Purulia woman: সংসার-সন্তানের মাঝেও বেঁচে আছে দুলু দেবীর স্বপ্ন, মেয়ের সঙ্গেই চলছে সেমেস্টারের প্রস্তুতি
Purulia woman: পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার নীলমোহনপুরের মেয়ে দুলু মহান্তির দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই বিয়ে হয়ে যায়। সালটা ১৯৯৯।
পুরুলিয়া: স্বামী-সন্তান নিয়ে সংসার সামলাতে সামলাতেই একে একে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন পুরুলিয়ার (Purulia) দুলু দেবী। এবার আরও একটা ধাপ। স্নাতক স্তরে পড়াশোনা করার জন্য বলরামপুর কলেজে ভর্তি হয়েছেন তিনি। শুধু নিয়মিত ক্লাসই করছেন না, প্রথম সেমেস্টারের পরীক্ষা দিতেই আপাতত ব্যস্ত তিনি। সিধো কানহো বিরশা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ইতিমধ্যেই তাঁকে রেজিস্ট্রেশনও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এই কলেজে তাঁরই সহপাঠী তাঁর মেয়ে ইন্দ্রানী পতি। তাঁর সঙ্গেই পরীক্ষা দিচ্ছেন ইন্দ্রাণীও। পাস কোর্সের ছাত্রী নিজের মাকে কলেজে পড়ার ক্ষেত্রে সব রকমের সাহায্য করছেন। তিনি চান তাঁর মা স্নাতকস্তরে ভাল ফল করুক।
পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার নীলমোহনপুরের মেয়ে দুলু মহান্তির দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই বিয়ে হয়ে যায়। সালটা ১৯৯৯। সংসার শুরু করার পর নিজের মাধ্যমিকের পড়াশোনা শেষ করার আর সময় পাননি তিনি। কন্যা এবং পুত্র দুই সন্তানকে নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ততার ফাঁকে উচ্চশিক্ষার স্বপ্নটাকে টিকিয়ে রেখেছিলেন। পাশে ছিলেন দুলু দেবীর স্বামী দয়াময় পতি। সেই স্বপ্ন সাকার হল বিয়ের ১৭ বছর পর।
২০১৮ সালে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হন। তারপর বৃত্তি মূলক বিষয় নিয়ে সেখান থেকেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও সফল হন। ২০২২ সালে পুরুলিয়ার বলরামপুর কলেজে কলা বিভাগে ভর্তি হন তিনি। একই বছরে তাঁর কন্যা ইন্দ্রানী পতিও চণ্ডীতলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সফল হয়ে বরাবাজার বিক্রম টুডু মেমোরিয়াল কলেজে কলা বিভাগে ভর্তি হন। একসঙ্গেই পাঠ চলছে মা-মেয়ের।
তবে সংসারের কাজেস কোনও খামতি নেই দুলু দেবীর। ভোরে উঠে বাড়ির কাজ এবং রান্না করে তাঁকে কলেজে যেতে হয়। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অবশ্য তাঁকে সবরকম ভাবে সাহায্য করেন বলেই জানিয়েছেন দুলু দেবী।
দুলু দেবীর স্বামী দয়াময় পতি বলেন, যত দূর ইচ্ছা হয় পড়ুক। কখনও বাধা দেব না। পুত্রবধূর এই সাফল্যে খুশি শাশুড়ি পুতুরানী পতিও। বয়স হয়েছে, নিজে খুব বেশি কাজও করতে পারেন না। তবু সংসারের কাজে আটকে না থেকে দুলুদেবী পড়াশোনা করুন, এটাই চান পুতুরানী পতি।