জনবহুল শহর এক নিমেষে যেন ধ্বংসস্তূপ! ভূমিকম্পে ৩০০ ছাড়াল মৃতের সংখ্যা
শনিবার হাইতিতে ভয়াবহ ভূমিকম্পে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে শহর। এখনও পর্যন্ত ৩০৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাড়তে পারে মৃতের সংখ্যা।
হাইতি: ১১ বছর আগের ভূমিকম্পের রেশ এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি হাইতি (Haiti)। এরই মধ্যে ফের একবার ভয়াবহ কম্পনের সাক্ষী হল সেই দেশ। শনিবারের ভূমিকম্পের (Earthquake) মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭.২। প্রবল কম্পনে কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই ধ্বংস্তস্তূপে পরিণত হয়েছে একাধিক শহর। ভেঙে পড়া ঘর-বাড়ি, স্কুল, চার্চের তলায় আটকে পড়েন বহু মানুষ। এখনও পর্যন্ত ৩০৪ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এখনও বহু মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অনেকের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল হাইতির রাজধানী পোর্ত-অউ-প্রিন্স থেকে ১০০ মাইল দূরে। জনবসতিপূর্ণ পোর্ত-অউ-প্রিন্স শহরে তাই ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। এই কম্পনের প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশী দেশগুলিতেও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শনিবার আচমকাই প্রাণঘাতী কম্পন অনুভূত হয় হাইতিতে। এক বাসিন্দা জানান, তিনি জানালা দিয়ে দেখতে পান চারপাশে সব ভেঙে পড়ছে। বাড়ি ঘর রীতিমতো কাঁপতে শুরু করে। সে দেশের রাস্তাতেও ফাটল দেখা যায়। ভূগর্ভের মাত্র ১০ কিলোমিটারের মধ্যে এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল, কম্পনের তীব্রতাও তাই এতটা বেশি ছিল।
দেশের সিভিল প্রোটেকশন এজেন্সির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃতের সংখ্যা ৩০০ পেরিয়েছে। প্রথমে ২৯ টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে উদ্ধারকাজ চলাকালীন একের পর এক দেহ পাওয়া যায়। এজেন্সির তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, অনেকের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিপর্যয় মোকাবিলার বিশেষ টিম ছাড়াও সাধারণ মানুষও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। আশেপাশের হাসপাতালগুলিতে ভর্তি কয়েক হাজার আহত মানুষ।
হাইতিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। দ্রুত সাহায্যের জন্য সব ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, ‘আগে থেকেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে হাইতি। তারই মধ্যে এই বিপর্যয়। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, ওই অঞ্চলের ঘরবাড়ি নতুন করে তৈরি করে দেওয়ার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করবেন তিনি। হাইতির প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি হেলিকপ্টারে ঘুরে পুরো এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি এক মাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করার ঘোষণা করেছেন ও সাধরণ মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যাতে তাঁরা অযথা আতঙ্কিত না হন।
২০১০ সালে এরকমই এক ভয়াবহ ভূকম্পনের সাক্ষী ছিল হাইতি। পোর্ত-অউ-প্রিন্স ও সংলগ্ন শহরগুলি একেবারে তছনছ করে দিয়েছিল সেবারও। সেই ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছিল অন্তত ২ লক্ষ মানুষের, আহত হয়েছিলেন ৩ লক্ষের বেশি। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে অনেক সময়ে লেগেছে এই দেশের। আরও পড়ুন: ‘আমি যুদ্ধ হতে দেব না, আফগানদের মরতে দেব না’, দেশবাসীকে বার্তা প্রেসিডেন্ট ঘানির