করোনা আবহে সোয়াইন ফ্লু আতঙ্ক বাংলায়! এবার শুয়োরদেরও রাখা হল আইসোলেশনে

প্রতিবেশী দেশ ভুটানের ফুন্টশোলিং শহরে শুয়োরদের মধ্যে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু পৌঁছেছে মহামারির পর্যায়ে। এই অবস্থায় সে দেশের সমস্ত খামার থেকে শুয়োর নিয়ে হত্যা করে মাটিতে কবর দিচ্ছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে শুয়োর কেনাবেচাতেও।

করোনা আবহে সোয়াইন ফ্লু আতঙ্ক বাংলায়! এবার শুয়োরদেরও রাখা হল আইসোলেশনে
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 29, 2021 | 10:45 PM

আলিপুরদুয়ার: করোনায় মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কোন দেশে? উত্তরটা সহজ। আমেরিকা। কিন্তু এই করোনার তাণ্ডবেই ২০১৩ সালে মার্কিন মুলুকে মারা গিয়েছিল ৮০ লক্ষ শুয়োর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে যখন ত্রস্ত সারা বিশ্ব, তখন আবার ভয় ধরাচ্ছে সোয়াইন ফ্লু। আর এই পরিস্থিতিতে ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শুয়োরদেরও আনা হল আইসোলেশনের আওতায়। চলছে তাদের ওপর টিকাকরণ প্রক্রিয়াও। কিন্তু হঠাৎ এই ব্যবস্থা কেন?

প্রতিবেশী দেশ ভুটানের ফুন্টশোলিং শহরে শুয়োরদের মধ্যে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু পৌঁছেছে মহামারির পর্যায়ে। এই অবস্থায় সে দেশের সমস্ত খামার থেকে শুয়োর নিয়ে হত্যা করে মাটিতে কবর দিচ্ছে সরকার। নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে শুয়োর কেনাবেচাতেও। ভুটান সরকারের তরফ থেকে ভারত সরকারকে ই-মেল বার্তায় জানানো হয়েছে এই আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি। আর তারপরেই নড়েচড়ে বসে সরকার। ভারতেও শুয়োরের মাংস কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। পাশাপাশি শনিবার থেকেই শুয়োরের দেহে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করল প্রাণী সম্পদ বিকাশ মন্ত্রক। তাদের রাখা হচ্ছে আইসোলেশনে। এমনই ছবি ধরা পড়েছে এ রাজ্যের আলিপুরদুয়ারেও।

ভারতের সীমান্তবর্তী শহর জয়গাঁওতে করোনা মহামারির সঙ্গে শুয়োরের শরীরে আফ্রিকান সোয়াইন ফ্লু আলাদা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ভারতের প্রশাসনিক আধিকারিক এবং ভুটানের ফুন্টশোলিং জেলার জেলা শাসক ইতিমধ্যেই দুই দেশের সীমান্ত পরিদর্শন করে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন।

কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় সোয়াইন ফ্লুয়ের আতঙ্ক এতটাই ছড়িয়েছে যে মানুষ প্রয়োজনেও ঘর থেকে বাইরে বের হতে চাইছেন না। এর মধ্যে আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে শুরু হল শুয়োরের ওপর ভ্যাকসিনেশন প্রোগ্রাম। কালচিনি ব্লকের বিডিও প্রশান্ত বর্মন জানান যে শনিবার থেকে জয়গাঁওয়ে শুরু হয়েছে শুয়োরদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ। ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়া গোটা কালচিনি ব্লকেই করা হবে। শুয়োরদের স্বাস্থ্য শিবির করা হচ্ছে বলে জানান বিডিও। তবে এখন খামার মালিকদের বলা হয়েছে শুয়োর যেন খামারের বাইরে বের না করেন তাঁরা। পুরোপুরি আইসোলেশনে রাখা হয় তাদের।

যদিও জেলা প্রশাসন থেকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে, শুয়োরের দেহের এই রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার কোনও আশঙ্কা নেই। আপাতত খামারে অসুস্থ শুয়োর থাকলে সেগুলোকে যাতে পৃথক করে রাখা হয় তার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে খামার মালিকদের। তাছাড়া শুয়োর অসুস্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানানোর কথা বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বার্ড ফ্লুর থাবা মানবদেহেও, চরমে আতঙ্ক

প্রশাসনের এই ঘোষণা ও উদ্যোগের পরেই শুয়োরদের আইসোলেশন করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন খামার মালিকরা। চলছে ভ্যাকসিনেশনও।