বাঘের আতঙ্ক গ্রাস করছে জলমগ্ন কুমিরমারিকে, দেখুন ফটো গ্যালারি

মাঝেমাঝেই ফুলেফেঁপে উঠছে বাঁকনা নদী। আর তার সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে উল্টো পারের জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে বাঘের তীব্র গর্জন। এই অবস্থায় জল ঠেলে বাড়ির ছোটদের দূরের গ্রামে কোনও আত্মীয়দের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পরিবারের লোকজন।

বাঘের আতঙ্ক গ্রাস করছে জলমগ্ন কুমিরমারিকে, দেখুন ফটো গ্যালারি
বাঘ আটকাতে জলে নেমে নেট ঠিক করছেন গ্রামবাসী ও বন দফতর
Follow Us:
| Updated on: May 30, 2021 | 5:32 PM

সুন্দরবন: ফের প্রকৃতির রোষানলের শিকার সুন্দরবনের মানুষ। বহু নদী বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত। জলের তলায় গোসাবার পাখিরালা, রাঙাবেলিয়া, লাহিড়িপুর, কুমিরমারির মতো এলাকা। শুধু কুমিরমারিতেই কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন।

কুমিরমারির ভাঙা বাঁধ দিয়েই চলছে পারাপার

গোসাবার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা কার্যত জলমগ্ন। ভাঙা নদীবাঁধে নেমে কংক্রিটের বাঁধের দাবি জানাতে দেখা গেল একাধিক বাসিন্দাকে। আবার বাঘের ভয়ে ফেন্সিং নেট ঠিক করতে দেখা গেল বন দফতরের কর্মী ও গ্রামবাসীদের।

বাঘ আটকাতে নেট দেওয়া চলছে

ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের অল্প প্রভাবেই পূর্ণিমার কোটাল থাকায় গোটা সুন্দরবন জুড়েই তছনছ হয়ে গিয়েঠে মাটির নদী বাঁধ। এমনিতেই জরাজীর্ণ অবস্থা, তার ওপর লাগাতার দমকা হওয়ায় ভরা নদীর জলের আঘাত সইতে না পেরে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে একের পর এক নদী বাঁধ। যার নিট ফল সুন্দরবনের গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি, ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক এলাকার বিস্তৃত অংশ জলমগ্ন। কুমিরমারিতে বাঁধের ওপর পলিথিনের তাঁবু খাটিয়ে বাস করছেন শয়ে শয়ে পরিবার।

ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ে এবং প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভেঙেছে একের পর নদী বাঁধ। গোসাবা ব্লকের মোট ১৪ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যেকটি এলাকায় ভেঙেছে নদী বাঁধ। কোথাও আবার নদীর জলে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে রাস্তাও। তবে সব থেকে বেশি বাঁধ ভেঙেছে কুমিরমারি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। এই ব্লক এলাকায় মোট বাঁধ রয়েছে ৩৭২ কিলোমিটার।

গোটা কুমিরমারি দ্বীপটাই এখন জলের নিচে। বাড়ি-ঘর ডুবে যাওয়ায় কোনওমতে পলিথিনের তাঁবু খাটিয়ে নদীর ভাঙা বাঁধের ওপর আস্তানা গেড়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। সেখানেই রয়েছেন পরিবারের সব সদস্য। মাথার ওপর ছাদের অবাব, পানীয় জল ও খাবারের জন্য কষ্ট আর তার মধ্যেই ছড়িয়েছে বাঘের আতঙ্ক।

মাঝেমাঝেই ফুলেফেঁপে উঠছে বাঁকনা নদী। আর তার সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে উল্টো পারের জঙ্গল থেকে ভেসে আসছে বাঘের তীব্র গর্জন। এই অবস্থায় জল ঠেলে বাড়ির ছোটদের দূরের গ্রামে কোনও আত্মীয়দের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন পরিবারের লোকজন। একদিকে ঝড়-বন্যায় সর্বস্ব খুইয়ে তাঁবুতে কষ্টের রাত যাপন আর তার মধ্যেই নদীর জলস্তর বাড়া আর বাঘের ডাক, এই সব মিলিয়ে দুঃস্বপ্নের মতো দিন কাটছে কুমিরমারি দ্বীপের বাসিন্দাদের।