CPIM in Jalpaiguri: বিজলির পর চাঁদা তুলে আর এক বৃদ্ধার বাড়ি গড়ে দিল CPIM
CPIM in Jalpaiguri: গ্রামের সিপিএম কর্মীরা যে যাঁর সাধ্যমতো চাঁদা দিয়েছেন। সেই টাকাতেই কেনা হয়েছে সব সরঞ্জাম। কেউ আবার নিজে হাত লাগিয়েছেন বাড়ি তৈরির কাজে।
জলপাইগুড়ি: জয় হোক বা না হোক, বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে। ভোটের প্রচারে গিয়ে এমনই আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন সিপিএম কর্মীরা। রাজ্যের একাধিক জেলা থেকে যখন ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ সামনে আসছে, তখন এক অন্য ছবি দেখা গেল জলপাইগুড়ির নাজির পাড়ায়। সহায়সম্বলহীন বৃদ্ধার মাথায় ছাদ ছিল না। সেই অবস্থা দেখেই তা মেরামত করে দেওয়ার কথা বলেছিল সিপিএম। এবার ভোট মিটতে চাঁদা তুলে সেই বৃদ্ধার বাড়ি বানিয়ে দিলেন তাঁরা।
জলপাইগুড়ির সদর ব্লকের খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নাজির পাড়া ১৭/১৬০ নম্বর বুথে আপাতত চলছে সেই বাড়ি তৈরির কাজ। মিলন রায় নামে বছর ৬৫-র ওই বৃদ্ধার ঘর কয়েক বছর আগে ঝড়ে ভেঙে যায়। এরপর পরিবার নিয়ে তিনি আশ্রয় নেন বাড়ির পাশেই শিশু শিক্ষা কেন্দ্রে। সেই ভবনের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়। বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। বৃদ্ধার সঙ্গে থাকেন তাঁর মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে ও তিন মেয়ে।
আবাস যোজনার ঘর তো দূরের কথা, বিধবা ভাতা, বৃদ্ধ ভাতাও পাননি তিনি। একটি পলিথিনও জোটেনি বলে অভিযোগ। প্রচারে গিয়ে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় সিপিএম কর্মীদের। সেই সময় তাঁরা বৃদ্ধাকে কথা দিয়েছিলেন এবার ভোটে জয় হোক বা না হোক বাড়ি বানানো হবেই।
ভোট পর্ব মিটেছে। ওই গ্রামে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী গৌরী রায় শীল। এরপর প্রতিশ্রুতি মতো শুরু হয়েছে কাজ। গ্রামের সিপিএম কর্মীরা যে যাঁর সাধ্যমতো চাঁদা দিয়েছেন। সেই টাকাতেই কেনা হয়েছে সব সরঞ্জাম। কেউ আবার হাত লাগিয়েছেন বাড়ি তৈরির কাজে।
সিপিএম নেতা কার্তিক রায় বলেন, “এবার ভোটের প্রচারে বেরিয়েই বৃদ্ধার বাড়ির অবস্থা নজরে পড়েছিল।” তিনি জানিয়েছেন, আবাস যোজনায় ঘরের জন্য আবেদন করেছিলেন ওই বৃদ্ধা, কিন্তু পাননি। সিপিএম কর্মী অনিল রায় বলেন, আমার সামর্থ্য নেই আর্থিক সাহায্য করার। তাই এই বয়সেও স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছি, যাতে ওঁর বাড়ি তৈরি করা সহজ হয়।
বৃদ্ধা মিলন রায় বলেন, ‘আমার এই অসহায় অবস্থা জেনেও কিছু করেনি তৃণমূল। উলটে আমাকে জিজ্ঞেস করত, আমি কোন দল করি। আবাস যোজনায় ঘর তো দেয়নি, বৃদ্ধ ও বিধবা ভাতার জন্য আবেদন করেও কিছুই পাইনি। সামান্য পলিথিন পর্যন্ত পাইনি।’ এবার মাথার ওপর ছাদ পেতে চলেছেন, তাই খুশি তিনি।
তৃণমূল নেতা তথা খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন উপপ্রধান সুভাষ চন্দ বলেন, ‘আবাস যোজনায় ঘর দেওয়া হচ্ছে না এখন। তাছাড়া উনি আমাদের কাছে আসেননি। যদি আসতেন তাহলে আমরাই টিন কিনে ঘর বানিয়ে দিতাম।’
কিছুদিন আগে এই খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতেই এক বৃদ্ধার বাড়িতে নিজেদের উদ্যোগে বিদ্যুৎ এনেছিল সিপিএম কর্মীরাই। সুকান্ত নগর কলোনিতে ৭৫ বছরের অশীতিপর বৃদ্ধা সখিনা খাতুনের বাড়িতে আলো জ্বালিয়েছিলেন তাঁরা।