‘দালালদের দিয়ে সব শেষ, বাড়িও বেচে দিয়েছি’, যুবতীর চোখের জলে বেরিয়ে এল মেডিক্যালের খোলনলচে

Medical Scam: মেডিকেলের কোভিড ওয়ার্ডে কাজ হারানোর পর আর্থিক প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন একদল যুবক যুবতী। প্রতারিতদের দাবি, কয়েকমাস আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার কিছু লোক তাদের রায়গঞ্জ মেডিক্যালে চাকরি দেবে বলে প্রত্যেকের কাছ থেকেই বেশ মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে।

'দালালদের দিয়ে সব শেষ, বাড়িও বেচে দিয়েছি', যুবতীর চোখের জলে বেরিয়ে এল মেডিক্যালের খোলনলচে
প্রতারিত সামেরা খাতুন, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 05, 2021 | 8:07 PM

উত্তর দিনাজপুর: সব শেষ! সব হারিয়ে সর্বস্বান্ত সামেরা খাতুন। কেবল একটি সরকারি চাকরি চেয়েছিলেন তিনি। সে চাকরির জন্য কম কাঠখড় পোড়াননি। রীতিমতো টাকা ঢেলেছেন। কিন্তু, তারপরেও আসেনি সুখবর। দালালচক্রের প্রতারণায় চাকরি তো মেলেইনি, উল্টে চলে গিয়েছে বেঁচে থাকার শেষ সম্বলটুকু। স্বামী-সন্তান নিয়ে পথে এসে দাঁড়াতে হয়েছে সামেরাকে।

সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে বিশেষ করে স্বাস্থ্য় ও শিক্ষাখাতে  খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার সতর্ক করেছেন কোনও বিশেষ সুপারিশে চাকরি মিলবে না, কেবল মেধার ভিত্তিই হবে মাপকাঠি। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে টাকার বদলে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ উঠল রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজে (Raiganj Medical College)। শনিবার, চুক্তির ভিত্তিতে চাকরি দেওয়ার বদলে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠল একদল প্রতারকের বিরুদ্ধে।

মেডিকেলের কোভিড ওয়ার্ডে কাজ হারানোর পর আর্থিক প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন একদল যুবক যুবতী। রায়গঞ্জ, ইটাহার, হেমতাবাদ ব্লকের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা। প্রতারিতদের দাবি, কয়েকমাস আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার কিছু লোক তাদের রায়গঞ্জ মেডিক্যালে চাকরি দেবে বলে প্রত্যেকের কাছ থেকেই বেশ মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে। এরপর, তাঁদের মেডিকেলের কোভিড ওয়ার্ডে ওয়ার্ড বয় ও ওয়ার্ড গার্ল হিসেবে একটি ঠিকাদার সংস্থার অধীনে নিযুক্ত করা হয় বলে অভিযোগ। কোভিড ওয়ার্ডে ওই যুবক যুবতীরা কাজ করলেও  চিকিৎসাধীনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় ওই ওয়ার্ডটি সাময়িক বন্ধ রেখেছে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই প্রায় ৫০জন যুবক-যুবতী তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তারপর থেকেই পুরোপুরি বেপাত্তা ওই ‘দালালরা’।

প্রতারিত সামেরা খাতুনের কথায়, “আমি আমার টাকা ফেরত চাই। এত কষ্টের টাকা সব চলে গিয়েছে। আমার গয়নাগাটি, বাড়িঘর সব বন্ধক রেখেছি। এমনকী স্বামীর টোটোটাও বিক্রি করে দিয়েছি। এই দালালরা সব শেষ করে দিল। চাকরি দেওয়ার নাম করে সব টাকা নিয়ে নিল ওই দালালরা।” ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা তপন নাগ বলেন, “এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। অবিলম্বে এর তদন্ত হওয়া উচিত। সরকার এতে হস্তক্ষেপ করুক।” বিজেপি জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার জানিয়েছেন, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। জেলা প্রশাসন এতে কঠোর পদক্ষেপ করুক। রায়গঞ্জ মেডিক্যালেক সহকারী সুপার সৌমাশিষ রাউত জানিয়েছেন অভিযোগ জমা পড়েছে। কে বা কারা এর সঙ্গে যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: না চাইতেই অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার! ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে বিবাহিত মহিলারাও পাচ্ছেন টাকা, নেপথ্যে কারা?