের পুরসভাগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনৈতিকভাবে প্রশাসক বসিয়ে লুটপাট চলছে। উপনির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়েছে তৃনমূল, অথচ পুরভোট নিয়ে টুঁ শব্দ করছে না। পুরনো কিছু লোক এতদিন কর কম্মে খেয়েছে, এবার নতুন কিছু লোককে সুযোগ দেওয়া হল যারা কাউন্সিলরই ছিলেন না।” আরও পড়ুন: ‘বাপরে এত দাম!’ আধার সংশোধনের মূল্য শুনে আঁধার দেখছেন বোলপুরবাসী