Jhargram: বেআইনি বালি খাদান চলছে রমরমিয়ে? স্বীকারও করলেন তৃণমূল নেত্রী
Jhargram: প্রকৃতপক্ষে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্বের একটা বড় অংশ আসে বালি খাদান থেকেই। বাম আমল থেকেই ঝাড়গ্রামে বালি খাদান চালু ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, আগে সেই সময় নিয়ম মেনে বালি তোলা হলেও বর্তমানে তা মানা হয় না।
ঝাড়গ্রাম: রমরমিয়ে চলছে বেআইনি বালিখাদান। ঝাড়গ্রাম জেলার কয়েকটি ব্লকে এই বেআইনি বালি খাদান যেন শিল্পে পরিণত হয়েছে। অভিযোগ, ডুলুং নদী হোক বা সুবর্ণরেখা, মাত্রাতিরিক্ত বালি তুলে নেওয়ায় নদী গর্ভের এক একটি জায়গা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রায়ই নদীতে নেমে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। অপরদিকে বালি বোঝাই ডাম্পারের দৌরাত্ম্য বাড়ছে দিনদিন। এর জেরে একদিকে যেমন রাস্তার হাল বেহাল হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। বালি বোঝাই ডাম্পারের ধাক্কায় মৃত্যুর ঘটনাও সামনে আসছে। এলাকাবাসীদের দাবি, সব জেনেশুনেও নিশ্চুপ পুলিশ প্রশাসন। বিরোধীদের দাবি, শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের মদতেই চলে অবৈধ বালি খাদান। তাই নিশ্চুপ ঝাড়গ্রাম প্রশাসন।
প্রকৃতপক্ষে ঝাড়গ্রাম জেলা প্রশাসনের রাজস্বের একটা বড় অংশ আসে বালি খাদান থেকেই। বাম আমল থেকেই ঝাড়গ্রামে বালি খাদান চালু ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, আগে সেই সময় নিয়ম মেনে বালি তোলা হলেও বর্তমানে তা মানা হয় না। সুবর্ণরেখা বা ডুলুং নদী, যেখানেই বালি তোলা হয় তা কার্যক্ষেত্রে ৮০ থেকে ১০০ গুন বেশি। ফলে নদীগর্ভে কোথাও কোথাও ৭০-৮০ ফুট গভীর গর্ত তৈরি হয়ে যাচ্ছে। বর্ষায় নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পেলে এই গর্তগুলিই হয়ে ওঠে মরণফাঁদ।
ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর ১, গোপিবল্লভপুর ২ ব্লকের হাতিবাড়ি সুবর্ণরেখার চর, বাঁধগড়া, বৈতার মতো গ্রামগুলিতে বালি খাদানের রমরমা ব্যবসা বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। বেশিরভাগই সরকারি অনুমোদিত, কিন্তু অভিযোগ কোনওটাতেই নিয়ম মেনে বালি তোলা হয় না। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে এই বালি খাদান বন্ধ করতে হবে। কারণ এর থেকে গ্রামবাসীরা উপকৃত হচ্ছেন না, বরং বেঘোরে প্রাণ যাচ্ছে এলাকাবাসীদের।
ঝাড়গ্রামের বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন শ’য়ে-শ’য়ে বালি বোঝাই ডাম্পার যাতায়াত করে। এর ফলে যেমন রাস্তাগুলি ভেঙে যায় তেমনই দুর্ঘটনা ঘটছে বার বার। ডাম্পারচালকদের একাংশের দাবি, পুলিশকে তোলা দিয়েই তাঁদের গাড়ি যাতায়াত করে। প্রতি ট্রিপে ৫০ টাকা করে দিতে হয় নাকা চেকিং পয়েন্ট গুলিতে।
ঝাড়গ্রাম জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মনিচাঁদ পানি দাবি করলেন, “বর্তমানে ঝাড়গ্রাম জেলায় বালি খাদানের জন্য কোনও বৈধ অনুমতি নেই। যা চলছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি।” তাঁর আরও দাবি, “যদি ইডি বা সিবিআই এই বালি খাদান নিয়ে তদন্ত করে। তবে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি সামনে আসবে।” তৃণমূল নেত্রী তথা ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সভাপতি রেখা সোরেন বলেন, “বালি খাদানের জন্য বালি গাড়ি যাতায়াত করে। সেই কারণে রাস্তা খারাপ হচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে এই বিষয়ে দৃষ্টি দিতে বলব। আর এটা ঠিক এখানে বেআইনি খাদানের ব্যবসা গড়ে উঠেছে।”