Jalpaiguri: ‘নজরানা না দিলে লিফটে না, কমিশন না দিলে নো-অ্যাম্বুলেন্সে’, জলপাইগুড়ির মেডিক্যাল নিয়ে প্রসূতিদের পরিবারের একগুচ্ছ অভিযোগ
Jalpaiguri: জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের মাদার চাইল্ড হাবের পরিষেবা নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ শুক্রবার বিকালে ফের সামনে আসে। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় প্রসূতিদের বাড়ি পাঠানো হয়।
জলপাইগুড়ি: টাকা না দিলে প্রসূতিকে বাড়ি নিয়ে না যাওয়ার অভিযোগ অ্যাম্বুলেন্সের বিরুদ্ধে। ‘নজরানা’ না দিলে প্রসূতিকে লিফটে তোলা বা নামানো হয় না, অভিযোগ তেমনই। আর ডিসচার্জ হলে মোটা টাকা বকসিস না দিলে প্রসূতিকে নীচে নামতে দেয় না আয়ারা। জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের মাদার চাইল্ড হাবের পরিষেবা নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ শুক্রবার বিকালে ফের সামনে আসে। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রচেষ্টায় প্রসূতিদের বাড়ি পাঠানো হয়।
ধূপগুড়ির বাসিন্দা হাশেম আলির অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী প্রসূতি বিভাগ মাতৃমায় ভর্তি ছিল। এদিন তাঁর হাসপাতাল থেকে ছুটি হয়। তাঁর কথায়, “আমি বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা নিতে গেলে বলা হয়, দু’জন প্রসূতিকে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রতি প্রসূতির জন্য ৩০০ টাকা করে মোট ৬০০ টাকা করে দিতে হবে।”
শ্যামল রায় নামে একজনের অভিযোগ তাঁর পুত্রবধূ মাদার হাবে ভর্তি ছিলেন। লিফটে প্রসূতি বিভাগে উঠতে, নামতে টাকা চাওয়া হয়। তাঁর দাবি, তিনিআটশো টাকা দিয়েছেন।
রোগীর পরিবারের আরেক সদস্য ময়না রায় বলেন, “ওয়ার্ডে গেলে এলেই টাকা চাইছে। আমরা আর্থিকভাবে দুর্বল বলে সরকারি হাসপাতালে আসি বিনামূল্যে পরিষেবা পেতে। ওয়ার্ডে একাংশ আছে, যারা টাকা চায়। আমার নাতি হয়েছে, তার জন্য সাত জন মিলে টাকা চেয়েছিল।” তিনি বলেন, “যদি হাসপাতালে প্রসব করাতে গিয়ে আমাদের এইসব বায়না মেটাতে গিয়ে ২০ হাজার খরচ হয়। তবে আমরা তথা কথিত বিনে পয়সার সরকারি হাসপাতালে আসব কেন?”
তবে এই জাতীয় অভিযোগ এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার এই সব কয়টি অভিযোগ উঠেছে। গতবছর নভেম্বরে মাসেও এই জাতীয় সমস্যা হয়েছিল। সেইসময় মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
সমস্যার কথা স্বীকার করে নেন অ্যাম্বুলেন্সের অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক দিলীপ দাস। তিনি বলেন, “আমরা ২০১১ সাল থেকে ৮ টাকা কিলোমিটার দরে এই অ্যাম্বুলেন্সে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি। তখন পেট্রোল ছিল ৪৮ টাকা প্রতি লিটার। এখন পেট্রোল ১০৬ টাকা লিটার। আমরা রেট বাড়াবার জন্য বহু আবেদন নিবেদন করেছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।” তিনি জানান, কাছের রোগীদে তাঁরা আগেই বাড়ি পৌঁছে দেন। পরে দূরের প্রসূতিকে নিয়ে যান। এছাড়া প্রসূতির পরিবার রাজি থাকলে এক সঙ্গে দু’জনকে নিয়ে যান।
প্রতিদিন একসঙ্গে ৪৫-৫০ জন প্রসূতিকে ছাড়া হয়। তখন অ্যাম্বুলেন্স কম পড়ে যায়। অভিযোগ প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি চিকিৎসক কল্যাণ খাঁ বলেন, “আমাদের কাছে এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। হাসপাতালে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা নয়। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ এলে নিশ্চিতভাবে আমরা ব্যবস্থা নেব।”