Durgapur: ফাঁপরে ব্যবসায়ীরা, টেন্ডারের পরও ট্রাক ঢুকতে বাধা, কাঠগড়ায় শাসকদলের ‘দাদাগিরি’

Durgapur: গ্যাস সিলিন্ডার বহনকারী ট্রাক মালিকরা ঋণ নিয়ে ট্রাকগুলি কিনেছেন। তাই ব্যবসা ছাড়াই ঋণের কিস্তি মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবহণ মালিকদের।

Durgapur: ফাঁপরে ব্যবসায়ীরা, টেন্ডারের পরও ট্রাক ঢুকতে বাধা, কাঠগড়ায় শাসকদলের 'দাদাগিরি'
ফ্যাঁসাদে ট্রাক মালিকরা (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 24, 2022 | 12:22 PM

দুর্গাপুর: একদিকে শিল্প উদ্যোগের ভূরি-ভূরি আশ্বাস। অন্যদিকে, শিল্পাঞ্চলে দাদাগিরি। কোনটা মুখ আর কোনটা মুখোশ? শিল্পের ঠিকানা নয়া বাংলা। বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্যিক সম্মেলন থেকে এমনই বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সেই শিল্পক্ষেত্রেই তৃণমূলের দাদাগিরি । বখরার লড়াই। তারই জেরে টেন্ডার পেয়েও দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্লান্টে ঢুকতেই পারছে না কোনও ট্রাক। মালিকদের একাংশের দাবি, ট্রাক পিছু টাকা চাইছে শ্রমিক সংগঠন। জুলুমের জেরে বটলিং প্লান্টে ঢুকতেই পারছে না প্রায় তিনশো ট্রাক। আটকানো হচ্ছে রান্নার গ্যাস-সিলিন্ডার বহনকারী ট্রাক। এই দাদাগিরির জেরে আর্থিক ক্ষতির মুখে ট্রাক মালিকরা। বাধা দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের বিরুদ্ধে।

জানা গিয়েছে, গ্যাস সিলিন্ডার বহনকারী ট্রাক মালিকরা ঋণ নিয়ে ট্রাকগুলি কিনেছেন। তাই ব্যবসা ছাড়াই ঋণের কিস্তি মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পরিবহণ মালিকদের। দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্ট পুরোনো ট্রাকগুলির টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের ডিসেম্বরে। এরপর নতুন ভাবে টেন্ডার করে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস সংস্থা কর্তৃপক্ষ। সেই মোতাবেক টেন্ডারও হয়। টেন্ডারের শর্ত মেনে পরিবহণ মালিকরা নতুন ট্রাক কেনেন। শর্ত অনুযায়ী রান্নার গ্যাস সরবরাহে এই নতুন ট্রাক চলাচল করার কথা ছিল। কিন্তু রাজ্যের শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের শ্রমিক আন্দোলনে এখন এই ট্রাকগুলি দুর্গাপুরের ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্টে ঢুকতেই পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিবহণ মালিকদের একাংশের অভিযোগ, টেন্ডারের শর্ত মেনে নতুন ট্রাক সংস্থার গেটে ঢুকতে গেলে বাধা দিচ্ছে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা। এই আন্দোলনকারীরা দুর্গাপুর পশ্চিমের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা জেলা আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ পাড়িয়ালের অনুগামী বলে জানা গিয়েছে । কারণ ইন্ডিয়ান অয়েল বটলিং প্ল্যান্টের তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন নিয়ন্ত্রণ করেন বিশ্বনাথ পাড়িয়াল।

পরিবহণ সংস্থার এক মালিক হরিহর যাদবের অভিযোগ, তৃণমূলের অন্দরের দ্বন্দ্ব। দলের আসানসোল আর দুর্গাপুর লবির লড়াই, আর তোলাবাজি সব মিলিয়ে এখন নতুন ট্রাক কিনে বেশ বিপদে পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। যখনই ট্রাক বটলিং প্ল্যান্টের গেটে যাচ্ছে তখনই বিভিন্ন কারণে টাকা চাওয়া হচ্ছে তাঁদের কাছ থেকে। তবে কোনও নেতা সামনে আসছে না। কিন্তু তাঁর অনুগামীরা উৎপাত শুরু করেছে। টাকার দাবি না মেটানোয় জানুয়ারি মাস থেকে বিশাল আর্থিক ক্ষতির বোঝা তাঁদের বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে হস্থক্ষেপ না করেন তাহলে আরও ভয়ঙ্কর অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করছেন টেন্ডার পাওয়া গাড়ির মালিকরা।

অন্যদিকে, যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই শ্রমিক নেতা বিশ্বনাথ পারিয়াল জানিয়েছেন, ঠিকা শ্রমিকদের বেতন সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে। আলোচনাতে বসে সেই সমস্যা মিটিয়ে দিলে মিটে যাবে অচলাবস্থা। আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি জানেন। অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। অন্যদিকে, এই ইস্যুতে শাসকদলকে কটাক্ষ করেছেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। তিনি বলেন, “বখরার ভাগাভাগি নিয়ে তৃণমূলের আসানসোল লবি ও দুর্গাপুর লবির লড়াইয়ে সমস্যা জটিল হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: নন্দীগ্রামে মমতার হারের বর্ষপূর্তি পালন, শুভেন্দু বললেন, ‘ভাদু-আনারুল-সুফিয়ান ক্যানসার, এদের তৈরি করছেন মুখ্যমন্ত্রী’