‘রাজ্যপাল রাষ্ট্রপুঞ্জে গিয়ে অভিযোগ করুন’, বিস্ফোরক বনমন্ত্রী
তৃণমূল নেতা বলেন, "রাজ্যপালের যা লেভেল না, তাতে ওঁর এখানে থাকাই উচিত নয়। দিল্লি কেন, গোটা ভারতবর্ষও কম পড়বে ওঁর জন্য। ওঁ বরং, আমেরিকায় গিয়ে বাইডেন সাহেবকে বলুন বা রাষ্ট্রপুঞ্জে গিয়ে অভিযোগ করুন।"
উত্তর ২৪ পরগনা: বঙ্গ যুদ্ধ মিটতেই চরমে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে ‘ঘি’ ঢেলেছেন স্বয়ং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এমন অভিযোগ বারবার করে এসেছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি, বঙ্গে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস ও রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার রিপোর্ট দিতে দিল্লি যাত্রা করেছিলেন রাজ্যপাল (Jagdeep Dhankhar) এমনই ইঙ্গিত মিলেছিল রাজভবন সূত্রে। গত সোমবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য়ের ভোট পরবর্তী হিংসার খতিয়ান তুলে ধরতে রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন। মঙ্গলবারই রাজধানীতে উড়ে যান ধনখড়। তার আগে রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় আইনশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে চিঠি লেখেন ধনখড়। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। বুধবারই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সারেন রাজ্যপাল। শুক্রবার তাঁর বাংলায় ফেরার কথা থাকলেও কর্মসূচি বদল করে শনিবার ফের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সারেন রাজ্যপাল। নিজেই টুইট করে সেকথা জানিয়েছেন ধনখড়।
Governor WB Shri Jagdeep Dhankhar will call on the Union Home Minister Shri Amit Shah @AmitShah at his official residence at 11 am today before returning to Kolkata in the afternoon.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) June 19, 2021
মাত্র আটচল্লিশ ঘণ্টার ব্যবধানে কেন বৈঠকের প্রয়োজন পড়ল তা নিয়েও চলছে জল্পনা। রাজ্যপালের এই রাজধানীগমন নিয়ে কার্যত নবান্ন-রাজভবন সংঘাত চূড়ান্ত। এই পরিস্থিতিতে, সরাসরি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে ‘বিজেপির দূত’ বলে তোপ দাগলেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
শনিবার, হাবড়ার কলতানে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রক্তদান শিবিরে এসে রাজ্যপালের (Jagdeep Dhankhar) বিরুদ্ধে মুখ খুললেন বনমন্ত্রী। এদিন, তৃণমূল নেতা বলেন, “রাজ্যপালের যা লেভেল না, তাতে ওঁর এখানে থাকাই উচিত নয়। দিল্লি কেন, গোটা ভারতবর্ষও কম পড়বে ওঁর জন্য। ওঁ বরং, আমেরিকায় গিয়ে বাইডেন সাহেবকে বলুন বা রাষ্ট্রপুঞ্জে গিয়ে অভিযোগ করুন। বিজেপি তো এখনও ওঁকে রাজ্য সভাপতি করেনি, তাহলে ওঁর এত ইনসিকিউরিটি কেন? বিজেপি একটা মিথ্যেবাদী দল। মিথ্যে বলে পার্টি চালাচ্ছে। কাজ নেই তো, হেরে গিয়েছে। আর রাজ্যপাল মনে হয় ওদের দূত। ভোটের পর রাজ্যে কোথাও কোনও হিংসা আছে! যদি থাকে এবং সেখানে যদি তৃণমূল কংগ্রেস যুক্ত থাকে তাহলে আমি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক রাজনীতি ছেড়ে দেব। ভোটের পর সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে আমাদের ছেলেরা। সম্পূর্ণ মিথ্য়া কথা বলছেন রাজ্যপাল।”
উল্লেখ্য়, তৃণমূলের তরফে এই প্রথম নয়, নির্বাচন আবহেও একবার রাজ্য়পাল জগদীপ ধনখড়ের (Jagdeep Dhankhar) অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। খোদ মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ধনখড়ের অপসারণ চেয়ে তিনবার প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন। নির্বাচনের পর থেকে শুরু করে নারদ মামলায়, সর্বত্রই রাজ্য়পালের ‘সংবিধানমান্য’ টুইট বিদ্ধ করেছে রাজ্য় সরকারকে। ফলে, রাজ্য়-রাজ্যপাল সংঘাত যে নয়া মোড় নিয়েছে তা অস্বীকার করতে পারছে না রাজনৈতিক মহল।