‘যাঁরা টিকিট দিয়েছিলেন তাঁরা তৃণমূলে’, ‘আপত্তিকর’ বিশ্বজিতের ফুলবদলে শান্তনুর নিশানায় মুকুল!

Shantanu Thakur: বিশ্বজিতকে প্রার্থী করা নিয়ে তাই শান্তনু যে আপত্তি প্রকাশ করবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, শুক্রবার কি বিশ্বজিতের দলবদল প্রসঙ্গে শান্তনুর শ্লেষের শিকার হলেন কোনও হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা?

'যাঁরা টিকিট দিয়েছিলেন তাঁরা তৃণমূলে', 'আপত্তিকর' বিশ্বজিতের ফুলবদলে শান্তনুর নিশানায় মুকুল!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 03, 2021 | 6:41 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিত্‍ দাসের যোগদান প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বনগাঁর বিধায়ক তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। স্পষ্টই জানালেন বিশ্বজিত্‍-কে টিকিট দেওয়া নিয়ে আপত্তি করেছিলেন তিনি। কিন্তু, সেইসময়ে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত করা হয়। বিশ্বজিত্‍ যে তৃণমূলে ফিরে যাবেন তা আগে থেকেই জানা ছিল এমনটাই দাবি বনগাঁ বিধায়কের।

বারাসাতের চন্দনপুরে মহম্মদ আলির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। ভোট পরবর্তী হিংসায় নিহত মহম্মদের বাড়িতেও আসবেন সিবিআই প্রতিনিধিরা এমন কথাও জানালেন শান্তনু। সেখানেই অধুনা তৃণমূল নেতা বিশ্বজিত্‍ দাসের ফুলবদল প্রসঙ্গে শান্তনু বলেন, “আমি জানতাম বিশ্বজিত্‍ দল বদলাবে। ওঁকে দলে নেওয়া ও প্রার্থী করা নিয়ে আমার প্রথম থেকেই আপত্তি ছিল। কিন্তু, ওঁকে যাঁরা প্রার্থী পদ দিয়েছিলেন তাঁরা সকলেই তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। এখন আর কেউ নেই তাঁরা। তাহলে আর কী হবে! বিশ্বজিত্‍ দাস চলে যাওয়ায়  যদিও দলের কোনও ক্ষতি হবে না। ভারতীয় জনতা পার্টি নিজক্ষমতায় বিরাজ করবে।”

প্রসঙ্গত, গত সোমবারই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। মঙ্গলবারই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিত্‍ দাস। একুশের নির্বাচন আবহে তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপিত্যাগী বিধায়ক যদিও সেদিন মন্তব্য করেন, “ভুল বোঝাবুঝির জন্য দল ছেড়েছিলাম। কিন্তু বিজেপিতে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না। দমবন্ধ লাগছিল। তাই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলাম।” তাঁর মতে, ‘‘বিজেপি নেতৃত্ব বাংলা বোঝেন না। বাংলার আবেগ বুঝে উঠতে পারেনি বিজেপি।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী কাকলি ঘোষদস্তিদারের হাত থেকে ওইদিন ঘাসফুলের পতাকা হাতে তুলে নেন বিশ্বজিত্‍।

বিজেপিতে বিশ্বজিতের থাকা-না-থাকা নিয়ে প্রথম থেকেই দলের অন্দরে বেশ কিছুদিন ধরে জল্পনা চলছিল। নির্বাচন আবহেই বিধানসভা অধিবেশনের শেষ দিনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে দেখা গিয়েছিল বিশ্বজিতকে। মমতা পাল্টা বলেছিলেন, “কীরে কিছু ভাবলি?” তারপর থেকেই জল্পনা দেখা গিয়েছিল বিশ্বজিত্‍ বিজেপি ত্যাগ করবেন কি না। বরাবরই মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিশ্বজিত্‍। তাই স্বপুত্র মুকুল তৃণমূলের যোগদানের পর থেকেই  দলীয় বৈঠকে বিশ্বজিতের অনুপস্থিতি নজরে পড়ে। স্থানীয় রাজনীতিতে বরাবরই শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বিশ্বজিতের সম্পর্ক ভাল নয়।

বিশ্বজিতকে প্রার্থী করা নিয়ে তাই শান্তনু যে আপত্তি প্রকাশ করবেন সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, শুক্রবার কি বিশ্বজিতের দলবদল প্রসঙ্গে শান্তনুর শ্লেষের শিকার হলেন কোনও হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা? শান্তনু বলেছেন, “যাঁরা বিশ্বজিতকে প্রার্থী করেছেন তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।” তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে, বিজেপির সাংগঠনিক ক্ষমতার দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল মুকুল রায়ের হাতে। বিশ্বজিতের প্রার্থী হওয়ার নেপথ্যে মুকুলের হাত থাকতে পারে বলেই অনুমান করেছিলেন সংশ্লিষ্ট মহল। এদিন, বিশ্বজিতের দলবদল প্রসঙ্গে কার্যত অলক্ষ্য়ে মুকুল রায়কেই নিশানা করলেন শান্তনু এমনটাই অনুমান রাজনৈতিক মহলের। আরও পড়ুন: ফিতে দিয়ে মেপে ৫০ মিটার দূরে বিক্ষোভ মঞ্চ, বিশ্বভারতীতে খুলল অচলাবস্থার ‘তালা’