Kunal Ghosh: ‘শুভেন্দুর বাবা তো আর কেবল শুভেন্দুদের বাবা নন, আমি আবারও শুভেন্দুর বাবা তুলছি, যা করার করে নিন’, চ্যালেঞ্জ দিয়ে আরও বড় বিতর্কে কুণাল

Kunal Ghosh: কুণাল ঘোষ আরও বলেন, "দিলীপ ঘোষ অতীতেও এই ধরনের কথাবার্তা বলেছেন। নারীবিদ্বেষী মনোভাব। বিজেপি নাকি হিন্দু হিন্দু করেন। অথচ এই দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, মা দুর্গার বাবার ঠিক নেই। তখন তো তাঁকে থামায়নি বিজেপি। বিজেপির শোকজ হচ্ছে আসলে নাটক। বঙ্গবাসীর রোষ থেকে বাঁচাতে নাটক করেছে।" 

Kunal Ghosh: ‘শুভেন্দুর বাবা তো আর কেবল শুভেন্দুদের বাবা নন, আমি আবারও শুভেন্দুর বাবা তুলছি, যা করার করে নিন’, চ্যালেঞ্জ দিয়ে আরও বড় বিতর্কে কুণাল
শিশির অধিকারীর বাবা তুললেন কুণাল ঘোষ Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 28, 2024 | 2:17 PM

কলকাতা: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন  বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। আর তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানাতে গিয়ে এবার রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরই ‘বাবা’ তুললেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। একেবারে সাংবাদিক সম্মেলনে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই কুণাল বললেন, “শুভেন্দুর বাবা তুললাম। যা করার আছে করে নিন।” কেন তিনি একথা বললেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন কুণাল।

আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষকে শোকজ করেছে দল। এবার তাঁর বিরুদ্ধে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। ছিলেন শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, ব্রাত্য বসু, কুণাল ঘোষরা। কুণাল বলেন, “দিলীপ ঘোষ এই ধরনের অপরাধ আগেও করেছেন। দুর্গার বাবাকে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। এরপর তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবাকে নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত।” কুণাল বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থানটা স্পষ্ট করে দিয়েছি। সিইও-র কাছে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি। প্রথমত. দিলীপ ঘোষকে অবশ্যই ভাবে শোকজ করা উচিত। দ্বিতীয়ত, দিলীপ ঘোষ যদি নিজের উত্তর দেন, তাহলে যেন তাঁর সাফাইকে সন্তুষ্ট না হয় কমিশন। তিন. তাঁকে কেবল প্রশ্ন করা হোক, তিনি সত্যিই এই ধরনের মন্তব্য করেছেন নাকি করেননি। এবং সত্যি প্রমাণিত হলে, তাঁকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে সাসপেন্ড করা হোক। অন্ততপক্ষে ৭ দিনের জন্য।” পাশাপাশি সিইও কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ করারও দাবি তুলেছেন কুণাল। যাতে এই ধরনের অযাচিত কথা কেউ না বলেন।

কুণাল ঘোষ আরও বলেন, “দিলীপ ঘোষ অতীতেও এই ধরনের কথাবার্তা বলেছেন। নারীবিদ্বেষী মনোভাব। বিজেপি নাকি হিন্দু হিন্দু করেন। অথচ এই দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, মা দুর্গার বাবার ঠিক নেই। তখন তো তাঁকে থামায়নি বিজেপি। বিজেপির শোকজ হচ্ছে আসলে নাটক। বঙ্গবাসীর রোষ থেকে বাঁচাতে নাটক করেছে।”

কুণাল যখন সাংবাদিকদের উদ্দেশে দিলীপ ঘোষ প্রসঙ্গে এ কথা বলছিলেন, তখন তাঁর কথার রেশ ধরেই ব্রাত্য বসু বলেন, “দিলীপের নারীবিদ্বেষ আরও বেড়ে গিয়েছে, কারণ ওঁর হাতে তৈরি করা ডিজাইনারের ডিজাইনে মেদিনীপুর থেকে গলাধাক্কা খেয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুরে এসেছেন, তাঁর নারীবিদ্বেষ তীব্র পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।”

সে সময়ে সাংবাদিকদের তরফে কুণাল ঘোষকে প্রশ্ন করা হয়, “দিলীপ ঘোষ বলেছেন বিরোধী দলের নেতার বাবা তুলে যখন আক্রমণ করা হয়, তখন তো তৃণমূল কংগ্রেস কোনও মন্তব্য করে না।” প্রসঙ্গত, দিলীপ ঘোষ বুধবার সকালেই বলেছেন, ““আমার ভাষা, শব্দ প্র‍য়োগ নিয়ে বহু লোকের আপত্তি আছে। আমার পার্টিও বলেছে। যদি তাই হয় তাহলে আমি তার জন্য দু:খিত।” সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, “আমার প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীরই পার্টির এক নেতা, তাঁরই পরিবারের এক নেতা কাঁথিতে দাঁড়িয়ে আমার দলের বিধায়কের  বাবার নামে এর চেয়েও খারাপ ভাষা প্রয়োগ করেছেন। গালাগাল দিয়েছেন। যিনি একজন বরিষ্ঠ নেতা। তাঁর কোনও মানসম্মান নেই? ” এবিষয়ে প্রশ্ন করা হয় কুণাল ঘোষকে।

প্রশ্ন শেষ হওয়ার আগেই কুণাল ঘোষ পাল্টা প্রশ্ন করেন, “ওঁ  (দিলীপ ঘোষ) কি শুভেন্দুর বাবার কথা বলছেন?”  বলেই তিনি বলেন, “আমি আবার শুভেন্দুর বাবা তুলছি। শুভেন্দুর বাবা তুললাম। যা করার আছে করে নিন।”

কেন তিনি শুভেন্দুর বাবার কথা বলছেন, তারও ব্যাখ্যা দেন কুণাল। তিনি বলেন, “শুভেন্দুর বাবা কেবল শুভেন্দুর বাবা নন। তিনি একজন রাজনৈতিক নেতা। এমন একজন রাজনৈতিক নেতা, যিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন দলের সঙ্গে।”  শিশির অধিকারীর নাম করে তিনি কটাক্ষ করেন, “শিশির অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ছিলেন। জীবনে একবার মাত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায়। ২০০৯ সালে। তাঁর ছেলেরা যে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দয়ায়। তৃণমূলের শহিদের রক্তের বিনিময়ে। শিশির অধিকারী ও অধিকারী ব্রাদার্স, তাঁদের যখন সমালোচনা করা হচ্ছে, তাঁর সঙ্গে শুভেন্দুর বাবার মানে নেই। তাঁরা ঘটনাচক্রে শুভেন্দুর বাবা হন, তাহলে কিছু বলার নেই। কই শুভেন্দুর পিসিমশাই নিয়ে তো কিছু বলছি না।” যদিও এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।